ঢাকা সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

ভুল তথ্যে উত্তরণ!

রহিম শেখ
প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ১২:২৯ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক খাতের প্রবৃদ্ধির প্রচার ছিল ফাফা বুলি। কোনো ক্ষেত্রেই পরিসংখ্যানের যথার্থতা প্রমাণ করা যায়নি। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে উচ্চ বেকারত্বই তার বড় প্রমাণ। কাগজপত্রে প্রবৃদ্ধি হলেও সুফল পৌঁছেনি সাধারণ মানুষের কাছে। 

যে কারণে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। ভুলে ভরা এই অর্থনীতির ওপর ভর করেই নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী বছরেই এলডিসি থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থাৎ ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাবে বাংলাদেশ। 

মোটাদাগে এই প্রক্রিয়ায় অর্থনীতিবিদদের অধিকাংশ উত্তরণের পক্ষে, তবে ব্যবসায়ীরা আরও সময় চান। কেননা বেশকিছু চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে যা মোকাবিলা করা বেশ কঠিন হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এজন্য অবশ্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। 

কিন্তু গত আওয়ামী লীগ সরকারের ভুল তথ্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা আর্থিক কাঠামোয় ভর করে এলডিসি থেকে উত্তরণ কতটা সঠিক সিদ্ধান্ত তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। তড়িঘড়ি করে এ আয়োজন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ ছিল বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। মোটাদাগে সেই পথেই হাঁটছে অন্তর্বর্তী সরকার। 

মূলত অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে উন্নয়নশীল ও উন্নত এই দুই শ্রেণিতে সব দেশকে ভাগ করে থাকে জাতিসংঘ। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে যে দেশগুলো তুলনামূলক দুর্বল, তাদের নিয়ে ১৯৭১ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা হয়। 

স্বল্পোন্নত দেশ হলেও এসব দেশও একধরনের উন্নয়নশীল দেশ। বর্তমানে বিশ্বে ৪৪টি স্বল্পোন্নত দেশ রয়েছে। দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, অ্যাঙ্গোলা, বেনিন, বুরকিনা ফাসো, বুরুন্ডি, কম্বোডিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, চাদ, কমরোস, কঙ্গো, জিবুতি, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, গাম্বিয়া, গিনি, গিনি বিসাউ, হাইতি, কিরিবাতি, লাওস, লেসেতে, লাইবেরিয়া, মাদাগাস্কার, মালাউই, মালি, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, মিয়ানমার, নেপাল, নাইজার, রুয়ান্ডা, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সুদান, তিমুর, টোগো, টুভালু, উগান্ডা, তানজানিয়া, ইয়েমেন ও জাম্বিয়া।

এলডিসি থেকে কোন দেশ বের হবে, সে বিষয়ে সুপারিশ করে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)। এ জন্য প্রতি তিন বছর পরপর এলডিসিগুলোর ত্রিবার্ষিক মূল্যায়ন করা হয়। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এই তিন সূচক দিয়ে একটি দেশ উন্নয়নশীল দেশ হতে পারবে কি না, সেই যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়। 

যেকোনো দুটি সূচকে যোগ্যতা অর্জন করতে হয় কিংবা মাথাপিছু আয় নির্দিষ্ট সীমার দ্বিগুণ করতে হয়। এই মানদণ্ড সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। বাংলাদেশ ২০১৮ ও ২০২১ সালের ত্রিবার্ষিক মানদণ্ডের তিনটিতেই উত্তীর্ণ হয়। ২০২১ সালেই বাংলাদেশ চূড়ান্ত সুপারিশ পায় যে, ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ হতে পারে বাংলাদেশ। 

২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে প্রস্তুতির জন্য আরও দুই বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ যদি এলডিসি থেকে উত্তীর্ণ হয়, তাহলে বাংলাদেশই হবে প্রথম দেশ, যারা তিনটি সূচকেই উত্তীর্ণ হয়ে বের হবে। আগামী পাঁচ বছরে এলডিসি তালিকা থেকে বের হতে অপেক্ষায় আছে ছয়টি দেশ। 

বাংলাদেশ ছাড়াও ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের তালিকায় আরও দুটি দেশ লাওস ও নেপাল আছে। এ পর্যন্ত গত পাঁচ দশকে সব মিলিয়ে মাত্র আটটি দেশ এলডিসি থেকে বের হয়েছে। দেশগুলো হলো ভুটান, বতসোয়ানা, কেপ ভার্দে, ইকুইটোরিয়াল গিনি, মালদ্বীপ, সামোয়া, ভানুয়াতু, সাও টোমো অ্যান্ড প্রিন্সেপ। 

খোদ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিগত সরকারের সময় যে অর্থনৈতিক তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তা ছিল গোঁজামিলনির্ভর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অর্থনৈতিক ডেটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারে বাংলাদেশ ছিল অন্যতম অগ্রগণ্য দেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) নির্দেশ দেওয়ার মাধ্যমে তারা মনমতো ডেটা ব্যবহার করত। 

অন্তর্বর্তী সরকার এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেও প্রশ্ন হচ্ছে, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের ভুয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হতে যাচ্ছি কি না?

এবার দেখা যাক গত আওয়ামী লীগ সরকার কীভাবে অর্থনীতির সব খাতেই ভুল তথ জুড়িয়ে দিয়েছে। পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরিতে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস)। 

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, মূল্যস্ফীতি, প্রত্যাশিত গড় আয়, বেকারত্বের হার, জনসংখ্যার চিত্র, দরিদ্রতার হারসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের চিত্রসহ নানা তথ্য ও সূচক ছিল বাস্তবতাবিবর্জিত। সন্দেহের বাইরে ছিল না কোনো কিছুর হিসাব। 

সময় সময় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন নীতিনির্ধারকরাও।সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে। তার মতে,  গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী সময়ে ইউরোপের বাজারে শুল্কছাড় সুবিধা উঠে যাবে। এ ছাড়া জলবায়ু অর্থায়নের ক্ষেত্রেও উন্নয়ন সহযোগিতা কমবে। আমাদের ব্যবসায়ীরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত নন।

উত্তরণের যত সুবিধা-অসুবিধা : এলডিসি উত্তরণ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো দেশের এলডিসি থেকে বের হলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়তে হবে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে। কারণ, এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) আওতায় শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা পায়। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের তো আঞ্চলিক বা দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতেও (যেমন ভারত, চীন) এ ধরনের শুল্কসুবিধা পেয়ে থাকে। বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৬ সালে এসব সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নে জিএসপির আওতায় এই শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকবে ২০২৯ সাল পর্যন্ত। 

বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে ওষুধশিল্প। এলডিসি থেকে বের হলে ওষুধশিল্পের ওপর মেধাস্বত্ব বিধিবিধান আরও কড়াকড়ি হবে। এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠানকে মেধাস্বত্বের জন্য অর্থ দিতে দিতে হয় না। এ কারণে এলডিসির গরিব নাগরিকেরা স্বল্প মূল্যে ওষুধ পায়। 

২০৩৩ সালের আগে কোনো দেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে গেলে ওষুধশিল্পের এই সুবিধা থাকবে না। এলডিসি হিসেবে যেকোনো দেশ তার দেশে উৎপাদিত পণ্য বা সেবার ওপর নগদ সহায়তা ও ভর্তুকি দিতে পারে। 

বাংলাদেশ এখন যে রপ্তানি আয় বা রেমিট্যান্স আনায় নগদ সহায়তা দেয়, তা নিয়ে আপত্তি উঠতে পারে। এলডিসি থেকে উত্তরণ হওয়া দেশগুলো আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহজ শর্তের ঋণ পাওয়ার সুযোগ সীমিত হতে পারে।

এলডিসি থেকে বের হলে জাতিসংঘে চাঁদার পরিমাণ বেড়ে যাবে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও উন্নত দেশগুলো স্বল্পোন্নত দেশের শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের বৃত্তি দেয়। এলডিসি থেকে উত্তরণ হলে এ ধরনের বৃত্তির সংখ্যা কমে যাবে। 

২০২৬ সালেই এলডিসি উত্তরণ অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত। এখন উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিতে হবে। এ জন্য একটি উত্তরণকালীন কৌশল ঠিক করা আছে। 

প্রশাসনিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে প্রস্তুতি নিতে হবে। জোর দিতে হবে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণ, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং সামাজিক সুরক্ষায়। 

যেসব কারণে ব্যবসায়ীরা আরও সময় চান: বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ কমপক্ষে ২-৩ বছর পিছিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ। 

তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৮ শতাংশ, যেখানে উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। 

বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণে ৫টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ‘মসৃণ রূপান্তর কৌশল (এসটিএস)’ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ফ্রেমওয়ার্কের বাস্তবায়ন, শক্তিশালী নেতৃত্ব, নীতির সমন্বয়, অর্থায়ন নিশ্চিতকরণে কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তাবয়ন, পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়ন একান্ত অপরিহার্য।’ 

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজের মতে, সরকার আইএমএফের প্রেসক্রিপশন মেনে চলছে। 

এতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি মনে করেন, গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া স্বস্তি ফিরবে না। যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া উচিত। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল বিগত সরকারের বাজেট সংশোধন করা। 

বিকেএমইএ এবং বাংলাদেশ রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘বিগত সরকারের দেওয়া সূচকের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এলডিসি উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সে তথ্যগুলো ভুল প্রমাণ হয়েছে।

 ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে যে লক্ষ্যমাত্রা নিরূপণ করা হয়েছিল, সেটি সংশোধন করে নতুন রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে সময় প্রয়োজন হলে তা দিতে হবে। এরপরও যদিও ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর এলডিসি উত্তরণে যেতে বাধ্য করা হয়, তাহলে সেটি হবে পরিকল্পিতভাবে জেনেশুনে আত্মহত্যার প্রস্তুতি।’

পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ঘাটতি : ইতোমধ্যে যেসব দেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে গেছে, তাদের কারো মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশ একটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল না। ফলে ওইসব দেশের হারানোর কিছু নেই; যেটা বাংলাদেশের আছে। 

নেপাল স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে গেছে; কিন্তু তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। ফলে তাদের এ রিজার্ভ কোথায় কাজে লাগাবে, সেটি খুঁজে পাচ্ছে না। কিন্তু ২০১৮ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার সময় রিজার্ভ ছিল ৪৫ বিলিয়ন ডলার, যা এখন ১৮ বিলিয়ন ডলারে ঘুরপাক খাচ্ছে। 

অর্থনীতির অন্যান্য সূচকও নিম্নমুখী। এ ছাড়াও তৈরি পোশাক খাতের বাইরে রপ্তানির সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাত যেমন: ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, সেমিকন্ডাক্টর, হালকা প্রকৌশল এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে রপ্তানি বাড়াতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) এক গবেষণার তথ্যমতে, বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। 

২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর রপ্তানির বিপরীতে নগদ প্রণোদনা দেওয়া যাবে না। এর প্রভাবে চামড়া ও চামড়াজত পণ্য, পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য এবং ওষুধ খাতের রপ্তানি সক্ষমতা হারানোর শঙ্কা রয়েছে। 

যদিও কী ধরনের বিকল্প সুবিধা দেওয়া যায়, তা পর্যালোচনায় সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম বলেন, এই এলডিসি প্রি ম্যাচিউর গ্রাজুয়েশনের যে পরিকল্পনাটি এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। 

পরীক্ষায় নকল করে পাশ করা যেমন একটি উপায় এলডিসি গ্রাজুয়েশন জাস্ট সে রকমই একটা ব্যাপার ছিল। কিছু জিনিস সময় নিয়ে যখন আমাদের গ্রাজুয়েশনের সময় হবে ঠিক সে সময় যদি আমরা গ্রাজুয়েশন করি তখন আমরা কম্পিটিশন করার জন্য রেডি। এ অবস্থায় প্রকৃত যোগ্যতা ছাড়াই উন্নয়নশীল দেশের কাতারে এলডিসির সুবিধা হারিয়ে নামতে হবে নতুন প্রতিযোগিতায়।