ঢাকা সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

আসামি তবুও চাকরিতে পুলিশ কর্মকর্তারা

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২৪, ১২:২২ এএম

আসামি তবুও চাকরিতে পুলিশ কর্মকর্তারা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

তিন মাস পেরিয়ে চার মাসে পড়েছে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের। এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা, যাদের নির্দেশে ঝড়েছে রক্ত, প্রাণ হারিয়েছেন শত শত ছাত্র-জনতা। ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুগত ও সুবিধাভোগী এসব পুলিশ কর্মকর্তা জুলাই-আগস্টে পুলিশ সদর দপ্তরের বিশেষ মনিটরিং সেল এবং স্ব-স্ব ইউনিটের দায়িত্বকালে রাজধানীসহ সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়ন ও নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। কেউ কেউ অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞে জড়িত। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে কিংবা কারাগারে রয়েছেন। তবে প্রায় দুই শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ ফৌজদারি মামলা হয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায়। তারপরও তারা চাকরিতে বহাল থাকায় খোদ পুলিশের মধ্যেই বিরাজ করছে ক্ষোভ।

জানা গেছে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের আমলে বিরোধী দল বা মতের দমন-পীড়ন, নির্যাতন, গুম-খুনে জড়িত এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী অসাধু পুলিশ সদস্যরা এখনো বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার, রেঞ্জ পুলিশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ও অন্যান্য মেট্রোপলিটনগুলোতে বিভিন্ন পদ, পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), পুলিশ সদর দপ্তরের বিভিন্ন শাখায় কর্মরত। আওয়ামী লীগের আমলে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তারা এখনো বঞ্চিত হচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ দিয়ে লোভনীয় পদ কিনছেন গত দেড় দশকে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল কালো টাকার মালিক পুলিশ সদস্যরা। পট পরিবর্তনে দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তারা ভোল পাল্টে ফেলার চেষ্টায় রয়েছেন।

সহায়ক রাজনৈতিক আনুকূল্য পেতে মরিয়া হয়ে পড়ছেন, ধরনা দিচ্ছেন বিভিন্ন নেতাদের কাছে। অপকর্ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ সম্পদ গোপনে নানা ফন্দি আটতে ব্যস্ত এরা। গ্রেপ্তার এড়াতে এবং দুদকসহ বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার হাত থেকে বাঁচতে কালো টাকার ব্যবহারে মরিয়া হয়ে পড়ছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব মতে, একজন ডিআইজিসহ ১৮৭ জন পুলিশ সদস্য ৫ আগস্টের পর কাজে ফিরেনি। এর বাইরে প্রায় তিন শতাধিক পুলিশ সদস্য বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এর বাইরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে কর্মরত থাকাবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ গত বুধবার রাঙামাটির বেদবুনিয়ায় পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দায়িত্বরত থাকাবস্থায় র‌্যাব-২ এর সাবেক কোম্পানি কমান্ডার (এসপি পদমর্যাদা) মহিউদ্দিন ফারুকীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে রাাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় বিজয় উল্লাস করতে গিয়ে জোবায়ের ওমর খান নিহতের ঘটনায় করা মামলায় দুই দিনের রিমান্ড নিয়েছে পুলিশ। 

একই মামলায় গত বুধবার বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনকে নিজ কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার ঢাকার ডিবি পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমানের আদালত শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে দুই সপ্তাহে ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে কর্মরত থাকাবস্থায় পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার করার ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, মামলার আসামি হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে দোষী পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বর্তমানে পুলিশে কর্মরত সদস্য ২ লাখ ১৩ হাজার। এর মধ্যে সিভিল সদস্য প্রায় ১১ হাজার। আর পোশাকধারী পুলিশ সদস্য সংখ্যা ২ লাখ ২ হাজার। তাদের মধ্যে ক্যাডার পদের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার; বাকিরা নন-ক্যাডার। পুলিশ সদস্যের মধ্যে কনস্টেবল প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার। পুলিশ বাহিনীর ক্যাডার সদস্যদের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপির পদ ২২টি। ডিআইজি পদ ৮৭টি। পুলিশ সুপার ৫৮৬ জন।

২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন, একতরফা ও মধ্যরাতের নির্বাচনে কাজ করা এবং তৎকালীন সময়ের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের অত্যন্ত আস্থাভাজন ২২তম বিসিএস ব্যাচের কর্মকর্তা নাশিয়ান ওয়াজেদকে সম্প্রতি পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অতিরিক্ত ডিআইজি অপারেশনের দায়িত্ব থেকে বদলি করে পুলিশ স্টাফ কলেজে পদায়ন করা হয়েছে। নাশিয়ান ওয়াজেদ ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারি, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া,  ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমানসহ মধ্যরাতের নির্বাচনের পরিকল্পনাকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে এআইজি অপারেশন্সের দায়িত্বে থেকে সারা দেশে পুলিশ ইউনিটসমূহের সমন্বয়ের কাজ করেছেন। ওই সময়ে ডিআইজি অপারেশন্সের দায়িত্ব পালন করা আনোয়ার হোসেনকে ডিআইজি চট্টগ্রাম রেঞ্জ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছিল। তিনি ২০২৪ সালের একতরফা নির্বাচন আয়োজনসহ নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির নয়াপল্টনের সমাবেশ ভণ্ডুলসহ শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অবৈধ আদেশ গোপনে পাঠিয়েছিলেন।

আস্থাভাজনদের সঙ্গে গোপন বৈঠকসহ সরকারবিরোধী আন্দোলনে জড়িতদের গ্রেপ্তার, হয়রানি, গায়েবি মামলা, বিভিন্ন নাশকতার গোপন ফাঁদ তৈরিসহ একতরফা নির্বাচন, মধ্যরাতের নির্বাচন ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের পুলিশি সিন্ডিকেটের অত্যন্ত আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তরে পদায়নসহ নিয়মিত পদোন্নতি নিয়েছেন।

২০১৮ এবং ২০২৪ সালের মধ্যরাতের একতরফা নির্বাচনের সহযোগী হিসেবে কর্মরত পুলিশ সদর দপ্তরে ৩৩ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তাহের, ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম (যিনি বর্তমানে পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা হিসেবে পদায়িত হয়েছে), ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা আব্দুলাহ আল মামুন (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিসহ বর্তমান মিশনে কর্মরত), ২৮ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুপারনিউমারনি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মাহমুদা আফরোজ লাকী বর্তমানে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, ৩৩ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইশরাত জাহান, ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজা আক্তার, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আবু হাসান, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ও বর্তমানে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত মোশাররফ হোসেন, ২৮ ব্যাচের কর্মকর্তা এআইজি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, ৩০ ব্যাচের কর্মকর্তা ফেরদৌসি রহমান, ৩১ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানিয়া সুলতানাসহ (যিনি সম্প্রতি এডিসি ডিএমপি হিসেবে পদায়িত) অন্যান্য কর্মকর্তারা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে তৎকালীন শীর্ষ দলবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের আস্থাভাজন হিসেবে কাজ করেছেন। পুলিশ সদর দপ্তরের গোপনীয় ও এলআইসি শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের প্রায় সব কর্মকর্তা গত ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ শাসনামলের বিরোধীদল দমনের গোপনীয় নির্দেশনা সমন্বয়, গ্রেপ্তার ও ধরপাকড়ের নির্দেশনা তৈরি ও বাস্তবায়ন, বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের গোপন কল রেকর্ড আড়িপাতার কাজে জড়িত ছিলেন।

বুয়েটে ছাত্রলীগের পদধারী ৩০ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহবুবর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ, মোহাম্মদ হাসিনুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে সদর দপ্তরের ডেভেলপমেন্ট শাখায় কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় এখনো কর্মরত। সদর দপ্তরের বদলি ও পদায়ন শাখায় কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাহবুবুল করিম- যিনি ২০১৮ সালে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পরবর্তী র‌্যাংক ব্যাজ পরিধান অনুষ্ঠানে শেখ মুজিবুর রহমানসহ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অত্যন্ত আবেগপ্রবণ বক্তব্য দিয়ে আলোচিত হলেও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দ্রুত জাতীয়তাবাদী ঘরানায় নিজের নাম যুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ পদায়নে সম্পৃক্ত আছেন। ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে যেসব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপাররা বদলি ও পদায়ন শাখায় শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের আস্থাভাজন হিসেবে পদায়িত ছিলেন তারা অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও স্বপদে বহাল থাকায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হয়ে কাজ করা অনেকে এখনো গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ সদর দপ্তর, ডিএমপি, এসবি, সিআইডি, র‌্যাবসহ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে বহাল তবিয়তে কাজ করছেন।

গত ১৫ বছরে বিশেষ করে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনসহ পূর্ববর্তী সময়ে বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি ড. শামসুন্নাহার, ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ উল্লাহ, ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ, বিরোধীদলের আন্দোলন দমন ও নিপীড়নের অন্যতম হোতা ডিএমপির সাবেক যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বহুল আলোচিত বিপ্লব কুমার সরকারের সবচেয়ে আস্থাভাজন কর্মকর্তা ২৪ ব্যাচের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ এহসান সাত্তার, ২৫ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজ রহমান আল মামুন, গত ১৫ বছরে পুলিশ সিন্ডিকেটের হোতাদের সহযোগী এবং নিজেকে প্রতিদিন শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনাসহ গুটিবাজ কর্মকর্তাদের আদর্শের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিতেন ২০ ব্যাচের কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির, ১৮ ব্যাচের কর্মকর্তা কাজী জিয়া উদ্দিন (যিনি সদ্য সাবেক সিইসির ভাই হিসেবে দাপটের সঙ্গে পরিচয় দিতেন, যিনি সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকারের পিএস, ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনের সময় এআইজি অপারেশন্সসহ গত ১৫ বছরে সব আইজিপিদের আস্থাভাজন হিসেবে কর্মরত থেকেছেন এবং বর্তমানে নিজেকে নানারকম বৈষম্যের শিকার দাবি করে পট পরিবর্তনের সঙ্গে একাত্ম করে ফেলেছেন)।

অন্যদিকে অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক (যিনি গত সরকারের সময় নিয়মিত পদোন্নতিসহ গুরুত্বপূর্ণ শাখায় পদায়িত ছিলেন), তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিশেষ আশীর্বাদপুষ্ট ২২ ব্যাচের কর্মকর্তা শাহজাদা মো. আসাদুজ্জামান, ২২ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি ফারুক আহমেদ (যিনি ২০১৮ সালে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারসহ পরবর্তীতে কুমিল্লার পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং তৎকালীন শীর্ষ পুলিশ সিন্ডিকেটের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত) ডিএমপির আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এবং সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনের সময়ে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পিআইও শাখায় কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ এহছান সাত্তারসহ চিহ্নিত কর্মকর্তারা এখনো সদর দপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ শাখায় কর্মরত থেকে ফ্যাসিস্ট সরকারের সিন্ডিকেট পলাতক পুলিশ কর্মকর্তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জেলায় পদায়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকের তৎকালীন সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত সত্ত্বেও বৈষম্যবিরোধী সময়ে সুবিধা নিয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপিসহ ঢাকাস্থ ইউনিটে কর্মরত জাতীয়তাবাদ ও ইসলামপন্থিদের অনেকে ব্যক্তিগত ও ব্যাচভিত্তিক সুসম্পর্ককে প্রাধান্য দেওয়ায় গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুলিশি সিন্ডিকেটের কর্মকর্তাদের সহযোগীরা ৫ আগস্ট পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী সময়ের সুবিধা ভাগিয়ে নিয়ে গোপনে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের স্বাভাবিক কর্যক্রমের তথ্য ফাঁস ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি  (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর রূপালী বাংলাদেশকে জানান, আপনারা ইতিমধ্যে দেখেছেন যে বিভিন্ন মামলায় যারা আসামি, তাদেরকে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এমনকি পুলিশ সদস্যদেরও সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!