গণপরিবহন সেক্টরের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মেকানিক্যাল সহকারী রাকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গাড়ির জাল কাগজ বানানো, মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে মালিকানা পরিবর্তনসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে। বিআরটিএর এই অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকেও অভিযোগ রয়েছে। দুদক সেটা অনুসন্ধান করেছে। অবশ্য এসব অভিযোগ রাকিবুল অস্বীকার করেছেন।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, জাল কাগজ তৈরি করে গাড়ির মালিক পরিবর্তন করার মূল কারিগর হচ্ছেন এই রাকিবুল হাসান। তার অবৈধ ক্ষমতার দাপটে প্রতিনিয়ত শত শত গাড়ির মালিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আর এতে করে প্রতিনিয়ত ঘুষ-দুর্নীতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে অল্প সময়ে কোটিপতি হয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগের পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। যার কারণ তিনি সাবেক বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত।
সম্প্রতি রাকিবুলের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মিল্ক ভিটা কো অপারেটিভের ‘ঢাকা মেট্রো-চ-৫১-২০০৬’-নং গাড়ির জাল কাগজ বানিয়ে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে অবৈধভাবে মালিকানা পবিরর্তন করেছেন রাকিবুল।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে রাকিবুলের এসব অপকর্মের আশ্রয়দাতা হচ্ছেন বিআরটিএর সহকারী পরিচালক শেখ মো. রাজিবুল ইসলাম। যিনি বর্তমানে মালিকানা বদলি শাখায় কর্মরত। সেই সঙ্গে রাজিবুল বর্তমান চেয়ারম্যান গৌতম চন্দ্র পালের ডান হাত বলেও পরিচিত।
অভিযোগ রয়েছে, রাজিবুলের আশ্রয়ে রাকিবুল বিআরটিএ অফিসের ১০-১৫ সদস্য নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাকিবুলের মিরপুরে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট এবং উত্তরায় কয়েকটি ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে। যার প্রতিটি অবৈধভাবে গড়ে তুলেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বর্তমানে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলেও জানা গেছে।
রাকিবুলের এমন কর্মকাণ্ডে বিআরটিএর অন্যান্য কর্মকর্তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিএর একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাকিবুলকে অতি দ্রুত প্রত্যাহার করা উচিত। সেই সঙ্গে তার সমস্ত অবৈধ কর্মকাণ্ড এবং তার অবৈধ সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করা খুবই জরুরি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাকিবুল হাসান বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সেগুলো সিস্টেম করে মীমাংসা করে ফেলেছি। এখন আর তেমন কোনো অভিযোগ নেই।
আপনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ আছে সেগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো অনিয়ম নেই। সম্পদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার যা কিছু আছে সবই বৈধ। তা ছাড়া বিআরটিএর মেকানিক্যাল সহকারী পদে কর্ম করেই এসব সম্পদের মালিক হয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, মিরপুরে কর্মরত বিআরটিএর মেকানিক্যাল সহকারী রাকিবুল হাসানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে গাড়ির জাল কাগজ বানানো, মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে মালিকানা পরিবর্তন করা, অবৈধ্য সম্পদ অর্জনসহ বেশকিছু অভিযোগ এসেছে, সেগুলো নিয়ে দুদক কাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :