সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ঝিমিয়ে থাকা বন্ড মার্কেট চাঙ্গা করার উদ্যোগ

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৫, ০৭:৩৫ এএম

ঝিমিয়ে থাকা বন্ড মার্কেট  চাঙ্গা করার উদ্যোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বন্ড মার্কেট ছাড়া বৈচিত্র্যপূর্ণ শেয়ারবাজার সম্ভব নয়। তাই শেয়ারবাজারে বৈচিত্র্য আনতে বন্ড মার্কেট উন্নয়নে রোডম্যাপ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শেয়ারবাজারের উন্নয়নে ফিক্সড ইনকাম সিকিউরিটিজের (করপোরেট বন্ড ও সুকুক) বিশেষ ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকলেও তা ঝিমিয়ে রয়েছে। 

তাই সরকার এই বন্ড মার্কেট উন্নয়নের জন্য তৎপর এবং বিভিন্ন উদ্যোগ ও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তবে সাধারণ বন্ডের পাশাপাশি ইসলামি বন্ডের ওপর বিষেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। 

বন্ড মার্কেট উন্নয়নে রোডম্যাপ তৈরির জন্য অর্থ সচিব ড. মো. খাইরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে আজ সভা হবে। অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগের উপসচিব ফরিদ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে, যার একটি অনুলিপি রূপালী বাংলাদেশের হাতে এসেছে।

মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের কষ্টার্জিত অর্থের মান ধরে রাখা দিনে দিনে বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের জগতে সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হয় বন্ডকে। 

বন্ডে বিনিয়োগ করলে বন্ডহোল্ডারদের বিশেষ একটি ঝুঁকি নিতে হয় না। আবার নির্দিষ্ট হারে নিশ্চিত সুদও পাওয়া যায়। এ কারণে এখন মানুষের বিভিন্ন ধরনের বন্ডে বিনিয়োগ করার প্রবণতা বাড়ছে। 

বন্ডের ট্রেডিং সাধারণত প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি মার্কেটে হয়ে থাকে। প্রাইমারি মার্কেটে একদম নতুন বন্ড ইস্যু করা হয়। অর্থাৎ, এই মার্কেটে বন্ড ইস্যুকারী ও বন্ডহোল্ডারের মধ্যে সরাসরি লেনদেন হয়ে থাকে। 

অন্যদিকে, সেকেন্ডারি মার্কেটে সাধারণত পুরোনো বন্ডের ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ব্রোকারদের কাছ থেকে এ ধরনের বন্ড কিনে থাকেন, যারা বন্ড ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে একজন ইন্টারমিডিয়ারি হিসেবে কাজ করেন। 

সেকেন্ডারি মার্কেটে পেনশন ফান্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ও লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসির মতো প্যাকেজ আকারেও বন্ড বিক্রি করা হয়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারি ও করপোরেট দুই ধরনের বন্ডের ওপরই জোর দিতে হবে। এ ছাড়া রয়েছে ইসলামি বন্ড সুকুক। 

সরকারি বন্ডের মধ্যে রয়েছে ট্রেজারি বন্ড, টি-বিল, জাতীয় সঞ্চয়পত্র প্রভৃতি। এসব সিকিউরিটিজের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি মার্কেটও বিদ্যমান। সেকেন্ডারি মার্কেটে আবার ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি), ট্রেড ওয়ার্ক স্টেশন (টিডব্লিউএস), জিএসওএম ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম ও সেকেন্ডারি ট্রেডিং ভলিউম অব গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ অপারেশন রয়েছে।

এত কিছুর পরও বন্ড মার্কেট চাঙা না হওয়ার পেছনে বেশ কিছু বিষয়কে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলোÑ যথাযথ ক্যাশ ব্যবস্থাপনার ঘাটতি, মধ্যবর্তী অকশন ক্যালেন্ডার না থাকা, সঞ্চয়পত্রের বিক্রির সীমা, বন্ডের স্থিতির পর্যাপ্ততার অভাব, বড় অঙ্কের সিকিউরিটিজ, বেঞ্চমার্ক সিকিউরিটিজের অভাব, দ্বিমুখী দর উদ্ধৃতির অপার্যপ্ততা, কেন্দ্রীয় কাউন্টার পার্টির অংশগ্রহণ, প্রতিষ্ঠিত পেনশন, ভবিষ্য তহবিলের অভাবসহ বেশ কিছু বিষয় রয়েছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেছেন, ‘বন্ড মার্কেটকে আমরা ডেভেলপমেন্ট স্টেজে নিয়ে আসতে চাইছি।

বিএসইসির মূল কাজ হচ্ছে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা এবং বাজারকে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা। বন্ড বাজারের সুষ্ঠু পরিচালনা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ট্রাস্টির বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বন্ড বাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার গুরুদায়িত্ব রয়েছে ট্রাস্টির ওপর। 

এজন্যই বন্ড বাজারের ভালো পারফর্ম করা এবং এর ভবিষ্যৎ অগ্রগতির ক্ষেত্রে ট্রাস্টির ভূমিকা নির্ধারক বা নির্ণায়ক হিসেবে কাজ করবে।

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্রে জানা গেছে, পলাতক আওয়ামী লীগ সরকারের চালু করা সুকুক মার্কেট চাঙা করতে বিমা কোম্পানিগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক বিনিযোগের আদেশ জারি করেছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। 

এজন্য ইসলামি বিমা কোম্পানিগুলোকে ইসলামি জীবনবিমার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং সাধারণ বিমার ক্ষেত্রে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি সিকিউরিটিজ ইসলামি বন্ড বা সুকুকে বিনিয়োগ করতে বলা হয়েছে।জানা গেছে, ২০২৩ সালে বহু দেনদরবার করে ও কাঠখড় পুড়িয়ে স্টক এক্সচেঞ্জে চালু হয় ট্রেজারি বন্ডের সেকেন্ডারি বাজার। কিন্তু এই বাজারে কেউ কেনাবেচা করে না। ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলো প্রথাগতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় এই বন্ড কেনাবেচা করছে। এ অবস্থায় বন্ড বাজার গতিশীল করতে সব মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকার ডিলার, সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে তালিকাভুক্ত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক করে একটি নির্দেশনা জারি করেছিল শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনা ও ঝুঁকি হ্রাস করতে নিজ পোর্টফোলিওর অন্তত ১ শতাংশ তালিকাভুক্ত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করতে বলা হয়েছিল।
এর আগে ২০২২ সালের ৩০ জুনের মধ্যে তালিকাভুক্ত ডেট সিকিউরিটিজে অন্তত ৩ শতাংশ বিনিয়োগ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করে ওই বছরের ২৩ মে একটি নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। কেউ এই নির্দেশনা পরিপালন করতে না পারায় ওই সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন ২০২৩ করা হয়েছে।

মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার ডিলার প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, বন্ড বাজারে কারও আগ্রহ নেই। প্রথম দিকে বেক্সিমকোর সুকুকে (শরিয়াহ বন্ড) কিছুটা আগ্রহ থাকলেও অন্য কোনো বন্ডের ক্রেতা নেই, বিক্রেতাও পাওয়া যায় না। 

আর এখন বেক্সিমকোরটাতেও আগ্রহ নেই। কেউ বিক্রি না করলে অন্য কেউ কীভাবে বন্ডে বিনিয়োগ করবে? যদিও বন্ডে বিনিয়োগ লাভজনক, কিন্তু টাকা আটকে থাকে।

মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সংগঠন বিএমবিএর সাবেক সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বন্ড বাজারে বিনিয়োগ করাতে পারলে এ বাজার সক্রিয় হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগে আসবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে এ ধারণার বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। 

যত দিন বন্ডের চেয়ে ব্যাংকে বেশি সুদ বা মুনাফা মিলবে, তত দিন কেউ আগ্রহী হবেন না। জাপানের মতো দেশে, যেখানে ব্যাংক সুদহার ঋণাত্মক, সেখানে এটা সম্ভব। এখানে ফিক্সড ইনকাম বিনিয়োগে সবাই সঞ্চয়পত্রকে এক নম্বরে রাখেন।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!