ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের হত্যাযজ্ঞে নেতৃত্ব দেওয়া এবং পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে পরিচিত দেশে থাকা অর্ধশতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা নজরদারিতে রয়েছেন।
এদের অনেকের বিরুদ্ধে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এসবির সাবেক প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, ডিআইজি-ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ বিদেশে পলাতকদের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রাখার অভিযোগ রয়েছে।
পাশাপাশি সম্প্রতি পুলিশকে নিষ্ক্রিয় রাখা এবং নানা অস্থিরতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। নিজেদের অপকর্মের কথা জেনে বিগত সরকারের ভক্ত ডিআইজি থেকে পরিদর্শক পদমর্যাদার এসব পুলিশ কর্মকর্তার কেউ কেউ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকছেন।
তবে তাদের সার্বিক কর্মকাণ্ড ও যোগাযোগ কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এদের অনেকে বর্তমানে সাসপেন্ড, চাকরিচ্যুতি ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন বলে একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার পুলিশের তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। এরমধ্যে একজন অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) ও দুই পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
এই তিন কর্মকর্তা হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. শহিদুল্লাহ, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান ও নোয়াখালীর সাবেক পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। এই তিন প্রভাবশালী কর্মকর্তাও জুলাই হত্যাযজ্ঞে জড়িত এবং পলাতক শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এরা একাধিক হত্যা মামলার আসামি।
সূত্রের খবর, আনুষ্ঠানিকভাবে তালিকা প্রকাশ না পেলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরের অসাধু এবং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর পুলিশ সদস্যরা তালিকায় থাকাদের কাছে তথ্য পাচার করে দিয়েছেন। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্বরত থাকাবস্থায় গোপনে স্পর্শকাতর তথ্য সরিয়ে দিচ্ছেন।
গণঅভ্যুত্থানের পর সারা দেশে কয়েকশ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত ছয় মাসে ৩৬ জন গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন। তালিকায় থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের সরাসরি ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত দল।
স্বরাষ্ট্র ও সদর দপ্তর যাচাই-বাছাই শেষে যে তালিকা করেছে, তা এরই মধ্যে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ হিসেবে পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরও অনেকের বিরুদ্ধে পাঠানো হবে। পলাতক ও দোষী পুলিশ সদস্যদের ধরতে পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানিয়েছে বাহিনীটির সদর দপ্তর।
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) ইনামুল হক সাগর রূপালী বাংলাদেশকে জানান, অপরাধী যেই হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হামলা ও হত্যাসহ যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলো পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে। অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে, তদন্তে যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে বা যাবে, তাদেরই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের যেসব পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে তাদের ৮৪ জনের একটি তালিকা করা হয়। তালিকায় অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্যকে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন আদালত।
তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য বন্দরগুলোতে নোটিশ পাঠিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তরে শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে যাচাই-বাছাই শেষে তালিকা করা হয়েছে।
তালিকায় থাকাদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন, অনেকেই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আর কাজে যোগদান করেননি। তালিকায় থাকা অতিরিক্ত আইজিপি থেকে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের অনেকেই পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত।
অনেকে আবার ৫ আগস্টের পর পদোন্নতিও পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসর পুলিশ সদস্যরা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ভোল পাল্টে পদোন্নতি ও লোভনীয় পোস্টিং পাওয়ায় গত দেড় দশক ধরে বঞ্চিতরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত দেড় দশকে আওয়ামী সরকারের আমলে গুম-খুন, অপহরণ, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ও আয়নাঘর সৃষ্টি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরিয়া ছিলেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল দেশের মানুষ।
পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন অপকর্মে অপ্রতিরোধ্য। স্বৈরাচার হাসিনা ও আওয়ামী অপকর্মের সহযোগী ছিল স্বয়ং পুলিশ বাহিনী। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চিহ্নিত বেশ কিছু কর্মকর্তার অপরাধের মাত্রা ছিল চরমে। জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে তাদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের যে ৪৭৬ জনকে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অর্ধশত পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। এসব পুলিশ সদস্যের বিষয়ে বিমানবন্দর ও সীমান্তে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকেই ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞ এবং আওয়ামী লীগ আমলে নানা অপকর্মে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার ও চাকরিচ্যুতির আতঙ্ক শুরু হয়েছে।
একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলার আসামি ও গ্রেপ্তার আতঙ্কের মধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে। কাজে মন বসাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ভয়ে ভয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে প্রতিদিন। পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যরাও আতঙ্কে রয়েছে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে জানা গেছে, গত দেড় দশকে যেসব পুলিশ সদস্য আওয়ামী স্বৈরশাসনের সহযোগী ছিলেন, তারা এখন ভোল পাল্টে নিজেদের ভিকটিম দাবি করছেন। পদোন্নতি ও লোভনীয় স্থানে পোস্টিং নিয়ে দিব্বি কাজ করে যাচ্ছেন। সঙ্গে কর্মরত অবস্থায় থেকে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার হয়ে গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নে জড়িত রয়েছেন।
গোয়েন্দা তথ্যমতে, পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা আওয়ামী লীগের গত দেড় দশকের শাসনামলে নিয়োগ পেয়েছেন। তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ পরিবার ও ঘরানার সদস্য হিসেবে যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগ পাওয়ায় বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কাজ করছেন। এমন অনেকের বিষয়ে গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
অন্যদিকে জুলাই হত্যাযজ্ঞ মামলার আসামি এমন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেছেন, চাকরি করতে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ পালন করতে হয়। এ দেশে সিস্টেম হচ্ছে পুলিশ রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি করবে।
ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের চাহিদামতো না চললে বিপদের মুখোমুখি হতে হয়। চাকরিকালীন সুবিধা পেতে সরকার ও ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ পালন করেছেন। তবে অনেকেই আর্থিক সুবিধা পেতে এবং ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে অতিরিক্ত করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
২০১৮ সালে রাতের ভোট করার জন্য জেলার এসপিসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের দায়ী করা হয়েছে। গভীর রাতে প্রায় প্রতিটি আসনেই ভোট শেষ করেছে। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাব-ইন্সপেক্টর পর্যন্ত জড়িত ছিলেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচনি কারচুপিতে ভূমিকা রাখেন। নির্বাচনের আগে আওয়ামীপন্থি জুনিয়র কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। নিয়মিত সদস্যদের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ না করে ছাত্রলীগের অনুগত কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচনের তিন মাস আগেই নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। গত দেড় দশকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসব কর্মকর্তা লেজুড়বৃত্তি করার পাশাপাশি কোটাবিরোধী আন্দোলন বানচাল করতে দমন-পীড়ন চালিয়েছেন, তাদের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তাদের একটি লম্বা তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
তালিকাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতনেরা তালিকাটি আরও অনুসন্ধান করে আরেকটি তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করেন।
পুলিশ সদর দপ্তর ও দুদক আদালতের মাধ্যমে শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা নিয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তারা হলেন-সাবেক ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, সিআইডির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার লুৎফুল কবির, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন, সাবেক আইজিপি ব্যারিস্টার হারুন অর রশীদ, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মীর রেজাউল আলম, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, আইজিপি মো. আব্দুল বাতেন, ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, অ্যাডিশনাল ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র, সাবেক ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান, সাবেক ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক, সাবেক ডিআইজি সরদার রকিবুল ইসলাম, সাবেক ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।
২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সুপার ছিলেন ঢাকা জেলায় শাহ মিজান শাফিউর রহমান, গাজীপুরে শামসুন্নাহার, নারায়ণগঞ্জে হারুন অর রশীদ, নরসিংদীতে মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, মানিকগঞ্জে রিফাত রহমান শামীম, ফরিদপুরে জাকির হোসেন খান, শরীয়তপুরে আবদুল মোমেন, মাদারীপুরে সুব্রত কুমার হালদার, গোপালগঞ্জে সাইদুর রহমান খান, রাজবাড়ীতে আসমা সিদ্দিকা মিলি, কিশোরগঞ্জে মাশরুকুর রহমান খালেদ, টাঙ্গাইলে সঞ্জিত কুমার রায়সহ ওই সময়কার ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার, সবকটি রেঞ্জের ডিআইজি ও মহানগর পুলিশ কমিশনার। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য গোপনে ভারত, আমেরিকা, লন্ডন, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। তাদের পালাতে সহায়তা করেছে খোদ পুলিশের দুর্নীতিবাজ কিছু পুলিশ কর্মকর্তা।
সূত্রমতে, এদের অনেকের বিরুদ্ধে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এসবির সাবেক প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, ডিআইজি-ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ বিদেশে পলাতকদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ রয়েছে।
এর বাইরে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সিন্ডিকেটের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন। চাহিদামতো বা প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারের স্পর্শকাতর তথ্য গোপনে সরবরাহ করছেন এমন তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ সম্প্রতি অনলাইনে সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশকে উসকানি দিয়েছেন। বেনজির ছাড়াও পুলিশের সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে অসংখ্য সদস্য সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। ষড়যন্ত্রে লিপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ইউনিটে দায়িত্বরত।
গত ২৭ আগস্ট গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে ’০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ’২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনার তদন্ত করেছে। গত ১৪ ডিসেম্বর কমিশন ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়ার পর প্রকাশ করা হয়েছে।
র্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে কমিশনে ১৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়ে। তার মধ্যে কমিশন ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে। ৭৩ শতাংশ ভুক্তভোগী ফিরে এসেছে। বাকি ২৭ শতাংশ এখনো নিখোঁজ আছে। খুন ও গুমের ঘটনায় পুলিশ, র্যাব, ডিজিএফআই, সিটিটিসি, জেলার পুলিশ সুপার ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তাদের নাম রয়েছে।