বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫

বন্ধ হচ্ছে প্রকল্পে আউটসোর্সিং

মাইনুল হক ভূঁঁইয়া

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ০৮:৫১ এএম

বন্ধ হচ্ছে প্রকল্পে আউটসোর্সিং

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে বন্ধ হচ্ছে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে লোকবল নিয়োগ। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে নতুন সব উন্নয়ন প্রকল্পে এই পদ্ধতি পরিহার করতে বলেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। কারণ হিসেবে মন্ত্রণালয় বলছে, এই পদ্ধতিতে নিয়োগপ্রাপ্তরা চাকরির শেষ ভাগে এসে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য হই-হট্টগোল করেন, এমনকি আন্দোলন-সংগ্রামও করেন। তারা তখন হয়ে ওঠেন সীমাহীন বেপরোয়া। এতে করে প্রতিষ্ঠানসমূহে যেমন বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তেমনি সরকার হয় বিব্রত।

এমন প্রেক্ষাপটে আউটসোর্সিং পদ্ধতি পরিহার করে অন্য কোনো পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। আর এই পরামর্শে রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ। কর্মচারীদের আন্দোলনে ত্যক্তবিরক্ত কোনো কোনো সংস্থার ভাবসাব এমন, যেন তারা এ ধরনের সরকারি সিদ্ধান্তের জন্য উন্মুখ হয়ে ছিল। যেমন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের জন্য লোকবল নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়লেও তারা আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে ইতিমধ্যে সরে এসেছে। এর বদলে চাহিদানুযায়ী ২৫৩ জনের নিয়োগ বাদ দিয়ে তারা মন্ত্রণালয়ের অর্গানোগ্রামভুক্ত নিজস্ব জনবল দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এমনকি তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শুধু এই প্রকল্পই নয়, ভবিষ্যতে তাদের কোনো প্রকল্পেই আউটসোর্সিং থাকবে না। জরুরি প্রয়োজনে শুধু কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে। কাজ শেষ, তাদের চাকরিও শেষ।

এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পাদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. তোফাজ্জল হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আউটসোর্সিং নানা জটিলতা তৈরি করে। এই পদ্ধতিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের মিথ্যে আশ্বাস দেওয়া হয়। বলা হয়, তাদের চাকরি প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই রাজস্ব খাতে চলে যাবে। এমন মিথ্যা আশ্বাসে তারা অন্য প্রতিষ্ঠানে চেষ্টা না করে নিয়োগকৃত প্রকল্পেই তাদের চাকরির বয়স পার করে ফেলেন।

প্রকল্পের মেয়াদ শেষে তাদের ভুল ভাঙে তখন তাদের আর কোথাও যাওয়ার সুযোগ থাকে না। আমরা এই অমানবিকতার ঘোর বিরোধী। এমনিতেই আমাদের প্রচুর পদ শূন্য আছে। কমপক্ষে ৩০ শতাংশ পদ খালি। তার ব্যক্তিগত অভিমত, এসব শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হলে কোনো সংকট থাকে না। তবে যেসব পদ নিতান্তই কারিগরি, সেগুলোতে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) প্রচুর প্রকল্প। তা ছাড়া প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পের কোনোটির মেয়াদ দুই বছর, কোনোটির চার বছর, আবার কোনোটির পাঁচ বছর। সাধারণত এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানটি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ দিয়ে থাকে। এর জন্য তাদের একটি পৃথক বিভাগও রয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এখন তারা কোন পথে যাবে এই প্রশ্নের জবাবে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। আমাদের মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত এলে আমরা ভাবব কী করা যায়।’

আরবি/জেডআর

Link copied!