ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত শিক্ষাঙ্গন

সেলিম আহমেদ
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০১:৫৫ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে রাজপথে সক্রিয় ছিল ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করলেও একসঙ্গে পথ চলতে পারলেন না বেশিদিন।

গণঅভ্যুত্থানের ৭ মাসের মধ্যেই নানা ইস্যু নিয়ে তিন ছাত্র সংগঠনের সম্পর্ক এখন ‘সাপে-নেউলে’।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ মাঠে-ময়দানে প্রায়ই জড়াচ্ছে সংঘর্ষে। মিছিল-সমাবেশে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও কেউ কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলছেন না।

এর বাইরে ছাত্র ইউনিয়নসহ বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে মতানৈক্য বেড়েছে শিবিরের।

সবমিলিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিরাজ করছে উত্তপ্ত অবস্থা।

এ অবস্থা চলমান থাকলে আরও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোদ সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলও এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

সর্বশেষ গত রোববার বিকেলে নানা বিষয় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

ছাত্রদল নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পথ অনুসরণ করছে এমন মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে শিবিরে কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে জনাকাক্সক্ষা তৈরি হয়েছিল তা কিছু ছাত্রসংগঠনের আধিপত্যনীতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, দখলদারি, ট্যাগিং ও দোষ চাপিয়ে দেওয়ার হীন সংস্কৃতি চালু রাখার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাজনীতি বিমুখতা তৈরি এবং শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলকে তাদের পথ অনুসরণ করতে দেখা যাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে ছাত্রশিবিরের এই সংবাদ সম্মেলনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়ন।

ওইদিন সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে জামায়াত-শিবিরের অতীতের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির সূতিকাগার ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা স্বত্বাধিকারী মধুসূদন দে (মধুদা) ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত অপারেশন সার্চলাইটে হানাদার বাহিনীর হাতে শহিদ হন।

স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন শহিদ মধুদার প্রতি এবং তার পরিবারের প্রতি অসম্মানজনক।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অপারেশন সার্চলাইটে শহিদ মধুদা’র মতো অসংখ্য মানুষ শহিদ হওয়ার প্রেক্ষিতে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন।

কিন্তু ইসলামী ছাত্রশিবির নানাভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভারতীয় ষড়যন্ত্র বলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এবং বীর শহিদদের অবমাননা করছে। মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করবে।

একই কথা বলছে ছাত্র ইউনিয়নও। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন স্বাধীনতাকামী ও প্রগতিশীল ছাত্র-জনতার জন্য লজ্জার।

তারা মধুর ক্যান্টিনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়নের এই বিবৃতিকে ফ্যাসিবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করে ছাত্রশিবির পাল্টা আরেক বিবৃতি দিয়েছে ছাত্রশিবির সম্পর্কে মিথ্যাচার করে বিবৃতি প্রদান করে সংগঠনগুলো তাদের নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও ফ্যাসিবাদি আচরণের পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।

যেভাবে দ্বন্দ্বের শুরু
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরপরই দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি দেখা দেয় বিএনপির। যার প্রভাব পড়ে ছাত্রদল ও শিবিরের ওপর।

এছাড়াও গণঅভ্যুত্থানে কৃতিত্ব নিয়েও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কে ভাটা দেখা দেয় ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর।

তবে এসব ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আলোচনা ওঠার পর।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শিবিরসহ হাতেগোনা কিছু রাজনৈতিক দল চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন দিতে চেয়েছিল। কিন্তু জোর আপত্তি জানায় ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়নসহ কিছু ছাত্র সংগঠন।

ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেয়।  তারা ডাকসুতে শিবিরসহ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণ নিয়েও আপত্তি তুলে ছাত্র ইউনিয়নসহ বামপন্থীয় ছাত্র সংগঠনগুলো।

ছাত্রদলসহ এসব ছাত্র সংগঠনের আপত্তির মুখে থমকে পড়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ।

কুয়েটে সংঘর্ষের রেশ ছড়িয়েছে সারা দেশে গত মঙ্গলবার খুলনা প্রকৌশল ও ঐপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদলের সমর্থকরা ফরম বিতরণ করছিল।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। বহিরাগত যুবদল কর্মীদের হামলায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। গএক যুবদল নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে বুয়েট, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে।

পরস্পরকে দায়ী করে ওইদিন সন্ধ্যায় ঢাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে সব সংগঠনই।

কুয়েট সংঘর্ষের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।

সংগঠনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত ১৬ বছরে নির্যাতনের কথা ভুলে যাবেন না।

ক্যাম্পাসে চাপাতির রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাইলে ছাত্রলীগ যে পথে গেছে, ছাত্রদলও সে পথেই যাবে।

প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির  বলেন, কুয়েটে হামলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা শুরুতে ছাত্রদলের ওপর করেছে, সে হামলায় যদি তারা অংশগ্রহণ না করত তাহলে এ রকম সংঘাত কখনোই ছড়িয়ে পড়ত না।

বাংলাদেশে যত বড় বড় অগ্নিকাণ্ড হয়েছে, তার উৎস ছিল ছোট ছোট শর্টসার্কিট।

গতকাল সেই কাজ শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশৃঙ্খল ‘মব’।

এটির নেতৃত্ব দিয়েছে কুয়েটের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ওমর ফারুক।

কেন্দ্রীয়ভাবে সেটি মনিটরিং করেছে হাসনাত আব্দুল্লাহ।

এছাড়াও গত বুধবার মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি মন্তব্যের (কমেন্ট) জেরে সিলেট এমসি কলেজে স্থানীয় এক পীরের অনুসারী সংগঠন তালামীযের দুই কর্মীকে মারধর করেছে ছাত্রশিবির।

ঘটনায় শিবিরের দায় স্বীকার করে গত রোববার বিবৃতি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। যদিও জামায়াতের বিবৃতিটি নাকচ করেছেন ছাত্রশিবিরের নেতারা।

ওই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, আগস্টের সময় ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, তা নষ্ট করতে একটি ছাত্রসংগঠন উঠেপড়ে লেগেছে।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, বাংলাদেশে সহিংসতার রাজনীতি আবার ফিরে আসছে।

শিক্ষাঙ্গনগুলোতে ছাত্রদের ওপরে, ছাত্রদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপরে হামলা আসছে।

এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার টঙ্গীর তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার একটি ইউনিটের শিবির সভাপতিকে ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী মারধর করে।

কিন্তু ছাত্রদল এ ঘটনার দায় এড়িয়ে গিয়ে বলেছে, এটি ছিল ব্যক্তিগত বিরোধের জের।

ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে বেড়েছে উদ্বেগ
ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই ত্রিমুখী দ্বন্দ্বের কারণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক।

ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, বিগত ১৫ বছর ছাত্রলীগ গেস্টরুম প্রথা চালু, শিক্ষার্থীদের মিছিল-সামাবেশে যেতে বাধ্য করাসহ ক্যাম্পাসে বিরোধী মতকে দমন করে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।

তাদের এই সংঘর্ষের বলি হয়েছিলেন অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী। এখন ছাত্রদল, শিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই দ্বন্দ্ব আবারও সেই অজানা আতঙ্ক তৈরি করছে।

এভাবে তারা মুখোমুখি অবস্থানে থাকলে আগামী দিনে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠবে। দলীয় রাজনীতি বা লেজুড়বৃত্তি নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ করলে সংঘাত বাড়বে।

ছাত্রদল-শিবিরের এই মুখোমুখি অবস্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খোদ আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলও।

তিনি তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বলেছেন, আওয়ামী আমলে লীগের সঙ্গে অন্য যেকোনো দল/পক্ষের মারামারি লাগলে সেখানে পুলিশ-প্রশাসন নির্লজ্জভাবে লীগের পক্ষে থাকত।

ফলে খুব দ্রুতই অপর পক্ষ রনে ভঙ্গ দিত। কিন্তু বর্তমানে পুলিশ-প্রশাসন বিভক্ত, কোনো রাজনৈতিক দলের একক দৌরাত্ম্য নেই আপাতত, ডেডিকেটেড মারমুখী কর্মী সংখ্যা কাছাকাছি পরিমাণের, সব মিলিয়ে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির যদি এই মুহূর্তে মুখোমুখি হয়, নিশ্চিতভাবে বলা যায় কোনো পক্ষই সহজে পেছাবে না।

উভয়ই নিজের অস্তিত্বের লড়াই জ্ঞান করে মারামারি করবে। হয়তো, ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে স্মরণকালের সর্বোচ্চ হতাহত ও লাশ দেখতে হবে এবার।

তিনি আরও লিখেছেন, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির যেভাবে নিজ নিজ অফিসিয়াল প্যাডে একে অন্যের নাম উল্লেখ করে দায় আরোপ ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, এটা খুব খারাপ ভবিষ্যৎই ইঙ্গিত করছে সামনে। 

আমার মনে হয়, এদের প্যারেন্ট সংগঠনের সিনিয়রদের হস্তক্ষেপে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলা অতি জরুরি এবং একান্ত অপরিহার্য।

যা বলছে ছাত্র সংগঠনগুলো
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ক্যাম্পাসে সহিংসতার রাজনীতি ফেরত আসাকে আমরা অবশ্যই প্রতিহত করব।

বাংলাদেশে সহিংসতার কোনো রাজনীতি আর হবে না। ছাত্রদল বা ছাত্রশিবির যদি সহিংসতা কিংবা পুরোনো রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে চায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের প্রতিহত করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সন্ত্রাসকে বিতাড়িত করেছিলাম।

কিন্তু আমরা দেখছি, বিভিন্ন সংগঠন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নতুন করে সন্ত্রাস কায়েম করতে চায়। আমরা তাদের এই সমাবেশ থেকে ধিক্কার জানাই।

ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস বিনির্মাণের লক্ষ্যে শত শত ছাত্রদলের নেতারা জীবন দিয়েছেন, গুম হয়েছেন।

আজকে একটি গুপ্ত সংগঠন সেই চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। জুলাই-আগস্টের সেই চেতনাকে আমরা ভূলুণ্ঠিত হতে দেব না।

শিক্ষার্থীদের এখনই সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অতীতের মতো নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মাণের লক্ষ্যে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে।