ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ, ২০২৫

ডরিন পাওয়ারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

শাহীনুর ইসলাম শানু
প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৫, ০৫:২৯ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ডরিন পাওয়ারের ‘গোপনে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বিক্রি’ শীর্ষক প্রতিবেদন রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের বিরুদ্ধে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। গঠিত ‘তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান শুরু’ করেছে বলে জানিয়েছে বিএসইসির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র।

২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ডরিন পাওয়ারের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হয়। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রগুলোর মেয়াদ শেষ হলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করে ‘স্ক্রাব হিসেবে’ দুটি কেন্দ্রের সব মালামাল বিক্রি করে দেয় পাওয়ার কর্তৃপক্ষ।

তার নিচে হলে প্রয়োজন পড়ে না। তাই ডরিনের উদ্যোক্তা পরিচালক কোম্পানির মোট সম্পদের মাত্র ২.৪৬ শতাংশ বিক্রি করেছে। তবে বিক্রি করতে সংবাদপত্রে তথ্য প্রকাশ এবং উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। অন্যদিকে, পাওয়ার প্লান্টের ইঞ্জিন দুর্বল হওয়ায় পিডিবি অনাগ্রহী হয়ে পড়ে। গ্যাস সরবরাহের বিপরীতে উৎপাদন অনেক কম ছিল।’ 

ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেড আওয়ামী লীগ পরিবারের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি। যার নেতৃত্বে যশোরের নূরে আলম সিদ্দিকীর পরিবার। প্রতিষ্ঠানের ৬৬ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র কাগজে থাকলেও এখন উৎপাদনে নেই।

উৎপাদন না থাকায় টাঙ্গাইল ও ফেনীর ৪৪ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সব যন্ত্রাংশ ২০ কোটি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি রূপসী বাংলাদেশ গ্রুপ ও ট্রাস্ট মেরিন সার্ভিসেস নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তবে ডরিন কোম্পানির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিধিসম্মতভাবেই কোম্পানি আইনের বলেই সব যন্ত্রাংশ বিক্রি করা হয় এবং রেগুলেটরি বডি এ বিষয়ে অবগত রয়েছে।

একই সঙ্গে ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের ২২৫ মেগাওয়াটের আরও তিনটি সহযোগী বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- নবাবগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা সাউদার্ন পাওয়ার জেনারেশন, মানিকগঞ্জে অবস্থিত ঢাকার নর্দার্ন পাওয়ার জেনারেশন ও চাঁদপুর পাওয়ার জেনারেশন। সহযোগী তিনটির চুক্তির মেয়াদ ২০৩০ সালের পর শেষ হবে।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাহজীব আলম সিদ্দিকী। ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। সরকার পতনের পরে ৭ নভেম্বর রাতে ঢাকার সাভারে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এক সপ্তাহ পর তাহজীব আলম সিদ্দিকী জামিনে বেরিয়ে আসেন বলে ডরিন পাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানায়।

ঝিনাইদহে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী আবদুস সালামকে হত্যার ১১ বছর পরে মামলার প্রধান আসামি করে তাকে আটক করা হয়েছিল। 

২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপরে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত ছিলেন তিনি। তার বাবা নূরে আলম সিদ্দিকী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ছিলেন। তার পৈতৃক বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাঞ্চনপুরের উত্তরপাড়ায়।