বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মচারী শাহজালাল বিমানবন্দরের স্টোরে এখনো দিব্যি বসে আছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আহম্মদ হোসেন টিপু। তিনি শুধু আওয়ামী দোসরই ছিলেন না, উত্তরা হত্যা মামলারও আসামি। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি, বেবিচকও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। টিপুর পাহাড়সম অপকর্ম সামাল দেওয়ার জন্য নব্য বিএনপি নেতা সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা শহিদুল্লাহ তার কাছ থেকে অর্ধ লাখ টাকা ‘এনাম’ হিসেবে নিয়েছেন বলে বেবিচকে চাউর আছে।
গত ১ অক্টোবরের বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী সমাবেশে ওই বিএনপি নামধারী শহিদুল্লাহকে দেখা যায়নি। বৈষম্যবিরোধী কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে শহিদুল্লাহ চাঁদাবাজি করে থাকেন। তাই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সমাবেশ সম্পর্কে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা তার কাছে নাকি জানতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। মামলা পরিচালনার কথা বলেও ঢাকা ও বাইরের স্টেশন থেকে শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে চাঁদা আদায় করা হয়ে থাকে বলে কর্মচারীরা বলে বেড়ান। এই চাঁদার টাকায় শহিদুল্লাহ বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক বনে গেছেন বলে সবাই বলাবলি করছেন। উত্তরায় রয়েছে তার নিজস্ব ফ্ল্যাট। কাওলায়ও ফ্ল্যাট নির্মাণ চলছে বলে শোনা যায়। বেবিচক তাকে বারবার ঢাকার বাইরে বদলি করলেও তিনি তদবির করে আবার ঢাকায় ফিরে আসেন।
আহম্মদ হোসেন টিপু দীর্ঘদিন ধরে শাহজালালের স্টোরে বসে আছেন। তাকে অন্যত্র বদলি করা হয় না। বরং উল্টো পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে তার এক সহকর্মীকে শাহজালাল স্টোর থেকে বদলি করিয়ে ছাড়েন। তিনি এখন সিএনএস স্টোরে কর্মরত। স্টোর থেকে পণ্য নয়ছয় করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে ওই স্টোরে নূপুর নামে এক সংখ্যালঘু মহিলা কর্মচারীকেও সরিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে জানা যায়। আহম্মদ হোসেন টিপু একজন কর্মচারী হলেও তার অফিস কক্ষে কর্মকর্তার কক্ষের মতোই এসি চলে সারাক্ষণ। যখনই নতুন চেয়ারম্যান বেবিচকে আসেন, তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ১৫ আগস্টের শোক দিবসের অনুষ্ঠানে জাতীয়তা ঘরানার এক কর্মচারীকে প্রধান বক্তা করা হয়। তাকে প্রধান বক্তা না করায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং হট্টগোল করেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগ এবং সার্বিক অবস্থা জানার জন্য ফোনে যোগাযোগ করা হলে আহম্মদ হোসেন টিপু বলেন, ‘নিউজটা একটু ধরে রাখুন, আমি এসে কথা বলব।’
আপনার মতামত লিখুন :