ঢাকা শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫

রাজধানীর নয়া পল্টনে জমে উঠেছে ঈদ শপিং

এফ এ শাহেদ
প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ১০:৩১ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রমজানের শুরুর পর থেকেই শুরু হয়েছে ঈদের আমেজ, তার সঙ্গে চলছে কেনাকাটার ধুম। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর নয়াপল্টনে জমে উঠেছে ঈদবাজার। উচ্চ-মধ্য থেকে নিম্নবিত্ত সবাই আগেভাগে পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দমতো জামা, জুতা, আনুষঙ্গিক কেনা শুরু করেছে। নিজেদের আয়ের সঙ্গে মিল রেখে পছন্দমতো জামা-জুতা পেতে রাজধানীর পল্টন, চায়না টাউন শপিং সেন্টার, পলওয়েল সুপার মার্কেটসহ নয়াপল্টন, ফকিরাপুল এলাকায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। 

পবিত্র রমজানের ঈদে জামা-কাপড়ের চলতি ধারা এবং দরদাম জানতে সরেজমিনে দেখা যায় এমন চিত্র। পল্টনের এসব মার্কেটে দেখা পাওয়া যায় সব ধরনের পণ্যের। ক্রেতারা সহজেই বেছে নিতে পারেন তাদের সাধ্য অনুযায়ী পছন্দমতো পণ্য।

রাজধানীর পল্টনসহ বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, পবিত্র রমজানের ঈদকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে সুতি পোশাক। ক্রেতারা বলছেন, যেহেতু এবার ঈদের সময় গরম থাকবে, সুতরাং গরমে সুতি কাপড়ে স্বস্তি পাওয়া যাবে। তাই বেশির ভাগ ক্রেতাই সুতি কাপড়কে প্রাধান্য দিচ্ছেন এবারের কেনাকাটায়। 

পল্টন পলওয়েল সুপার মার্কেটে ঈদ শপিং করতে আসা ললিতা লতা বলেন, ঈদের সময় বেশ গরম থাকবে বলে মনে হচ্ছে। সে কারণে সুতি শাড়ির প্রাধান্য দিচ্ছি। নানা ধরনের শাড়ির সমারোহ দেখতে পাচ্ছি। 

এখানে কিছু শাড়িতে হাতের কাজ, মেশিনের কাজ, স্ক্রিন বা ব্লক প্রিন্ট, হ্যান্ড পেইন্টের মাধ্যমে ফুলপাতা আর জ্যামিতিক নকশাসহ অনেক বিদেশি শাড়ি রয়েছে তাদের কাছে। তবে, দেশি বা বিদেশি যে শাড়িই পছন্দ হোক, সুতি ছাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।  

বিক্রেতা আব্দুর রাশেদ বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের এখানে সব ধরনের শাড়ি রাখার চেষ্টা করেছি। তার মধ্যে দেশি তাঁতে বোনা শাড়ি, জামদানি প্রিন্টের হাফ সিল্ক শাড়ি, সুতি শাড়িসহ রয়েছে পাকিস্তানি, ইন্ডিয়ান শাড়ি। 

গরম মাথায় রেখে ক্রেতারা এবার শাড়ির ক্ষেত্রে হালকা সবুজ, আকাশি, ঘিয়ে, ধূসর, হালকা গোলাপি রংকে প্রধান্য দিচ্ছেন। কাপড়ের ক্ষেত্রে সুতিকে রাখছেন এগিয়ে। আমাদের এখানে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে ক্রেতারা পেয়ে যাবেন হাফ সিল্ক, তাঁতের শাড়ি। সিল্ক, মসলিন বা জর্জেটের শাড়িতে এমব্রয়ডারি, ক্যাটওয়ার্ক, পুঁতি ও জরির কাজ করা শাড়িগুলো ২ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। 

তিনি জানান, ইফতারের পর বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। তাদের সঙ্গেই বাড়ে আমাদের ব্যস্ততা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। ইফতারের পর বাড়তি ক্রেতাদের চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

পলওয়েল সুপার, চায়না মার্কেটসহ পল্টনের এই মার্কেটগুলোতে একই ছাদের নিচে পোশাক, জুতা, গহনা থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। ফলে পল্টন ও আশপাশের ক্রেতাদের এখানে চাহিদা রয়েছে। 

তবে দাম একটু বেশি বলেই জানান এক বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি জানান, দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে ইফতার শেষ করে এসেছেন ঈদের শপিং করতে। সব দামের ও মানের পোশাক পাওয়া যায় এই মার্কেটগুলোতে, যে কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের স্বস্তির জায়গা বলেও জানান তিনি। 

ঈদে অনেকেই জামার সঙ্গে মিলিয়ে নতুন ব্যাগ ও জুতা কেনেন, ফলে চাপ দেখা যায় জুতা-ব্যাগের দোকানগুলোতেও। দেশি ও পাশ্চাত্য-দুটো মিলিয়ে পল্টনের এই মার্কেটগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতা। নকশার পাশাপাশি জুতার রং ও মানে দেখা গেছে বৈচিত্র্য।

 বেশির ভাগ চলছে ইন্ডিয়ান নাগরা, দাম ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে কেডস পরতে চাইলে গুনতে হবে ১ থেকে ৩ হাজার টাকা। চামড়ার বিভিন্ন জুতাও পাওয়া যাচ্ছে দোকানগুলোতে। ব্যাগ ও জুতার দোকানের বেশির ভাগ জুতাই এসেছে চীন থেকে।

 এসব জুতার দাম শুরু হাজারের ওপর থেকে। চামড়ার তৈরি ব্যাগও পাওয়া যাচ্ছে, যার দাম চাওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা। মেয়েদের জন্য কাপড়ের পাশাপাশি ঈদের অন্যতম আকর্ষণ গয়না। গয়নার বাজারে ভারতীয় গয়নার আধিক্য বেশি দেখা যায়। রুপার নকশা করা গহনার সঙ্গে রয়েছে কৃত্রিম মুক্তা, পাথর দিয়ে সাজানো হচ্ছে গলার মালা, কানের দুল ও চুড়ি। আছে কাচ, আয়না, কাপড় ও সুতার তৈরি গয়না।