আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেট চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৪৩০.০১ কোটি টাকা কম বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এই মন্ত্রণালয়ের জন্য উন্নয়ন বাজেট চাওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৯৪৩.৪৪ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আছে ১০ হাজার ৩৭৩.৪৫ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৮ হাজার ২২০.৪৯ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৫৩ কোটি আর উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। এই উন্নয়ন বরাদ্দ দিয়ে ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ৯৭.১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। যা গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ১১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা বরাদ্দের তুলনায় ১৭২.৮৭ কোটি টাকা বেশি। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই খাতে প্রস্তাবিত বাজেট ছিল ১০ হাজার ৮০১ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১১ হাজার ২৭০ কোটি টাকা সংশোধন করে ৯ হাজার ১১৭.৪৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯৬.৯৬ কোটি আর উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ২২০.৪৯ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ছিল ১০ হাজার ৩৭৩.৪৫ কোটি টাকা।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উন্নয়ন ব্যয় ৯ হাজার ৯৪৩.৪৪ কোটি টাকার দিয়ে উন্নয়ন বরাদ্দ দিয়ে যে ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তার মধ্যে রয়েছে- কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে জেটিতে অধিক ড্রাফট ও দের্যের জাহাজ ভিড়ানো, চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার ধারণক্ষমতা ও হ্যান্ডলিং বৃদ্ধির জন্য ইয়ার্ড নির্মাণ এবং টার্মিনালের জন্য ১০৪টি ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ, পশ্চাৎ সুবিধাসহ হেভি লিফট কার্গো জোট নির্মাণ এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ সম্পন্নকরণ, মোংলা বন্দর চ্যানেলে ক্যাপিটাল ও সংরক্ষণ ড্রেজিং,
মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ ও অবকাঠামো উন্নয়ন, মোংলাবন্দরের জন্য ১টি ট্রেলিং সাকশান হপার ড্রেজার, ২টি কাটার সাকশান ড্রেজার সংগ্রহ, পায়রা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও চ্যানেলের নাব্যতা বজায় রাখা, বন্দরের প্রথম টামিনালের জেটি ও ইয়ার্ড চালুকরনের মাধ্যমে পায়রা বন্দরকে সম্পূর্ণ রূপে কর্মক্ষম হিসেবে পরিচালনা করা,
স্থলবদরের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিকীকরণ ও ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বন্দরের অপারেশনাল কাজে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা আনয়ন করা, সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও অবৈধ নৌচলাচল রোধে অভ্যন্তরীৎ, উপকূলীয় এলাকায়, চলাচলকারী সব নৌযানকে রেজিস্ট্র্রেশন আইনের আওতায় আনয়ন করা, মেরিটাইম সিঙ্গেল উইন্ডো (এমএসডব্লিউ) সিস্টেম বাস্তবায়ন,
নৌ আদালতের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য অতিরিক্ত মেরিন কোর্ট স্থাপন, সমুদ্রগামী ক্যাডেট ও মেরিনারদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদান, আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং ভৌত অবকাঠামোর সম্প্রসারণ, প্রি-সি এবং পোস্ট সী প্রশিক্ষণার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদান, নাবিকদের সাময়িক আবাসন সুবিধা, চিকিৎসা সুবিধা,
বিনোদন সুবিধা ও দেশি-বিদেশি নাবিকদের ফ্রি ট্রান্সপোর্ট সুবিধা প্রদান, অভ্যন্তরীণ নৌপথের নাব্য উন্নয়ন ও সংরক্ষণে ক্যাপিটাল এবং সংরক্ষণ ড্রেজিং, নদীবন্দর ও ঘাটিসমূহের উন্নয়ন এবং ড্রেজার ও ড্রেজার সংশ্লিষ্ট আনুষঙ্গিক জলযান সংগ্রহ, অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় নৌপথসমূহের হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ কার্যক্রম সম্পাদন,
অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী নৌযানের ডেক ও ইঞ্জিন কর্মীর দক্ষতা উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ নৌপথে নৌসহায়ক সামগ্রী যেমন মার্কা, বয়া, বাতি, পিসি পোল ইত্যাদি স্থাপন, ঢাকার চারপাশের ৪টি নদীতে ওয়াকওয়ে, জেটি ও আরসিসি সিঁড়ি নির্মাণ, চিলমারী এলাকায় (রমনা, জোড়গাহ, রাজিবপুর, রৌমারী, নয়ারহাট) নদীবন্দর নির্মাণ,
নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার এবং বাল্ক টামিনাল নির্মাণ, চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপ ও টেকনাফ (সাবরাং ও জালিয়ার দ্বীপ) অংশের জোটসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ, বিআরডব্লিউটিপি-১ প্রকল্পের আওতায় ১টি মাল্টিপারপাস ইন্সপেকশন ভেসেল সংগ্রহ, ২টি কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ,
৩টি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল আধুনিকায়ন ও ৪টি লঞ্চঘাট আধুনিকায়ন, অবৈধ দখল রোধে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা, নৌযান নির্মাণ ও নৌপথে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন এবং নদী দখল ও দূষণ প্রতিরোধে পরিদর্শন ও পরিবীক্ষণ একই সাথে নদী দখল ও দূষণ প্রতিরোধে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সমন্বয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে- নদীবন্দর সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর সমূহের আধুনিক ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও সংরক্ষণ, অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় নৌপথে নাব্য উন্নয়ন ও সংরক্ষণ বাতিঘর স্থাপন ও বয়াবাতি ব্যবস্থাপনা, মেরিটাইম এবং বন্দর সম্পর্কিত আইন ও বিধিবিধান প্রণয়ন, প্রয়োগ এবং হালনাগাদকরণ, মেরিটাইম শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও নাবিক কল্যাণ,
অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় নৌপরিবহন ও নিরাপদ নৌচলাচল নিশিতকরণ, যান্ত্রিক নৌযান ব্যবস্থাপনা, সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন, বংলাদেশের জলসীমায় ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে জলয়ানসৃষ্ট দূষণ নিয়ন্তণ এবং নাচলানা ও নৌবাণিজ্য সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি।
আপনার মতামত লিখুন :