ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ এপ্রিল, ২০২৫

খালেদা জিয়া-তারেক রহমান

মধ্য এপ্রিলে দেশে আসছেন মা-ছেলে

মেহেদী হাসান খাজা
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৫, ০৩:৪৪ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আসন্ন ঈদের পর মধ্য মাসের মধ্যভাগেই চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে তার বড় ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একই সময়ে দেশে ফিরছেন। 

ইতোমধ্যে সব মামলায় খালাস পাওয়ায় তার দেশে ফিরতে আইনি বাধা কেটেছে। দেশে ফিরেই বিএনপির এই দুই কাণ্ডারি দলের হাল ধরবেন ও আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিবেন বলে একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৭ জানুয়ারি রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমীরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর বর্তমানে তিনি অনেকটা সুস্থ বলে জানা গেছে। বেগম খালেদা জিয়া আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরতে পারেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক। 

তিনি বলেন,  ম্যাডাম ঈদ এখানেই করছেন। আমরা আশা করব তিনি সুস্থ থাকলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন। এপ্রিলের ১৫ তারিখ অথবা আশপাশে যেকোনো একটা তারিখে বেগম জিয়া দেশে যাবেন। উনার চিকিৎসকরাও সেভাবে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তবে এখানে ফ্লাইটেরও একটি বিষয় আছে। ফ্লাইট যদি নির্ধারিত সময়ে না পাওয়া যায়, তাহলে দুই-এক দিন এদিক সেদিক হতে পারে। তবে ম্যাডাম দেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।’

দলীয় সূত্র জানায়, বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তিনি এপ্রিলে দেশে ফিরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তা ছাড়া তারেক রহমানের সপরিবার নিয়ে দেশে ফিরবেন। যেটা নেই ইতোমধ্যে দলের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে। 

মা-ছেলে একসঙ্গে দেশে ফিরবেন, প্রত্যাশা বিএনপির শীর্ষ নেতাকর্মীদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মধ্য এপ্রিলে দেশে আসছেন। ইতিমধ্যে তিনি নির্বাচনের সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন তারেক রহমান এবং বেগম জিয়া একসঙ্গে দেশে ফিরবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

অন্যদিকে লন্ডনে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে দ্রুতই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। বিএনপির একাধিক নেতা কর্মীরা জানান, দীর্ঘ ৭ সাত বছর একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করা হয়নি মা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছেলে তারেক রহমানের। তবে এবার এসেছে সেই সুযোগ। লন্ডনের চিকিৎসার কারণে ছেলের বাসায় অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

সেনাসমর্থিত এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একাধিক দুর্নীতির মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন তারেক রহমান। সেখানে তিনি পরিবারের সঙ্গেই থাকছেন। 

দেশ ছাড়ার সময় তিনি রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে পরে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে দলের নেতৃত্বের ভূমিকায় ফেরেন। তিনি গত বছরে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে লন্ডন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

 রাজনৈতিক মহলে তারেক রহমানের ভূমিকার প্রশংশিত হয়। এর আগে তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে বিগত ১০ বছরের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। আগামীতে সরকার গঠনে তারেক রহমানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়া ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেকের বিরুদ্ধে এক-এগারো সরকার এবং পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় ৮৫টি মামলা দায়ের করেছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে রাজনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত সক্রিয় তারেকের প্রত্যাবর্তন এখন বহুল প্রত্যাশিত হয়ে উঠেছে। 

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার উদ্যোগের মাধ্যমে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি সব মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আগে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মুক্ত হন তার মা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার বিরুদ্ধে বেশির ভাগ রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাও আইনি প্রক্রিয়ায় শেষ হয়েছে।