কমিশনের বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা তুলে দিতেন মশিউর

জঙ্গি নাটক, জাল নোটসহ নানা অপকর্মের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মশিউর রহমান। শুধুই কি তাই, নাম ফোটাতে মিডিয়া ব্যবহার ও পরিচিত আসামিদের ধরে নিজেই ছাড়িয়ে আনতেন। মানুষের সাথে করতেন অভিনব প্রতারণা। ছাত্র আন্দোলনসংশ্লিষ্ট একাধিক মামলায় গত বৃহস্পতিবার মশিউর রহমানকে আটক করা হয়। এরপরই বেরিয়ে আসে তার অপকর্মের নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।

সূত্র জানায়, কমিশনের বিনিময়ে মশিউর রহমান বড় বড় ব্যবসায়ীদের পাওনা টাকা তুলে দিতেন। পুলিশের অত্যন্ত ট্যালেন্টেড অফিসার হিসেবে পরিচিত এই মশিউর অবৈধ সম্পদ অর্জনের লোভ সামলাতে পারেননি। অধিকাংশ সময় পুলিশ পরিচয়ের থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থিত অফিসার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন।

সূত্র আরও জানায়, অসংখ্য মানুষের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করেছেন এই মশিউর। তাছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের সময় গুম খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সে একটি আয়না ঘরের প্রস্তাবক ও দায়িত্বেও ছিলেন।

একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর অভিযোগ, মশিউর প্রায় সময় সাংবাদিকদের চোখের সামনে মানুষকে অত্যাচার করতেন এবং বিএনপি জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি করতেন। কিছু কিছু সাংবাদিক মশিউরের অনুমতি ছাড়া গ্রেপ্তারের সংবাদ প্রচার করলেই, সেই সাংবাদিককে ফোন করে হুমকি-ধামকি ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতেন। নিজেকে বড় ক্ষমতাধর ব্যক্তি ভাবতেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর একাধিক মামলায় অভিযুক্ত হন মশিউর। এরপর গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদের (৪৫) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত মশিউর রহমানের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন এ আদেশ দেন।