ঢাকা রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

‘আয়নাঘর’ ও গুমকাণ্ড প্রকাশে তোলপাড়

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ১০:৪৪ এএম

‘আয়নাঘর’ ও গুমকাণ্ড প্রকাশে তোলপাড়

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

আরো একটি বছর শেষ হতে চলল। ২০২৪ সাল ছিল ঘটনাবহুল। কালেন্ডারের পাতা থেকে বিদায় নিতে যাওয়া ২৪ সাল ছিল জুলাই আন্দোলনের বছর। ছাত্র-জনতার জনরোষে দেড় দশকের স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। শেখ হাসিনার আমল গুম-খুনের ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে আলোচনা-সমালোচনাসহ দেশ-বিদেশে বিতর্ক সৃষ্টি করে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে বিরোধী রাজনীতিক ও ভিন্নমত দমন-পীড়ন, নির্যাতন, অপহরণ, গুম ও খুনের পাশাপাশি ‘আয়নাঘর’-এ বন্দি রাখতেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর চলতি বছর আবারও নতুন করে আলোচনায় চলে আসে ‘আয়নাঘর’। ৫ আগস্টের পর একাধিক গুম হওয়া ব্যক্তি আয়নাঘরের বন্দিশালা থেকে বেরিয়ে আসেন। বিদেশি গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কয়েক বছর ধরে চলা আয়নাঘরে বন্দি রাখা ও গুম-খুন করে মানবধিকার লঙ্ঘন অভিযোগের প্রমাণ পায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’ সংস্থা।

শেখ হাসিনার পতনের পর ‘আয়নাঘর’ নতুন করে আবার আলোচনায় উঠে এসেছে। সেখান থেকে এরই মধ্যে একাধিক বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত সেই কুঠুরিতে বছরের পর বছর মানুষকে আটকে রেখে ভয়ংকর নিষ্ঠুর নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা আয়নাঘর থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মিডিয়ায় ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন।

রাজধানীর কচুক্ষেতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম হওয়া ব্যক্তিদের বন্দি করে রাখা হতো।

বাংলাদেশের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) আয়নাঘরে অসংখ্য ব্যক্তিকে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন করা হতো। রাতভর তাদের ঘুমাতে দেওয়া হতো না। জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলকে ডেভেলপ করে আয়নাঘর বানানো হয়। প্রচুর লোক সেখানে আটকে রাখা হতো। ফিরে আসারা এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ভুক্তোভোগীরা বলছেন, সেখানে নির্যাতন চালানো হয়েছে। সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের বাহিনী। সেনাবাহিনী স্বাধীনতার প্রতীক। সেনাবাহিনীর ওপর বন্দুক রেখে ডিজিএফআইয়ের অসৎ কিছু কর্মকর্তা রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে বদনামে ফেলতে পারেন না। এদের চিহ্নিত করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া আয়নাঘরে যারা বন্দি আছেন, তাদের মুক্তি দিতে হবে।আমরা চাই শান্তি ও শৃঙ্খলা। 

শেখ হাসিনার আমলে বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়ে গেছেন। তারা কোথায় তাদের কোনো খোঁজ নেই। এমনকি সেনাবাহিনীর লোকজন রয়েছেন ওই তালিকায়। আয়নাঘর আসলে গোয়েন্দাদের একটি গোপন বন্দিশালা বা ডিটেনশন ক্যাম্প। বিদেশি মানবধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য মতে, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ১৫টি ব্যাটালিয়নের প্রতিটিতেই রয়েছে গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘর। র‌্যাবের হেডকোয়ার্টারসহ ঢাকায় ৫টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। এ ছাড়া বাকি ১০টি রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে অবস্থিত। ডিজিএফআইয়ের কচুক্ষেতের সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক আয়নাঘর রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাউন্টার টেরোরিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (সিটিআইবি) দ্বারা পরিচালিত আয়নাঘরের কক্ষসংখ্যা ১৬টি। যেখানে একসঙ্গে ৩০ জন বন্দি রাখার সক্ষমতা রয়েছে।

ভুক্তভোগীদের তথ্য মতে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বিরুদ্ধ মত সহ্য করতে পারতেন না। আর সেই কারণে রাজনৈতিক বন্দিদের জন্য তৈরি করেছিলেন আয়নাঘর। যা ছিল রাজনৈতিক বন্দিদের কাছে ত্রাস বা বিভীষিকাময়। হাসিনার তৈরি বিরুদ্ধ রাজনৈতিক কর্মীদের গুমঘর।

প্রতিবাদীদের কণ্ঠ রোধ করার একটি উপায়। সারা দেশে ডিজিএফআইয়ের ২৩টি গোপন আটক কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি রয়েছে ঢাকায়।

২০২৪ সালের হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার বছর ২০০৯ সাল থেকে তার পতন পর্যন্ত বাংলাদেশে ৬০০টিরও বেশি গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী আয়নাঘর থেকে খুব কম বন্দি মুক্তি পেয়েছে। তবে কিছু বন্দিকে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্তি দেওয়া হয়। অনেকেই আবার কথিত ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন। দেশে এ জাতীয় ঘটনার তদন্ত প্রায় হয়নি বললেই চলে।

আয়নাঘরে রাখা অনেকেই দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা যান। তারপর লাশ সরিয়ে দেওয়া হয়। যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের খাতা-কলমে কোনো তথ্য রাখা হয় না। আর যারা হাসিনার আস্থাভাজন ছিলেন, তারাই আয়নাঘরের দায়িত্ব পেতেন।

আয়নাঘরের বন্দিদের সঙ্গে তাদের পরিবারের সদস্যদের দেখা করা বা যোগাযোগের কোনো উপায় ছিল না।

বিভিন্ন সময়ে র‌্যাবে দায়িত্ব পালন করা একাধিক কর্মকর্তা র‌্যাবের আয়নাঘরের তথ্য জানিয়েছেন।

তাদের মতে, র‌্যাবের আয়নাঘরেও নিরপরাধ ও গুমের শিকার অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন। গুম হওয়া ব্যক্তিরা যখন বছরের পর বছর গোপন কারাগারে বন্দি ছিলেন, তখন হাসিনা ও তার মন্ত্রী-এমপিরা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছিলেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিখোঁজ থাকা তিনজন ফিরে এসেছেন, যাদের দীর্ঘদিন কোনো হদিস ছিল না। এরপরই আবার আলোচনায় আসে ‘আয়নাঘর’। এর আগেই এই ‘আয়নাঘর’ আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এটা বাস্তবে আছে কি না, তা নিয়ে তখন অনেকেরই সংশয় ছিল। কিন্তু ফিরে আসা ব্যক্তিরা গণমাধ্যমে মুখ খোলার পর জানা গেল, বাস্তবে ‘আয়নাঘর’ আছে, যেখানে গুম করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর এখন এসব ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে মাঠে নেমেছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। এর মধ্যে পুলিশ-র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের অন্তত ১৫ জন শীর্ষ কর্তার নাম এসেছে। এ তালিকা আরও বাড়তে পারে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। এই ১৫ কর্মকর্তার মধ্যে কেউ এখনো চাকরিতে আছেন, কেউ অবসরে গেছেন। কয়েকজন আছেন দেশের বাইরে। এর মধ্যে ‘আয়নাঘর’কাণ্ডে সমালোচিত সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে তাকে বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি নিজেও আট দিন আয়নাঘরে ছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, ‘আয়নাঘর’ মূলত তৈরি হয়েছে ২০০৯ সালে। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলের নেতাদের অপহরণ করে বছরের পর বছর ধরে ‘আয়নাঘরে’ রাখত। আবার কাউকে মেরেও ফেলা হয়েছে। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষকর্তারা অবহিত ছিলেন। এসব কর্মকাণ্ড করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা পদোন্নতি পাওয়া থেকে শুরু করে পুরস্কৃতও হয়েছেন।

গোয়েন্দাদের জেরার মুখে জিয়াউল আহসানও তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম বলেছেন। জিয়াউল আহসান দীর্ঘদিন র‌্যাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সাল থেকে এনটিএমসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাব ও বাহিনীটির কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ভারতীয় প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসিনার শাসনকালে ২০০৯ থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আয়নাঘরে মোট ৬০৫ জনকে গোপনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে নিখোঁজ হন ৪০২ জন মানুষ। এ তথ্যটি প্রকাশ করে ঢাকাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। ২০১৪ থেকে জুলাই ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৩৪৪ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হন। তাদের মধ্যে ৪০ জন ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, ৬৬ জনকে সরকারি হেফাজতে গ্রেপ্তার অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং আইন ও সালিস কেন্দ্রের তথ্য মতে, ২০৩ জন এখনো গুম রয়েছেন। যারা দীর্ঘদিন গুম থাকার পর ফিরে আসেন, তারা গুমের ব্যাপারে মৌনতা অবলম্বন করেন। ধারণা করা হয়, এসব মানুষদের গুম করে রাখা হয় আয়নাঘরে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ এসব ঘটনার জন্য জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার রক্ষাকারী সংস্থা, যেমন-হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের নিন্দা জানায়। এ সময় গুম হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যরা মায়ের ডাক নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন। এখানে যাদের পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে সরকারি সংস্থা কর্তৃক বলপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন, সে ঘটনাগুলোকে সামনে আনার জন্য এ সংগঠনের সৃষ্টি হয়।

দীর্ঘ ৮ বছর পর গোপন বন্দিশালা আয়নাঘর থেকে মুক্ত হয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং জামায়াতে ইসলামী নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাসেম (আরমান)। হাসিনার পতনের পর চোখ বাঁধা অবস্থায় তাদের রাস্তায় ফেলে যাওয়া হয়। অন্যদিকে, দীর্ঘ পাঁচ বছর তিন মাস পর ডিজিএফআই কথিত আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেয়েছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা। আয়নাঘরে যারা বন্দি থেকেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ মোবাশার হাসান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান, ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায়।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট) এম ইলিয়াস আলী বনানী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। ২০১০ সালের ২৫ জুন নিখোঁজ হন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর চৌধুরী আলম। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে ৭০৮ জন অপহরণের পর ‘নিখোঁজ’ হয়েছেন বলে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার বলেছে। তার মধ্যে ২০০৯ সালে ৩, ২০১০ সালে ১৯, ২০১১ সালে ৩২, ২০১২ সালে ২৭, ২০১৩ সালে ৫৪, ২০১৪ সালে ৪১, ২০১৫ সালে ৬৯, ২০১৬ সালে ৯৭, ২০১৭ সালে ৯৫, ২০১৮ সালে ৯৮, ২০১৯ সালে ৪৩, ২০২০ সালে ৩১, ২০২১ সালে ২৩, ২০২২ সালে ২১, ২০২৩ সালে ৫৪ ও ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ১০ জন নিখোঁজ হয়েছেন।

তাদের নিখোঁজের ঘটনায় র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি, আনসার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, সিআইডি, ডিজিএফআইসহ অন্য সংস্থা জড়িত।

জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে ‘গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’ গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনে অভিযোগ দাখিলের কার্যক্রম। গত ৩ অক্টোবর গুম সংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ডিজিএফআইয়ের আয়নাঘর ও সিটিটিসি ইন্টারোগেশন সেল পরিদর্শন করেছে সংস্থাটি।

আলোচিত বন্দিশালা আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের মিল পেয়েছে। তবে বিভিন্ন স্থান পরিবর্তনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণগুলো মুছে ফেলার অভিযোগ তুলেছে সংস্থাটি। সংস্থায় শত শত ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ দিয়েছে। যার বেশির ভাগই র‌্যাবের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ডিবি, সিটিটিসি, ডিজিএফআই; এসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে।

২০২২ সালের আগস্ট ‘আয়নাঘর’ শব্দটি নেত্র নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিষয়টি জাতির সামনে আসে। রাষ্ট্রীয়ভাবে গুমের শিকার রাজনৈতিক কর্মী, সংগঠক ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সদর দপ্তরের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। গুমের উৎপত্তি হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে জার্মানির নাৎসি বাহিনী দ্বারা। খোদ জার্মানিতে গুম হওয়া থেকে বাঁচতে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের মতো ব্যক্তিও জার্মানি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেন।

কোনো রাষ্ট্রীয় বাহিনী বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মদদে নিরীহ ব্যক্তি বা অপরাধীকে তাদের ধরে নিয়ে গোপন স্থানে আটকে রাখা, পরিবারের কাছে অস্বীকার করা কিংবা মেরে ফেলা এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!