ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
বেবিচকে তুঘলকি কাণ্ড

প্রকল্পের প্রকৌশলীদের প্রধান প্রকৌশলী করার পাঁয়তারা!

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৪, ০১:৪০ পিএম

প্রকল্পের প্রকৌশলীদের প্রধান প্রকৌশলী করার পাঁয়তারা!

ছবি: সংগৃহীত

১৯৯৬ সালের বোর্ডিং ব্রিজ প্রকল্প। এ প্রকল্পে উপসহকারী/সহকারী প্রকৌশলী ইলেকট্রনিক্স একং সহকারী প্রকৌশলী ম্যাকানিক্যাল পদে চাকরি দেওয়া হয় ৬ প্রকৌশলীকে। ২০১০ সালে প্রকল্প শেষ। কিন্তু শেষ হয়নি তাদের চাকরি। 
২০১০ সালে তাদের পদ বিবর্তন করে কোনোরকম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে ‘উপসহকারী প্রকৌশলী ইএম’ এবং ‘সহকারী প্রকৌশলী ইএম’ পদে পদায়ন করে তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগের পর তদন্ত করা হয়, কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে করে সরকারের এ পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো। 
তাদের আবার ৭ দিনের মধ্যে উপসহকারী প্রকৌশলী থেকে সহকারী প্রকৌশলী পদে এবং সহকারী প্রকৌশলী থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ১ বছরের মধ্যে আবার ২জনকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী করা হয়। যেখানে ফিডার পদে ৭ বছর চাকরি করার পর তত্ত্বাধায়ক প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিধান রয়েছে।
এই দুজনকে ডিপিসি করে প্রধান প্রকৌশলী করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এই দুজনের দুদক ক্লিয়ারেন্স চেয়ে দাপ্তরিক পত্র পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় এদের ব্যাপারে দুদকে অভিযোগ/অথবা মামলা আছে কি নাÑ জানতে চেয়ে বেবিচক দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন।

বোর্ডিং ব্রিজ প্রকল্পের এই ৬ প্রকৌশলী হলেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইএম জাকারিয়া, শুভাশিষ বড়ুয়া, সহকারী প্রকৌশলী আছালত হোসেন খান, আয়েশা হক, সফিকুল আলম, শাহিনুর আলম।

বেবিচকের ইতিহাসে এ পর্যন্ত দুজন প্রকৌশলীকে ইএম থেকে প্রধান প্রকৌশলী করা হয়। এরা হলেন কামাল উদ্দিন এবং আব্দুল মালেক। কারণ বেবিচকে সিভিল ডিভিশনের কাজ অত্যধিক, ইএমের কাজ কম। 
আব্দুল মালেককে রাজনৈতিক কারণে প্রধান প্রকৌশলী করা হয়। কারণ তখন সিভিল ডিভিশনে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী একমাত্র হাবিবুর রহমান ছাড়া কেউ ছিলেন না, তাকে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগানো হয়। আর গোস্বামি চাকরিচ্যুত হবার পর হাবিবুর রহমানেরই প্রধান প্রকৌশলী করার কথা, কিন্তু কোনো এককালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্রদল’ করার কারণে তাকে প্রকৌশল বিভাগ থেকেই আউট করে এফএসআরে নিয়ে যাওয়া হয়।

বর্তমানে সবচেয়ে সিনিয়র শহিদুল আফরোজ, এরপর হাবিবুর রহমান, এরপর নূরুদ্দিন চৌধুরি, কিন্তু নূরুদ্দিন চৌধুরীকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে কনফার্ম করা হয়নি গত ১০ বছর। গত সচিবের আমলে বৈষম্যের শিকার। এবারও তার পদোন্নতি নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ইএমের নিচের দিকে প্রকল্পের প্রকৌশলীদের ডিপিসি করে নির্বাহী প্রকৌশলী করার জন্য দদুক ক্লিয়ারেন্স চাওয়া হয়েছে।

আর চারজনের মধ্য থেকে প্রধান প্রকৌশলী করার পাঁয়তারা চলছে। এরমধ্যে প্রকল্প থেকে আসা ইএমর দুজন এবং সিভিলের দুজন। এদের মধ্যে আবার দুদকের মামলার আসামিদেরও ডিপিসি করার চেষ্টা চলছে।

ছড়ি ঘুরাচ্ছে অডিটের লোকজন : ইস্টিমেট প্রাক্কলন/টেন্ডার বাতিল করা বা কাজ করা, কাজ না করার দরকার আছে কি নেই তা বলতে পারে একমাত্র সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীরা। কিন্তু এখানে মাতাব্বরি করছে অডিট বিভাগের জাহিদ গংরা। এদের রিপোর্টে চেয়ারম্যান টেন্ডার ইস্টিমেট বাতিল করে দিয়েছেন। সিডি-২-এ এ প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

অডিট বিভাগের লোকজন বলে বেড়াচ্ছেন, চেয়ারম্যান আমাদের ইস্টিমেট বাতিল করার ক্ষমতা দিয়েছেন, তাই ইস্টিমেট বাতিল করছি।

এ বিষয়ে জানতে উপপরিচালক (অডিট) শাহিনা আকতারকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরবি/জেডআর

Link copied!