জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পরে ও আগে অনেকেই দেশ ছেড়েছেন। তবে অনেক এমপি, মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সুযোগ পাননি দেশ ছাড়ার। বর্তমানে দলটির নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের দেশবিরোধী গুজব ছড়াচ্ছেন। অবশ্য এসব বিষয়ে গোয়েন্দারা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ যেন গুজব সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং পুলিশ সতর্ক রয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সাইবার পেট্রোলিং জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশকে নিয়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ষড়যন্ত্র করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বসুন্ধরা, গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ ঢাকার বেশকিছু আবাসিক এলাকায় লুকিয়ে রয়েছেন। এসব নেতাকর্মী বিদেশে থাকা আত্মীয়স্বজনদের সহযোগিতায় বিদেশি সিম চালু রেখে ওই নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছেন। তবে বেশির ভাগ নেতা ভারতীয় সিম, দুবাই, লন্ডনসহ বেশকিছু দেশের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ব্যবহার করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।
একটি বিশেষ গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রিকশাচালকের আন্দোলনসহ বেশকিছু আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন এবং বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। দেশের মধ্যে থেকে যারা বিদেশি নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আ.লীগ সরকারের অনেক নেতাকর্মী বিদেশে পালিয়ে গেছেন, দেশেও অনেকে রয়েছেন। তারা আত্মগোপনে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন এবং বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাদের ধরতে অভিযান চলছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও কোনো ষড়যন্ত্রকারীকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীরা ওয়েস্টিন হোটেল, ফাইভ স্টার হোটেল, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় থেকে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন। বেশকিছু এলাকায় খোঁজ নিয়ে এর সত্যতাও মিলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) ইনামুল হক সাগর রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ যেন গুজব সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে। পুলিশের সাইবার পেট্রোলিং জোরদার করা হয়েছে। কেউ কোনো ধরনের গুজব সৃষ্টি করলে এবং ষড়যন্ত্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাইবার ইউনিটের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের যেখানে-সেখানে লুকিয়ে থেকে সরকার এবং রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র করছেন। আত্মগোপনে থেকে তারা ইন্ডিয়া, লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রের নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছেন। এর বেশকিছু তথ্যপ্রমাণও মিলছে। অবিলম্বে এসব অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :