ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

এলজিইডির অপারেটর বাকেরের অঢেল সম্পদ

সুলতান মেহেদী

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৪, ১২:২১ পিএম

এলজিইডির অপারেটর বাকেরের অঢেল  সম্পদ

রাজধানীর আগারগাঁও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ের একজন কম্পিউটার অপারেটর ও স্টেনো পদে চাকরি করে অবৈধভাবে ঘুষ, দুর্নীতি, তদবির ও বদলির বাণিজ্য, সাবেক সরকারের চামচামি করে কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

এলজিইডির অফিসের সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটে কর্মরত মো. বাকের আহমেদ হলেন সেই ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি (অভিযোগকারী) তার বিরুদ্ধে গত ১৯ সেপ্টেম্বরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদুক) কার্যালয়ে লিখিতভাবে ঘুষ, বদলি ও তদবির বাণিজ্য সম্পর্কে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। 

অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কম্পিউটার অপারেটর (বাকের) দীর্ঘদিন ধরে কৌশলে মানুষদের কাছে বিভিন্নভাবে পরিচিত হন। পরিচয়ের সুবাদে তিনি এলজিইডি অফিসের সড়ক ও সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিটে চাকরি করার সুবিধার্থে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলির বাণিজ্য, তদবির, ঘুষ ও দুর্নীতি করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, তিনি ওই অফিসে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে চামচামি করে মানুষকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে এমনকি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নাম ভাঙিয়ে ও এলজিইডির সাবেক অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম বাবুর ক্ষমতা ব্যবহার করে এলজিইডির বিভিন্ন প্রকল্পের পরিচালকদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে অবৈধভাবে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন। এভাবেই তিনি অটেল সম্পদের মালিক হয়ে যান।

এ ছাড়া তিনি আগারগাঁও এলাকার আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এসব দুর্নীতি, ঘুষ, বদলি বাণিজ্য ও তদবির বাণিজ্য করতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালক এবং অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়েই মূলত এসব কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন বাকের আহমেদ। তিনি বর্তমানে পশ্চিম আগারগাঁও শাপলা হাউজিংয়ের ২১৩/৯/এ নম্বর বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। এলজিইডির সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করে আরও জানান, একজন কম্পিউটার অপারেটর ও স্টেনো পদে চাকরি করে এত অর্থসম্পদের মালিক কীভাবে হলো। তিনি এত ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী হয়ে মানুষকে মানুষ মনে করতেন না। অবৈধভাবে অর্থ ও সম্পদের পাহাড় গড়ে তিনি হয়ে গেছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ।

এমনকি অবৈধভাবে মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার অর্থসম্পদ গড়ে তুলেছেন তিনি। দুদকে লিখিত অভিযোগ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগে আরও জানা যায়, তার ও তার পরিবারের নামে-বেনামে সম্পদের বিবরণগুলো হলো, পশ্চিম আগারগাঁওয়ে শাপলা হাউজিংয়ের ২১৩/৯/এ নম্বর বাড়িটি তিনি কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে পঞ্চম তলা ভবন নির্মাণ করেছেন।

এ ছাড়া মোহাম্মদপুর এলাকায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে গৃহায়ণের কাছ থেকে একটি প্লট বাগিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি মোহাম্মদপুর সিটি, উত্তরা ও সাভারসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে জমি ক্রয় করেন।

এ বিষয়ে জানতে বাকের আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পশ্চিম আগারগাঁওয়ে ওই বাড়ি ছাড়া আমার আর কিছু নেই। আপনাদেরকে আর কিছু বলতে পারব না। আর অভিযোগকারীরা জানান, বাকের আহমেদ ও তার পরিবারের বিষয়টি তদন্ত করলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।

আরবি/জেআই

Link copied!