বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) বহুল আলোচিত সেই উপ-পরিচালক রাশিদা সুলতানা এবার আরেক ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড ঘটালেন। গত ৩ ডিসেম্বর তিনি এয়ারপোর্ট সিকিউরিটিদের (এভসেক) নিয়ে বেবিচক সদর দপ্তরে রীতিমতো মহড়া দিয়ে তার বিরোধী কর্মচারী-কর্মচারীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। অভিযোগ উঠেছে, উপ-পরিচালকের (প্রশাসন) আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তিনি এই কাণ্ড ঘটান।
জানা যায়, রাশিদা সুলতানা বেবিচকে এসেই মানবসম্পদ বিভাগে পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করেন। আধা ঘণ্টা সেখানে অবস্থানের পর বেরিয়ে এসে তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি দিতে দিতে চলে যান। তার সঙ্গে ছিলেন প্রশাসন বিভাগের উপ-পরিচালক। রাশিদার মতো একজন মাঝারি সারির কর্মকর্তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বেবিচকের কর্মকর্তারা রীতিমতো হতবাক।
ঘটনাটি এমন সময়ে ঘটল, যখন বেবিচক চেয়ারম্যান বিদেশে। এই রাশিদা সুলতানার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ। বেবিচিকে তিনি আওয়ামী দোসর হিসেবে পরিচিত। পতিত আওয়ামী আমলে দাপটের সঙ্গে চলেছেন প্রশাসনকে বৃদ্ধাগুলি দেখিয়ে। এ জন্য সাবেক সদস্য (নিরাপত্তা) তাকে শোকজ করেছেন। কিন্তু তিনি জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। সরকার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা চাকরিচ্যুতির দাবি জানালেও তাকে সাময়িক বরখাস্ত কিংবা চাকরিচ্যুত না করে পাবনার ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে গত আগস্টে বদলি করা হয়।
আর্শ্চয্যের বিষয়, সেই বদলির থোরাই কেয়ার করেনি রাশিদা। এটি নিছক লোকদেখানো বলে সবাই বলে বেড়ালেও কর্তৃপক্ষ তা গায়ে মাখেননি। বদলিকৃত কর্মস্থলে আজও তিনি যোগ দেননি। রাজশাহী এয়াপোর্টের ম্যানেজার দিলারা পারভীন দাপ্তরিকপত্রে তাকে ঈশ্বরদীতে যোগ দেওয়ার জন্য বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তিনি আমলে নেননি। একপর্যায়ে বেবিচক প্রশাসন তার বেতনভাতা বন্ধে দাপ্তরিক চিঠি জারি করে। এতেও কোনো কাজ হয়নি। এখনো রাশিদা তার অবস্থানে বহাল থেকে উল্টো অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টাকে দিয়ে বারবার তদবির করছেন। ফলে তাকে আবার সদর দপ্তরে বসানোর জন্য বেবিচকের উচ্চপর্যায়ে শলা-পরামর্শ চলছে বলে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী সরকার পতনের পরও দোসরদের রাজত্ব বেবিচকে এতটুকুও কমেনি। এখনো ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর ভাগিনা সেমসুর নির্বাহী পরিচালক হয়ে বসে আছেন। পলকের ঘনিষ্ঠ সদস্য ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ সদস্য।
এদিকে, বেবিচকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়ককে সদস্য (প্রশাসন) তার কক্ষে ডেকে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলির হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। কাওলা বেবিচকের সিভিল অ্যাভিয়েশন স্কুলের অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগের পর এ সমন্বয়ককে সদস্য (প্রশাসন) ৩ ডিসেম্বর তার কক্ষে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন বলে শোনা যায়।
আপনার মতামত লিখুন :