ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪
বিনামূল্যের পাঠ্যবই

ছাপার প্রক্রিয়ায় সংস্কারের চিন্তা

উৎপল দাশগুপ্ত

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ১২:১৫ এএম

ছাপার প্রক্রিয়ায় সংস্কারের চিন্তা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর বর্তমান প্রক্রিয়ায় তিন পরিকল্পনার মাধ্যমে সংস্কার করার চিন্তা করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সাধারণত প্রতিবছরই ১ জানুয়ারি শিক্ষাবর্ষ শুরুর দিন প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থী বই পাবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকে। এ ছাড়া বই ছাপানোর দর নিয়ে প্রেসগুলোর ‘সিন্ডিকেট’ হওয়া ও দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী বই না পাওয়াসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়।

এসব প্রতিবন্ধকতা কাটাতে আগামীতে তিনটি পরিকল্পনা কার্যকরের কথা ভাবছে এনসিটিবি।
তিন পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্ণফুলি পেপার মিলকে (কেপিএম) পূর্ণাঙ্গভাবে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা। দ্বিতীয়ত, আর্মি প্রিন্টিং প্রেসের মাধ্যমে অধিক বই ছাপানোর ব্যবস্থা করা এবং তৃতীয়ত, এনসিটিবির পক্ষে বইয়ের মান যাচাইয়ের জন্য প্রি-ডেলিভারি ইন্সপেকশন (পিডিআই) ও পোস্ট ল্যান্ডিং ইন্সপেকশন (পিএলআই) এজেন্ট হিসেবে সরকারি মাননিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানকে এনসিটিবির পক্ষে নিয়োগ দেওয়া। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চিন্তা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রের দাবি, এই পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে বছরের প্রথম দিনই প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর মানসম্পন্ন বই পাওয়া নিয়ে সবধরনের অনিশ্চয়তা দূর হবে।

এদিকে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি আর মাত্র ৩৩ দিন। এই শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ৩৯১ শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮টি বই উৎপাদন ও বিতরণের জন্য কাজ করছে এনসিটিবি। কিন্তু মাত্র ৩৩ দিনের মধ্যে এত বই ছাপিয়ে জানুয়ারির প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা নিয়ে পাহাড়সমান চ্যালেঞ্জে পড়েছে এনসিটিবি। বই ছাপানোর ক্ষেত্রে এবার বাজেটের আকার অনেক বেড়ে গেলেও প্রেসগুলোর কাছ থেকে দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী বই গ্রহণ নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জকে আরও জটিল করে তুলেছে। তৃতীয়ত, মাধ্যমিক স্তরের ছাপানো বই দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী হচ্ছে কি নাÑ তা তদারকির জন্য ‘ইন্সপেকশন এজেন্ট’ নিয়োগ ছাড়াই বই ছাপানোর নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ডস (নোয়া) দেওয়া হচ্ছে কাজ পাওয়া প্রেসগুলোকে।

তবে এনসিটিবির দাবি, প্রাথমিক স্তরের সব শিক্ষার্থী নতুন বছরের প্রথম দিনই বই পাবে। আর মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল ৫টি বই দিয়ে শিক্ষাবর্ষ শুরু করা হবে। তবে জানুয়ারির শেষ নাগাদ সব শিক্ষার্থী সব বইই পাবে।

বই ছাপানোর সংস্কার প্রক্রিয়া: বই ছাপানোর ক্ষেত্রে আগে কাগজসহ ও কাগজ ছাড়া দুইভাবে দরপত্র আহ্বান করা হতো। যে প্রেসগুলো কাগজসহ দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়ে কাজ পেত, তাদের কাগজ সরবরাহ করত এনসিটিবি। এক্ষেত্রে কেপিএম থেকে ও ওপেন টেন্ডার মেথডের (ওটিএম) মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে খোলা বাজার থেকে কাগজ সংগ্রহ করা হতো। এনসিটিবির নিজস্ব গুদাম থেকে কাগজ নিয়ে বই ছাপত কাজ পাওয়া প্রেসগুলো। এনসিটিবির ‘ভাণ্ডার কর্মকর্তা’ পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি কাগজের বিষয়গুলো দেখতেন। কাজ পাওয়া প্রেসগুলো শুধু ছাপার খরচ পেত। তবে এনসিটিবির কাগজ ছাড়াও কিছু দরপত্র হতো, যেখানে কাগজ ও ছাপার খরচ অন্তর্ভুক্ত করে দর দিত। ২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই প্রক্রিয়ায় বই ছাপা বন্ধ হয়ে যায়। শেষবার কেপিএম থেকে দুই মাসে প্রায় ৬০০ টন কাগজ সংগ্রহ করা হয়েছিল। তৎকালীন সরকারের সিদ্ধান্তে এনসিটিবি কাগজ ক্রয় করা বন্ধ করে দেয়। ভাণ্ডার কর্মকর্তাকেও তার দায়িত্বের কাজ না থাকায় বর্তমানে অন্য দায়িত্বে কাজ করানো হচ্ছে।

সূত্রের দাবি, প্রেসগুলো বই ছাপার কাজে মূলত কাগজের দামকে ধরেই সিন্ডিকেট করে থাকে। বই ছাপার পুরো কাগজ বর্তমানে বাইরে থেকে নেওয়ায় দাম ও মান উভয় দিকেই প্রেসগুলোর কাছে জিম্মি থাকছে এনসিটিবি।

সূত্র জানায়, এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বই ছাপার ক্ষেত্রে আগের মতো কাগজসহ দরপত্র আহ্বান করার প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। বর্তমানে এনসিটিবির বই ছাপার জন্য ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টন কাগজ প্রয়োজন হয়।

কেপিএমকে পূর্ণাঙ্গভাবে উৎপাদনে এনে কাগজ জোগানের উৎস হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে। এদিকে দুই মাস বন্ধ থাকার পর সেপ্টেম্বর থেকে আবার উৎপাদনে ফিরেছে কেপিএম। নানা সংকটে জর্জরিত কেপিএম বন্ধের আগে প্রতিদিন ১০০ টন কাগজ উৎপাদন করত। কেপিএম পূর্ণাঙ্গভাবে উৎপাদনে ফিরতে পারলে এনসিটিবির কাগজ সংকটের অনেকটাই সমাধান হবে বলে মনে করে সূত্র।

দ্বিতীয়ত, এনসিটিবির বিনামূল্যের বই ছাপানোর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আগামী ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ১ কোটি ১০ হাজার বই ছাপানোর কাজ করছে আর্মি প্রিন্টিং প্রেস। ডিরেক্ট পারচেজ মেথড (ডিপিএম) পদ্ধতির মাধ্যমে এই কাজ দেওয়া হয়েছে। এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এ.কে.এম রিয়াজুল হাসান রূপালী বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে আর্মি প্রিন্টিং প্রেসকে আরও ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি বই ছাপাতে আর্মি প্রিন্টিং প্রেসকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

সূত্র মতে, এনসিটিবির বই ছাপানোর সংস্কার প্রক্রিয়া একটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। তাই আগামী শিক্ষাবর্ষের মতো পরবর্তী সময়েও আর্মি প্রিন্টিং প্রেসকে বই ছাপানোর ক্ষেত্রে আরও দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক ভাবনা চলছে।

তৃতীয়ত, প্রেসগুলোর উৎপাদিত বইয়ের মান দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী হচ্ছে কি না তা তদারকির জন্য এনসিটিবির নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কাজ করে পিডিআই ও পিএলআই এজেন্ট। বরাবরই ওটিএম পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করে সর্বনিম্ন দরদাতাকে ইন্সপেকশন এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয় এনসিটিবি।

সূত্র মতে, এনসিটিবির নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও ইন্সপেকশন এজেন্টদের বিরুদ্ধে প্রেসগুলোর সঙ্গে সিন্ডিকেট করে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। যাদের ওপর বইয়ের মান নিয়ন্ত্রণের ভার, তারা নিজেরাই যদি অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে তাহলে মানসম্পন্ন বই পাওয়া কঠিন।

সূত্র জানায়, মানসম্পন্ন বইয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সংস্কার প্রক্রিয়ায় এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা ভাবা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানকে আগামী দিনে এনসিটিবির ইন্সপেকশন এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেডকে (বিএমটিএফ) ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব প্রদানের চিন্তা চলছে।

এ বিষয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে মানসম্পন্ন বই পৌঁছে দেওয়া সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। চ্যালেঞ্জগুলোও বহুমুখী। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নানা ভাবনা রয়েছে। যেকোনো মূল্যে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে বই পৌঁছানো নিশ্চিত করাই এনসিটিবির একমাত্র লক্ষ্য।

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বই বিতরণ পরিস্থিতি: গত ৫ আগস্ট সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন কারিকুলাম বাতিল করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে বই ছাপানোর ক্ষেত্রে ইতিপূর্বে হয়ে যাওয়া দরপত্র বাতিল, পুনর্দরপত্র আহ্বান ও বইয়ের বিভিন্ন কন্টেন্ট পরিবর্তন করে বই ছাপানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে দেরি হয়।

নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে বাকি ৩৩ দিন। এবার প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ৩৯১ শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৮টি বই ছাপার কাজ করছে এনসিটিবি। এর মধ্যে প্রাথমিকের ২ কোটি ১৪ লাখ ২১ হাজার ২১১ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৬০৬টি বই। অন্যদিকে মাধ্যমিকের ২ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ১৮০ শিক্ষার্থীর জন্য ছাপানো হচ্ছে ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭টি। এর মধ্যে ইবতেদায়ি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ব্রেইল বইও রয়েছে।

বই উৎপাদন ও বিতরণে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজে সময় লেগেছে।

এ ছাড়া মাধ্যমিক স্তরে বইয়ের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। সে কারণে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই বই পেলেও শঙ্কা রয়েছে মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বই পাওয়ার ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জানুয়ারির প্রথম দিন বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় এই পাঁচটি বই দেওয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে এনসিটিবি।

প্রাথমিক স্তরের মোট বইয়ের মধ্যে বর্তমানে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির প্রায় সাড়ে ৪ কোটি বই বর্তমানে ছাপা হচ্ছে। প্রাক-প্রাথমিকের নোয়া দেওয়া হয়েছে প্রেসগুলোকে। এই সপ্তাহে চুক্তি হতে পারে। অন্যদিকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন পেয়েছে। এদিকে প্রাথমিক স্তরে শুরু হলেও মাধ্যমিক স্তরে বই ছাপা শুরু হয়নি। তবে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চুক্তি করার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে নোয়া দেওয়া শুরু করেছে এনসিটিবি। গতকাল বুধবার দুটি প্রেস বই ছাপানোর জন্য ব্যাংকের পারফরম্যান্স সিকিউরিটি (পিসি) জমা দিয়েছে। অষ্টম শ্রেণির বই গতকাল সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন পেয়েছে। নবম শ্রেণির বই ছাপার দরপত্র খোলা হবে ৫ ডিসেম্বর। দশম শ্রেণির বইয়ের দরপত্রের মূল্যায়ন চলছে।

সার্বিকভাবে বই ছাপার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর বাকি ৩৩ দিনে প্রাথমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীই বই পাবে। মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়েরও বড় অংশ ছাপানো সম্ভব। তবে নবম ও দশম শ্রেণির বই ছাপানো যথাসময়ে শেষ করা নিয়ে শঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।

নানা কারণে এই চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, আগে টেন্ডার হওয়ায় প্রাথমিকের বই ছাপানো পরিস্থিতি ভালো অবস্থায় রয়েছে। আশা করি, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।

মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বইয়েরও বড় অংশ ইতিমধ্যে ছাপানো হয়ে যাবে মন্তব্য করে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, নবম শ্রেণির বইয়ের টেন্ডার ওপেন হবে ৫ ডিসেম্বর। আর দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যেহেতু ২০২৬ সালে এসএসসি দিবে তাই এই শ্রেণির বই আগে ছাপা শুরু হচ্ছে। তিনি আরও জানান, শিক্ষাবর্ষের শুরুর দিনই ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল পাঁচটি বই দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, প্রাথমিকের বই নির্দিষ্ট সময়েই শিক্ষার্থীরা পেতে পারে। তবে মাধ্যমিক স্তরের বই নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হচ্ছে এনসিটিবিকে এখনই মূল চার-পাঁচটি বই জানুয়ারির প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।

ইন্সপেকশন এজেন্ট নিয়োগ ছাড়াই দেওয়া হচ্ছে নোয়া: বইয়ের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কাজ পাওয়া প্রেসগুলোর সঙ্গে এনসিটিবির চুক্তির আগে পিডিআই ও পিএলআই এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কেননা প্রেসগুলো যখন এনসিটিবির সঙ্গে চুক্তি করে, তখন চুক্তিতে ইন্সপেকশন এজেন্টের নাম দিতে হয়। কিন্তু আগামী শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তরের বইয়ের মান নিয়ন্ত্রণে এখনো পিডিআই ও পিএলআই এজেন্ট নিয়োগ দিতে পারেনি এনসিটিবি। অথচ গত মঙ্গলবার ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কাজ পাওয়াগুলোকে নোয়া দিয়েছে এনসিটিবি। গতকাল দুটি প্রেস চুক্তির জন্য ব্যাংক পারফরমেন্স সিকিউরিটি জমা দিয়েছে এনসিটিবিতে। চুক্তি করার জন্য আরও প্রেস আসলেও ইন্সপেকশন এজেন্টের নাম দিতে না পারায় চুক্তি করতে পারেনি। চুক্তি না করায় প্রেসগুলোও ওই শ্রেণির বই ছাপার কাজ শুরু করতে পারছে না।

জানা গেছে, পিডিআই ও পিএলআই এজেন্ট নিয়োগে এনসিটিবি ইতিপূর্বে দরপত্র আহ্বান করলেও সর্বনিম্ন দরদাতার দর অস্বাভাবিক হওয়ায় নিযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ক্ষেত্রে এনসিটিবি বিকল্প উপায়ে ইন্সপেকশন এজেন্ট নিয়োগের কথা ভাবছে।

এ বিষয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ইন্সপেকশন নিয়োগের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সবকিছু ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রয়োজনে রি-টেন্ডারও হতে পারে।

আরবি/জেডআর

Link copied!