শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জনাব আলী, রাজশাহী

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ১২:০২ এএম

রাজশাহী বিএনপির হালচাল

রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে বাড়ছে খুন-জখম

জনাব আলী, রাজশাহী

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ১২:০২ এএম

রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে বাড়ছে খুন-জখম

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহীতে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়াচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা করতে না পারায় রাজনৈতিক সংঘাতে জখম ও খুনের ঘটনা ঘটছে। এ কারণে রিকশাচালক থেকে শুরু করে দলীয় কর্মীরাও ঢলে পড়ছেন মৃত্যুর মুখে। এতে করে একদিকে নিজ দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা-মোকদ্দমার সঙ্গে বাড়ছে দ্বন্দ্ব-সংঘাত; অন্যদিকে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন রাজশাহী নগরীসহ জেলাবাসী।

আবার কোন্দল বাড়ায় তৃণমূল কর্মীরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছেন। ফলে দলীয় নেতাদের মধ্যেও শঙ্কা বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগের সহায়তাকারী হিসেবে শোকজও করা হয়েছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার জেলার দুর্গাপুরে নিজ দলের কর্মীদের হামলায় আহত এক বিএনপি কর্মী মারা গেছেন। তার নাম মকবুল হোসেন (৩৮)। তিনি  উপজেলার দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়নের আমগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এর আগে সোমবার বিকেলে ওই এলাকায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থানকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতের স্বজনেরা জানান, হামলার সময় মকবুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মকবুলের মৃত্যুর পর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুজ্জামান আয়নাল ও সদস্যসচিব অধ্যাপক জোবায়েদ হোসেন যৌথ স্বাক্ষরে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, এই হামলায় কারা জড়িত তা দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেখা হবে। দলের কেউ এই হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

এদিকে অসুস্থতার কারণে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে না পারায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আইনগত ও জামিনে সহায়তাকারী হিসেবে অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতাকে শোকজ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাঘায়। উপজেলার বাজুবাঘা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহম্মেদ রঞ্জুকে এর জন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাবও দিতে বলা হয়েছে। যদিও গত ১৩ এপ্রিলের তারিখ দিয়ে কারণ দর্শানোর ওই নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন বাজুবাঘা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফকরুল ইসলাম বাবুল ও সদস্যসচিব আশরাফুল আলী মলিন। তবে গত ১৪ এপ্রিল ওই নোটিশের একটি কপি কিছুক্ষণের জন্য ফেসবুকে শেয়ার করেন বাজুবাঘা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফকরুল ইসলাম বাবুল। পরে তিনি সেটি ডিলিট করে দেন।

বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ রঞ্জু বলেন, ‘আসল ঘটনা হলো পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বাঘার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হতে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি-সম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি হার্ট ও ডায়েবেটিসের কারণে অসুস্থ থাকায় ওই অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে বলে আমি শুনেছি। উপজেলা বিএনপির সভাপতি কারণ দর্শানোর ওই নোটিশ তার ফেসবুকে পোস্ট করলেও পরে তিনি সেটি রিমুভ করে দিয়েছেন। কিন্তু আমি এ ধরনের কোনো নোটিশ পাইনি।’

বাজুবাঘা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে দেওয়া নোটিশে বলা হয়, আপনি দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা অবস্থায় আপনার বিরুদ্ধে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগ থাকায় এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তাসহ জামিনে সহায়তা করায় দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আপনাকে বাজুবাঘা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে কেন অব্যাহতি প্রদান করা হবে না, তার উপযুক্ত জবাব ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাঘা থানা বিএনপির কাছে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার জন্য নিদের্শ প্রদান করা হলো।

এ প্রসঙ্গে বাঘা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফকরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘একটা ছোট বিষয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়েছে। তবে এটি নিয়ে আপনারা সংবাদ প্রকাশ করবেন না। আমরা চাই না দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা বাড়ুক।’

জানা যায়, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপি ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। ওই ইফতারে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান। আর প্রধান অতিথি ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে শরীফ উদ্দিন আসার আগে তাকে বরণ করে নিতে বিএনপির দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা কৃষ্ণপুর মোড়ে অপেক্ষা করছিলেন। ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোমিনুল হকের অনুসারীরা প্রধান অতিথিকে বরণ করতে চাইলে বাধা দেন বর্তমান সভাপতি মুজিবুর রহমানের অনুসারীরা। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় মোমিনুল হকের ছোট ভাই গানিউল ইসলাম আহত হন। তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ মার্চ সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মিজানুর রহমান ও মুজিবুর রহমানসহ ৩৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়। এর পরই দুই নেতাকে বহিষ্কার করল জেলা বিএনপি।

এ ছাড়া, গত ৬ মার্চ রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় এক আওয়ামী লীগ নেতার ফ্ল্যাটে অভিযান এবং তার ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরদিন বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দড়িখড়বোনা ও আশপাশের এলাকায় প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় তিনটি মোটরসাইকেল।

ওই সময় রিকশাচালক গোলাম হোসেন মালিকের গ্যারেজে রিকশা জমা করে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন। তখন বিএনপির এক পক্ষ আরেক পক্ষের লোক ভেবে তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১৩ মার্চ মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রিকশাচালক গোলাম হোসেন। এ ঘটনায় রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন নিহত ব্যক্তির স্ত্রী পরীবানু বেগম। মামলায় ছয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক হাসান বলেন, ওই মামলায় ছয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। আসামিরা হলেন নগরীর শাহ মখদুম থানা বিএনপির আহ্বায়ক সুমন সরদার, চন্দ্রিমা থানা বিএনপির আহ্বায়ক ফাইজুর হক ফাহি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মীর তারেক, মহানগর মহিলা দলের সহক্রীড়া সম্পাদক লাভলীর স্বামী সোহেল রানা, তার ভাই মো. নাঈম ও যুবদলের কর্মী রনি।
 

আরবি/একে

Link copied!