রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টির প্রকল্পে ঋণ ৩৯১০ মিলিয়ন ডলার

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ১২:১৯ এএম

রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টির প্রকল্পে ঋণ ৩৯১০ মিলিয়ন ডলার

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বিভিন্ন কোম্পানির প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বিদেশি ঋণ নেওয়ার জন্য অর্থ বিভাগ চলতি অর্থবছরের শুরু পর্যন্ত ৩৯১ কোটি বা ৩ হাজার ৯১০ মিলিয়ন ডলারের রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি দিয়েছে।

এই অর্থের সুদ হয়েছে ১৬ কোটি  বা ১৬০ মিলিয়ন ডলার। কিস্তি পরিশোধ করার পর ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩৭২ কোটি  বা ৩ হাজার ৭২০ মিলিয়ন ডলার। অর্থ বিভাগ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তরা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, জ্বালানির নিশ্চয়তা না থাকার পরও বিগত আওয়ামী লীগ সরকার বিদেশি ঋণে একের পর এক বিদ্যুৎ প্রকল্প শুরু করেছিল।

ওইসব প্রকল্পের মধ্যে অনেক প্রকল্প এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। আবার যেগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে, সেসব প্রকল্প জ্বালানির অভাবে শতভাগ উৎপাদনে যেতে পারছে না।

কোনো কোনো সময় প্রকল্প পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হয়। ফলে এসব প্রকল্প সরকারের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৭৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ২৫ থেকে ৩০টি কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বর্তমানে বন্ধ রাখতে হয়।

এ ছাড়া ৫০ থেকে ৫৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় না। অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদন করে না।

একই সূত্র বলছে, ডলার সংকটের কারণে প্রায় ব্যাংক এলসি ওপেন করতে পারছে না। সরকার ব্যয়-সংকোচননীতিতে চলছে। কিন্তু বিদেশি ঋণ বাধ্যতামূলকভাবে পরিশোধ করতে হচ্ছে।

কারণ সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে আসল ও সুদের সঙ্গে ক্ষতিপূরণও যোগ হয়। ফলে সরকার উভয় সংকটে রয়েছে।

যদিও কোনো কোনো দেশের সঙ্গে আলোচনা করে ঋণ পরিশোধের সময় কিছুটা বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে।

জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আগামী দুই বছরের মধ্যে জ্বালানি খাতের বকেয়া বিল শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পেট্রোবাংলা ও বিপিসি প্রতি মাসের বিলের সমপরিমাণের তুলনায় বাড়তি কিছু অর্থ পরিশোধ করছে পাওনাদারদের।

কিন্তু রাজস্ব আহরণে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া কমানোর একই রকম কোনো পরিকল্পনা করতে পারছে না অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ বিভাগ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে প্রভাবিত না করে তারা বকেয়া পরিশোধ করবেন বলেও জানান।

অর্থ বিভাগের নথি থেকে জানা গেছে, ঋণ নেওয়া হয়েছে শাহজিবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্টের জন্য এইচএসবিসি, হংকং লোন এজেন্সি থেকে ৭ কোটি ৭১ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৪.৯৬ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ০৮৪.০৭ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার ৭৭৯.১৪ ডলার।

বড়পুকুরিয়া ২৭৫ মেগাওয়াট কয়লাচালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সম্প্রসারণের জন্য আইসিবিসি ঋণ সংস্থা থেকে ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৬.০৮ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৪১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৪.৪২ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ২৭ হাজার ৪৩১.৪৮ ডলার।

ঘোড়াশাল ৩৫৬ মেগাওয়াট সিসিপিপি প্রকল্পে জন্য আইসিবিসি ঋণ সংস্থা সমর্থিত সাইনোসার থেকে ৮ কোটি ৬৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৭৬.৭৬ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৩৬ লাখ ১৮ হাজার ৬৮.৬০ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ২৪৬.৭৫ ডলার। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট + ১০% (এইচএইচও ফায়ারড ইঞ্জিন জেনারেটিং সেট) পিকিং পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের জন্য এইচএসবিসি, হংকং লোন এজেন্সি থেকে ২ কোটি ৮৫ লাখ  ৮৯ হাজার ৩০০.০৮ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৪.৮৭ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৩৮ লাখ ২৪ হাজার ৪১৬.৭৭ ডলার।

বিবিয়ানা-১১১ ৩০০-৪৫০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পরে জন্য জেবিআইসি-মারুবেনী থেকে ১২ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৬৪৪.৪০ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ১০ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৩.৪৪ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫৫ হাজার ৯০৬.০১ ডলার।

ঘোড়াশাল ৩য় ইউনিটের পুনঃশক্তি প্রকল্পের জন্য এইচএসবিসি, হংকং লোন এজেন্সি থেকে ১১ কোটি ৩৫ লাখ ১৬ হাজার ৭৫৮.০৮ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৪৬ লাখ ৭৮ হাজার ৩০৮.৪৫ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৪৬৬.৭৭ ডলার।

খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট (২০০-৩০০ মেগাওয়াট) ডুয়েল-ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের জন্য চায়না এক্সিম ব্যাংক, জিয়াংশু শাখা থেকে ২৫ কোটি ৪৯ লাখ ৭৫ হাজার ৭১.২৮ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ২ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার ১০১.৩৬ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ১৯ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৫.১৫ ডলার। সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট সিম্পল সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের জন্য ব্যাংক অব চায়না, সিচুয়ান শাখা থেকে ২ কোটি ৮০ লাখ ৬১ হাজার ৯১৯.৬৭ ডলার, এখানে সুদের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি, বর্তমান স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৩২ লাখ ৯১ হাজার ৮৬৯.৭৩ ডলার।

সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট (২য় ইউনিট) কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পরে জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (হার্মিস, সাইনোসার, এমআইজিএ) থেকে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ১৪৫ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৪২ লাখ ৩৩ হাজার ৯২২ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৭৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬ ডলার।

সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট (৩য় ইউনিট) কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পরে জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (হার্মিস, সাইনোসার, এমআইজিএ) থেকে ১১ কোটি ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৫১০ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৪৯ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৮ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭৩ ডলার।

পায়রা ১৩২০ মেগাওয়টি থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের জন্য চায়না এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক (এক্সিম) থেকে ১৩৮ কোটি  ৯৬  লাখ  ৯৮ হাজার ৯৪৯ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৬ কোটি ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৮১৫ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৩১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার ৯৪৯ ডলার।

মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের জন্য ইন্ডিয়ার এক্সপোর্ট-কাম-ইমপোর্ট ব্যাংক থেকে ১৫০ কোটি ৬৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৯২.৪৩ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৪ কোটি ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার ৩৬৪ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭৬৬.৩১ ডলার।

আশুগঞ্জ ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (সাউথ) প্লান্টের জন্য চারটি প্রতিষ্ঠান- এমআইজিএ, সিইএসসিই, এইচইআরএমইএস ও ওএনডিডি থেকে ৬ কোটি ১৮ লাখ ২ হাজার ৬৩১.৯০ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ২১ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬২.৩৭ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ১১ লাখ ২৩ হাজার ৪৪১.৪০ ডলার।

আশুগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (সাউথ) প্লান্টের জন্য দুইটি প্রতিষ্ঠান কে-সিউর ও হার্মিস থেকে ২ কোটি ৯৯ লাখ ৬২ হাজার ৬৩৪.৩৮ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ১২ লাখ ২২ হাজার ৫০৮.১৬ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯.৭১ ডলার।

এবং কড্ডা ১৫০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল পাওয়ার প্লান্টের জন্য চায়না ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও চায়নার এক্সিম ব্যাংক থেকে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৫২ হাজার ৮৪০ ডলার, এর মধ্যে সুদ ও সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ২০ লাখ ১২ হাজার ৪১৪.৪৮ ডলার আর কিস্তি পরিশোধের পর স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৮.৪৮ ডলার।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে বকেয়ার প্রভাব: কয়লার আমদানির ডলার জোগাড় করতে না পারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। দেশে ৭টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলোর মোট উৎপাদনক্ষমতা প্রায় ৭ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু কয়লার অভাবে পুরোপুরি সক্ষমতা ব্যবহার করতে না পারায় বর্তমানে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় অর্ধেক।

চলমান কয়লা-সংকটের কারণে গত ৩১ অক্টোবর থেকে পুরোপুরি বন্ধ আছে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। আর ২৭ অক্টোবর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের অংশ হিসেবে বরগুনার আমতলী এলাকার ৩০৭ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ আছে, যা জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের সরবরাহকে প্রভাবিত করছে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। কয়লার অভাবে কেন্দ্রটির একটি ইউনিট বন্ধ থাকছে। আর দুটি ইউনিট থেকে ২২০ থেকে ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সম্পর্কে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত এখন দেশের জীবন-মরণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যয় সংকোচন করে আর্থিক ঘাটতি সমন্বয় করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতকে একটি লুণ্ঠনের খাতে পরিণত করেছে বিগত সরকার। এখন লুণ্ঠন বন্ধ করে টেকসই উন্নয়ন করতে হবে। সে বিকল্প সরকারের কাছে রয়েছে। এ খাতকে মুনাফাভিত্তিক শিল্পে রূপান্তর করতে হবে। তবে এটি করতে সরকারের কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।

অর্থনৈতিক চাপে মন্ত্রণালয় : মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, অর্থনৈতিক চাপের বিষয়টি তুলে ধরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেখানে দেখানো হয়েছে সামগ্রিক ঋণের চিত্র।

যার মধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত বকেয়া বিলের পরিমাণ। বিশেষ করে পেট্রোবাংলার বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস বিল, বেসরকারি (আইপিপি) ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিল, আদানিসহ ভারত থেকে আমদানীকৃত বিদ্যুৎ বিল, পায়রা ও রামপালসহ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রও পিডিবির কাছে পাওনা অর্থের বিষয়ে বিস্তারিত।

উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে ক্রয়চুক্তির আওতায় পাইকারি দরে বিদ্যুৎ কিনে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করে পিডিবি।

সেই বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছে খুচরা মূল্যে বিক্রি করে বিতরণ করে কোম্পানি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, ডিপিডিসি ও ডেসকোসহ ছয়টি বিতরণ সংস্থা। এ প্রক্রিয়ায় পিডিবি যে দামে বিক্রি করে, তাতে ঘাটতি থেকে যায়। আর সেই ঘাটতি সরকার ভর্তুকি দিয়ে সমন্বয় করে।

কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দুই বছরের বেশি সময় ধরে ভর্তুকি অনিয়মিত হয়ে গেছে। ডলার ও টাকা সংকটের কারণে নিয়মিত অর্থ ছাড়তে পারছে না অর্থ মন্ত্রণালয়।

এতে জ্বালানি বিল পরিশোধ এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল পরিশোধ করতে পারছে না পিডিবি।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত হারে ও খোলাবাজারে বিনিময় হার ব্যবহার করে পিডিবির প্রতিবেদনে বকেয়া বিলের হিসাব করা হয়েছে। 

এতে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত প্রতি ডলার ১১৭ টাকা দরে (প্রতিবেদন তৈরি করার সময়) প্রতিষ্ঠানটির মোট দায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৮৪৬ বিলিয়ন ডলার এবং খোলাবাজারের দর অনুযায়ী ১২৪ টাকা করে হিসাব করলে তা দাঁড়ায় ৪ দশমিক ৩৫৪ বিলিয়ন ডলারে।

আরবি/জেডআর

Link copied!