পুলিশকে পেশাদার, জনবান্ধব, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, মানবিক ও আধুনিক বাহিনীতে পরিণত করতে ব্যাপক সংস্কারের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে ১২টি সভা ও অংশীজনদের সঙ্গে চারটি বৈঠক করেছে ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’। বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ করে খসড়া প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। স্বাধীন ‘জাতীয় পুলিশ কমিশন’ গঠনসহ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সংস্কার কমিশনের কাছে প্রায় অর্ধশত প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকেও একটি কমিটির মাধ্যমে বাস্তবসন্মত নানা প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে জনমত জরিপেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মতামত তথা প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া অনেকে ব্যক্তিগতভাবে লিখিত নানা ধরনের প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। এভাবে দুই শতাধিক প্রস্তাব ‘পুলিশ সংস্কার কমিশনে’ জমা পড়েছে। সব পক্ষের প্রস্তাবনা যাচাই-বাছাই চলছে।
আগামী মাসে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
কমিশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশ সদর দপ্তরসহ অংশীজন ও বিএনপির প্রস্তাব বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে সব পক্ষের মতামতে ১৮৬১ সালের পুলিশের কিছু আইন ও বিধি সংশোধন, মব (জনরোষ) নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগ পদ্ধতি পরিবর্তন, ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮ এর বেশকিছু ধারায় সংশোধন, পুলিশ ভেরিফিকেশনে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখা, পুলিশের জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, পেশাদারি দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ আরও কিছু প্রস্তাব জোরালোভাবে এসেছে।
সূত্র বলছে, পুলিশ সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে স্বল্প সময়ে বাস্তবায়নযোগ্য কিছু বিষয় থাকছে। কিছু বিষয় সংস্কারে দীর্ঘ সময় লাগবে।
অতীতের সরকারগুলোর আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে তারা পুলিশ বাহিনীকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম ও খুনসহ রাজনৈতিক নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ শাসনামলে দেশে-বিদেশে এ অভিযোগ তীব্রভাবে ওঠে। একশ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক লাঠিয়াল হিসেবে পুলিশ সদস্যদের ব্যবহার করার ঘটনায় মারাত্মক ইমেজসংকটে পড়ে এই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নির্বিচারে অস্ত্র ব্যবহারের কারণে অতীতের সব সমালোচনাকে ছাড়িয়ে যায় বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা।
তাদের মতে, এ কারণে গণঅভ্যুত্থানের সময় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পাশাপাশি পুলিশও জনরোষে পরে। বাহিনীর প্রায় অর্ধশত সদস্যের প্রাণহানিসহ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় অনেক পুলিশ স্থাপনা। চরম বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। অতীত অভিজ্ঞতা ও ভয়াবহ পরিস্থিতির পর দেশের বিভিন্ন সচেতন মহলসহ পুলিশের ভেতর থেকেও বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সংস্কারের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে।
এমন বাস্তবতায় শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গেল ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশ সংস্কারে কমিশন গঠনের কথা জানানো হয়।
জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনকে এই কমিশনের প্রধান করা হয়। তার নেতৃত্বে গত ৩ অক্টোবর ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ গঠন করা হয়।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইকবাল, সাবেক বিভাগীয় কমিশনার ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ সাজ্জাদ আলী, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মো. গোলাম রসুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, মানবাধিকারকর্মী এ এস এম নাসিরউদ্দিন এলান ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি। ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন প্রস্তুত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য ও মানবাধিকার কর্মী এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান বলেন, তারা ইতোমধ্যে ১২টি সভা করেছেন। অংশীজনদের সঙ্গে আরও ৪টি বৈঠক হয়েছে। দেড়শ বছরের পুরোনো আইন সময়োপযোগী করা হবে। ফৌজদারি কার্যবিধির কিছু ধারা পরিবর্তনের বিষয়ে যাচাই হয়েছে।
তিনি জানান, পুলিশের কিছু আইন ও বিধি সংশোধনের প্রস্তাব এসেছে যেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া কয়েকটি প্রক্রিয়া সহজ করে তোলার জন্য যথাযথ প্রস্তাব করা হবে। এ ছাড়া মব নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগ পদ্ধতি পরিবর্তন করার প্রস্তাব নিয়ে কাজ চলছে। তবে কোনো কিছু এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এদিকে স্বাধীন জাতীয় পুলিশ কমিশন গঠনসহ পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও প্রায় অর্ধশত প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত পুলিশ সংস্কার কমিশনে এসব প্রস্তাবনা বা সুপারিশ চলতি মাসের ১০ তারিখে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পুলিশ বাহিনী ভেতর থেকে দেওয়া প্রস্তাবে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি আইনি কাঠামো সংস্কার, পুলিশের পেশাদারি দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, আধুনিক ও যুগোপযোগী করা ও পুলিশের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ কল্যাণসংক্রান্ত কার্যক্রমের কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের (পিআরবি) প্রয়োজনীয় সংশোধন করার কথা উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনাও হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের পুলিশ সংস্কার কমিটির সদস্যসচিব ও অতিরিক্ত ডিআইজি (ইন্সপেকশন) মো. জালাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, এটা নিয়ে জাতীয় যে সংস্কার কমিশনটা আছে তারা কাজ করছে। আমরা যেহেতু স্টেকহোল্ডার (অংশীজন), তাই আমাদের প্রত্যাশার বিষয়গুলো পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। কমিশনের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিকভাবে বৈঠক হয়েছে। আমরা বিষয়গুলো শেয়ার করেছি। আমাদের প্রত্যাশাগুলো তাদের জানিয়েছি। সব মিলিয়ে সংস্কারের কাজ চলমান।
ওয়েবসাইটে প্রশ্নমালা দিয়ে জনমত গ্রহণ: ইতোমধ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশনের ওয়েবসাইটে ‘কেমন পুলিশ চাই’ শীর্ষক জনমত জরিপ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মতামত বা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
কমিশন সূত্র বলছে, গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে। সাধারণ মানুষ যেভাবে পুলিশকে দেখতে চান তা মতামত দিয়েছেন। ইতিবাচক হিসেবে প্রত্যেকটি মতামত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গত ৩১ অক্টোবর জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে কমিশনের পক্ষ থেকে ওয়েবসাইটে একটি প্রশ্নমালা দিয়ে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত গোপন জনমত গ্রহণ করা হয়। পরে যাচাই করে দেখা হয়।
‘কেমন পুলিশ চাই’ এ প্রশ্নমালা: ওয়েবসাইটের প্রশ্নমালায় ১৭টি প্রশ্নের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মতামত চাওয়া হয়। প্রথম প্রশ্ন ছিল পুলিশকে ‘জনবান্ধব, জবাবদিহিমূলক, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, দক্ষ ও আধুনিক, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নিরপেক্ষ ও আইনের শাসনে অনুগত’ চায় কি না জনগণ? দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংস্কার খুব জরুরি মনে করেন? একাধিক জবাব দিয়ে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়। এরপরও কারও বক্তব্য থাকলে দুই বাক্যে জানাতে বলা হয়। তৃতীয় প্রশ্নটি ছিল, গত সরকারের সময়ে গায়েবি ও ভুয়া মামলা দিয়ে বিগত কর্তৃত্ববাদী সরকারবিরোধী দলমত দমন করে আইনের অপব্যবহারের অপসংস্কৃতি চালু করেছিল। আইনের অপব্যবহার রোধে মামলা রুজুর ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর সংশ্লিষ্ট ধারাটির সংস্কার চান কি না? ‘হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’-তে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়। উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে কেমন সংস্কার চান?
প্রশ্নমালায় বলা হয়, পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল মোকাবিলা ও বিরোধী দলমত দমনে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
মানবাধিকার সুরক্ষায় চাওয়া মতামতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের নির্দেশাবলি যথাযথ অনুসরণ, মানবাধিকার বিষয়ে পুলিশকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা এবং বার্ষিক কর্মমূল্যায়ন প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের মানবাধিকার বিষয়ে অর্জিত স্কোর ‘পুরস্কার বা তিরস্কারে’ অন্তর্ভুক্ত করা। অন্য বক্তব্য থাকলে দিতে বলা হয়। এ ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তাঘাটে যান চলাচলে বিঘ্ন না ঘটিয়ে সভা-সমাবেশ আয়োজন, ৫৪ ধারা, পুলিশ হেফাজতে বা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ১৬৭ ধারার সংস্কার, পরোয়ানা কিংবা সার্চ ওয়ারেন্ট না থাকা, ইউনিফর্ম ছাড়া গৃহতল্লাশি, কখনো আটক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে স্বীকার না করা, সাংবিধানিক কাঠামোর আওতায় একটি স্বাধীন ‘পুলিশ ন্যায়পাল’ প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয়ে প্রশ্নের মাধ্যমে জনমত চাওয়া হয়।
বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বিএনপির প্রস্তাব: পুলিশ বাহিনীর সংস্কারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) দেওয়া প্রস্তাব বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে বলে জানা গেছে। পুলিশের সাবেক দুজন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও একজন অবসরপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রসচিবসহ ৬ সদস্যের কমিটি দলটির পক্ষ থেকে পুলিশ সংস্কারে যুগোপযোগী নানা প্রস্তাবনা প্রস্তুত করে। গত ১৪ নভেম্বর কমিটির সদস্যরা সেটি বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জমা দেন। সেই প্রস্তাবনা গত সপ্তাহে সংস্কার কমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মু্ক্তিযোদ্ধা হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে এই কমিটির সদস্যরা হলেন সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব এস এম জহরুল ইসলাম, সাবেক আইজিপি মো. আব্দুল কাইয়ুম, সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও সাবেক এসপি আনসার উদ্দিন খান পাঠান।
কমিশন সূত্র জানায়, এই কমিটিতে পুলিশের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকায় তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেওয়া প্রস্তাব বা সুপারিশগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেতে পারে। ‘জনমুখী পুলিশ সেবা নিশ্চিতকল্পে পুলিশ কমিশন গঠন ও অন্যান্য সংস্কারের প্রস্তাব’ শীর্ষক সাম্প্রতিক এক সেমিনারে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশের ভেতর থেকেই এখন একটি কমিশন গঠনের দাবি উঠেছে। বিগত সরকারের সময়ে পুলিশকে ‘দানবীয়’ করা হয়েছে। পুলিশকে মানবিক করতে হলে স্বাধীন পুলিশ কমিশন করতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে পুলিশে পদায়নের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেনের কথা শোনা গেছে। একজন পুলিশ সুপার নিয়োগে দুই কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এমনকি ঢাকায় একজন ওসির পদায়নেও এক কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার পরিবর্তন করতে হবে, স্বচ্ছতা আনতে হবে যোগ করেন তিনি।
জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুর মোহাম্মদ বলেন, অনেক বছর আগ থেকেই শুনে আসছি পুলিশকে ঢেলে সাজাতে হবে। কখনো ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ আমরা দেখিনি। সরকার পরিবর্তন হয়েছে। পুলিশে খরচ বেড়েছে, সাময়িক সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে, পোশাক, বাড়িঘর, অফিস, গাড়ির পরিবর্তন আসছে পুলিশে। কিন্তু পুলিশের মগজে পরিবর্তন আসেনি। সাবেক আইজিপি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এইবার এই পুলিশ সংস্কারে হাত দিয়েছে। আমরা তাই আশাবাদী। রাজনৈতিক কমিটমেন্ট আগে জরুরি। যেটা পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের ওপর নির্ভর করবে।
এ প্রসঙ্গে আরেক সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, আমি অন্যান্য নাগরিকের মতোই জনবান্ধব পুলিশ চাই। যেখানে পরিবর্তন আসবে বিজ্ঞানসম্মত। যেখানে জনগণের প্রতি ও জনমুখী সেন্টিমেন্ট বোঝার মানসিকতাসম্পন্ন পুলিশ।
মাত্রাতিরিক্ত শক্তিপ্রয়োগ করবে না এমন পুলিশ চাই, যেখানে পুলিশ থাকবে পুরোপুরি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। তিনি আরও বলেন, আইন করে কিছু কাজ করা গেলেও পরিপূর্ণ পেশাদার পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না। এটা মূলত দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তা ছাড়া সার্বিক প্রেক্ষাপটে পেশাদার ও স্বাধীন পুলিশ বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মূল দায়িত্বটা রাজনীতিবিদদের।
আপনার মতামত লিখুন :