জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সময় ২০১১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পরিচালক থেকে মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন মেজর জেনারেল (অব.) টিএম জোবায়ের। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও শেখ পরিবারের আস্থাভাজন হয়েই ২০১৮ সালের বিতর্কিত রাতের ভোট ও ২০২৪ সালের ডামি প্রার্থীর জাতীয় নির্বাচনের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে টিএম জোবায়েরের পরিকল্পনায় ’১৮ ও ’২৪ নির্বাচনের নামে গণতন্ত্র হত্যা করে পতিত আওয়ামী লীগ। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ঘনিষ্ঠ জোবায়ের গত দেড় দশকে শেখ পরিবারের সহায়তায় নিজে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। সরকারের একটি অভ্যন্তরীণ নথিতেও বিদেশে জোবায়েরের সম্পদের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। কয়েকটি দেশে পাচারকৃত অর্থে তৈরি করেছেন বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করার জন্য নিজের অনুগত কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন।
এনএসআইয়ে সাবেক প্রধান টিএম জোবায়েরের দুর্নীতি, অপরাধ-অপকর্ম করে নিজ নামে ও শেখ পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গাড়ি-বাড়ি করেছেন। বিদেশে আত্মগোপনে থেকে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত সিন্ডিকেট সদস্যদের দিয়ে সরকারবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে। দেশ-বিদেশে অঢেল সম্পদের প্রাথমিক সত্যতার পরও নীরব ভূমিকায় দুদক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাসপোর্ট বাতিল না করা নিয়েও আছে প্রশ্ন! গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, জোবায়েরের অনুসারীরা দুদকে দায়িত্বরত থাকায় তাকে দায়মুক্তি দিতে তৎপর রয়েছে একটি পক্ষ।
টিএম জোবায়েরের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলো তদন্তে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এ তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল অনুসন্ধান শুরু করলে অভিযোগগুলোর প্রাথমিক সত্যতা ও আনীত অভিযোগ সম্পর্কে তার সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয় তদন্ত দল। কিন্তু ৬ মাসেও, এখনো কোনো মামলা হয়নি দুদকের পক্ষ থেকে। দুদকের ভেতরে অসাধু একটি চক্র মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডিজিএফআই এবং এনএসআইয়ের বেশ কয়েকজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তার পাসপোর্ট ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাতিল করেছে। কিন্তু, টিএম জোবায়েরের পাসপোর্ট এখনো বাতিল করা হয়নি। বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে বিভিন্ন দেশে বিচরণ করছে বলে তথ্য সূত্রে জানা যায়। এতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের অন্যতম দোসর সাবেক এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের নমনীয়তার রহস্য কি? জোবায়েরের বিরুদ্ধে এ ধরনের গুরুতর অভিযোগ এবং দুদকের ধীর পদক্ষেপ নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। একটি নিরপেক্ষ ও নির্দিষ্ট তদন্তের মাধ্যমে এ ধরনের দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিচার দাবি করছে সচেতন মহল।
সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের যোগসাজশে নানা অনিয়মের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে অঢেল সম্পদ অর্জন করেন জোবায়ের। তার বিপুল পরিমাণ সম্পদের পেছনে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে তার ক্ষমতা। এই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রæপের মালিকদের নানা সুবিধা দিয়েছেন। একইসঙ্গে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের যোগসাজশে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যও করেছেন টিএম জোবায়ের। সাবেক এই এনএসআই ডিজির সম্পদের তথ্য উল্লেখ করে অভিযোগে জানানো হয়, গুলশান-২ এর ৮৪ নম্বর সড়কে লেকের পাশে একটি বাড়ি এনএসআইয়ের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার হতো। রাষ্ট্রীয় ওই বাড়িটি গণপূর্তের কর্মকর্তাদের সহায়তায় নিজের এক আত্মীয়ের নামে দখল করেছেন টিএম জোবায়ের।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার কিছুদিন আগে অবসরে চলে যান টিএম জোবায়ের। অবসরে গিয়েও দেখিয়েছেন দম্ভ। আগের পরিচয়ে তিনি সম্প্রতি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন। ছাত্র-জনতা হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। শেখ রেহানার দেবর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর একনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে হেলিকপ্টার গানশিপ দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি, স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি করে সাধারণ মানুষ হত্যায় সরাসরি ভ‚মিকা রাখেন। বিএনপি আমলে নিজেকে গাজীপুরের কাপাসিয়ার ছেলে হিসেবে পরিচয় দিতেন। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর হয়ে যান মাদারীপুরের। সর্বোচ্চ পর্যায়ের আশীর্বাদে বাগিয়ে নিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ পদ। শেখ রেহানার আশকারা পেয়ে দিনে দিনে হয়ে উঠেছিলেন ভয়ংকর। অর্থের বিনিময়ে ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া কিংবা জমি ও বাড়ি দখলে দায়িত্বপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করতেন। বড় অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া, গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তদবির, এমনকি ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণের নামে অভিযানের নাটক সাজিয়ে মানি এক্সচেঞ্জ থেকে অর্থ আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়, জাতীয় নির্বাচনের সময় ব্যবসায়ীদের ধরে এনে নির্বাচনি তহবিল গঠনের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করতেন। বেপরোয়া এই ব্যক্তির নাম মেজর জেনারেল (অব.) টিএম জোবায়ের ওরফে বিজু। মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর গ্রামের নিষিদ্ধ চরমপন্থি সংগঠন সর্বহারা পার্টির নেতা মৃত রউফ তালুকদারের ছেলে তিনি।
জানা যায়, দেশের শীর্ষস্থানীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত হয়। আওয়ামী লীগ আমলে জাতীয় নিরাপত্তার চেয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার কাজেই এই সংস্থাকে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন থেকে শুরু করে দলীয় পদপদবি বণ্টনের ক্ষেত্রেও তথ্য সংগ্রহে এই সংস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে তাদের রিপোর্টের ওপর বিভিন্ন পর্যায়ে দলীয় মনোনয়ন নির্ভরশীল ছিল। এ কারণে সংস্থার প্রধান হিসেবে প্রচণ্ড প্রভাবশালী ছিলেন জোবায়ের। এ ছাড়াও তার মাথার ওপর ছিল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ছায়া। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, প্রতারণা, অর্থ পাচার, হয়রানি, নির্যাতন এবং সংস্থার নিরীহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা ও বিভিন্ন দণ্ড প্রদানসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তাকে নিয়ে নিজ সংস্থার ভেতরেই ছিল ক্ষোভ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় গোয়েন্দা প্রতিবেদনের নামে বিভিন্ন আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ ছাড়া নির্বাচনি তহবিলের নামে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেন। একই কাজ করেন ২০২৪-এর জাতীয় নির্বাচনের সময়ও। দুটি নির্বাচনের আগে জোবায়ের কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার অফিসের আসবাবপত্র কেনার জন্য প্রতি বছর সরকারের বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছেন। সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের বহুতল ভবন নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেন মোটা অঙ্কের কমিশন। ২০২১ সালে একটি আবাসন কোম্পানির এমডির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নেন।
এ ছাড়াও নিয়মিত মাসোহারা নিয়ে ওয়াসার এমডি তাকসিমসহ দেশের বিভিন্ন সমালোচিত ব্যক্তির গদি টিকিয়ে রাখতে নিয়মিত সুপারিশ করতেন প্রধানমন্ত্রীর দরবারে। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনএম নামে রাজনৈতিক দল তৈরির পেছনে কলকাঠি নেড়ে সরকারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ ছাড়া বিএনপিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করার মিশন নিয়েও সরকারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের তহবিল নিয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রধান।
জোবায়েরের সঙ্গে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের নামও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশন জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুর্নীতির সঙ্গে টিউলিপ সরাসরি যুক্ত। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেন তারা। শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সালমান এফ রহমানসহ ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। জোবায়ের ডিজি থাকাকালে সংস্থার তিনবার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম করেন। ’২০, ’২২, এবং ’২৩ সালে অন্তত ৫০ জনকে প্রতি পদে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেন। চাচাতো ভাই জহির ৫০ জনকে এনএসআইর অফিসার পদে জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন এবং শত শত কোটি টাকার বিভিন্ন দপ্তরের কাজ হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে টিএম জোবায়েরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
টিএম জোবায়ের বাংলাদেশের অন্যতম মাফিয়া, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট, ঠান্ডা মাথার খুনি ও বিভিন্ন অপকর্মের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারী ছিলেন। মনোনয়ন বাণিজ্য, দুর্নীতি ও লুটপাট করে অঢেল অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। যার সবই অর্জন করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রভাবশালী মন্ত্রীদের সহযোগিতায়। তার বিরুদ্ধে সব থেকে বড় যেসব অভিযোগ উঠেছে, চাঁদাবাজি, লুটপাট, গুম করে অর্থ আত্মসাৎ, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে অর্থের বিনিময়ে মনোনয়ন বাণিজ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণসহ নানা অপকর্মের। আর এসব করেই অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। টিএম জোবায়ের বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক সময়কার চরমপন্থি সর্বহারা নেতা মৃত রউফ তালুকদারের ছেলে।
টিএম জোবায়ের সালমান এফ রহমানের পরামর্শে ডলারের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার নাটকীয় ফেইক অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ এজেন্সির কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা মূল্যের ডলার আদায় করেছিলেন। মো. কাইয়ুম নামে তার এক ভায়রা ভাই রয়েছেন। তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেট পরিচালনা করতেন জোবায়েরের নামের ওপর। এভাবে এনএসআইকে ব্যবহার করে কাইয়ুমও গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিলেন এনএসআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালক বদরুল হাসান চৌধুরী। গোপালগঞ্জ বাড়ি এই কর্মকর্তা সর্বাত্মক সহযোগিতা করতেন কাইয়ুমকে। টিএম জোবায়েরর এনএসআইর মহাপরিচালকের পদটির অপব্যবহার করে বিভিন্ন বিভাগের ঠিকাদারির কাজ পাইয়ে দেওয়ার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ। এনএসআইয়ের মতো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ত্রাসের রাজত্ব। নিজ অপকর্ম আড়াল করতে অন্যদের প্রতি জুলুমবাজি করেছেন।
এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক টিএম জোবায়েরের বিরুদ্ধে ভয়াবহ দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, সম্পদ পাচার এবং স্বজনপ্রীতির বিষয়ে গত ১১ আগস্ট ২০২৪-এ বিস্তর অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা পড়ার ভিত্তিতে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ এবং অনিয়মের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্ম, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের তদন্ত শুরু হলেও তাকে দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
টিএম জোবায়েরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমে দুদক প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়েছেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে হ্যাম্পশায়ারে কয়েকটি রেস্টুরেন্ট এবং একটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। তিনি লন্ডনের বেক্সলি এলাকার হেথ কর্ফট ওয়াসান্ট সড়কের ৭ নম্বর বাড়িটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৩৫ কোটি টাকা) মূল্য কিনেছেন। এ বাড়িটি টিএম জোবায়ের, তার স্ত্রী ফাহমিদা মাসুদ, তাদের ছেলে এস ইবনে জোবায়েরের নাম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। কোনো ব্যাংকঋণ ছাড়া বাড়িটি নগদ মূল্যে কেনা হয়।
এ ছাড়া, দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং তুরস্কেও তার বাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি লন্ডনের একটি ব্যাংক এবং তুরস্কের বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :