বেশকিছু ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল ও সহনশীল করে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ-২০২২-২৫) ও ইমরাত নির্মাণ বিধিমালা-২০২৪ দ্বিতীয় বারের মতো বড়সড়ো সংশোধন করে খসড়া চূড়ান্ত করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। ফলে ভবন নির্মাণে আগের চেয়ে বেশি সুবিধা পাবেন নাগরিকরা। বিশেষ করে অনুন্নত এলাকার জন্য ব্যাপক সুবিধা রাখা হয়েছে। তা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি আবাসন, ব্লকভিত্তিক আবাসন এবং একীভূত প্লটের মালিকদের ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) বাড়ানো হয়েছে।
এতে করে আগের চেয়ে ভবনের উচ্চতা ও প্রশস্ততা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রাস্তার প্রশস্ততার ক্ষেত্রে কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, রাস্তার প্রশস্ততায় এতখানি কঠোর করা হয়েছে যে, ২০ ফুট রাস্তা না থাকলে নকশা অনুমোদন বিবেচনায়ই আনা হবে না। এবারের সংশোধনীতে অনুন্নত এলাকাগুলো প্রাধান্য পেয়েছে।
তিনি বলেন, আধুনিক ও বাসযোগ্য শহর গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আমরা ব্যাপক কাজ করেছি- চেষ্টা করেছি যেন মানুষ ইমারত নির্মাণে কোনোক্রমেই বাধাগ্রস্ত না হয়। আমাদের দৃষ্টি ছিল, কোনো এলাকার কোনো শ্রেণির মানুষ যেন উপেক্ষিত না হন। মোটামুটিভাবে ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ এর বৈষম্য নিরসন ও সময়োপযোগী করে এই সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়া সংশোধনীতে কৃষিজমি-জলাশয় (মুখ্য ও সাধারণ) ও বন্যাপ্রবণ অঞ্চল সংরক্ষণ এবং ফারের মনোন্নয়নে ড্যাপের কিছু নির্দেশনা করা হয়েছে। তা ছাড়া নকশা অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজীকরণ (বিশেষ প্রকল্প ছাড়পত্র ধাপ বিলুপ্তসহ) এবং ভবন নির্মাণকালীন তদারকির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে ভবনের কাঠামো নির্মাণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ দেওয়া নিশ্চিতের বিধি সংযোজন করা হয়েছে।
চূড়ান্ত খসড়া সংশোধনীতে শহরের সবুজায়ন বৃদ্ধি, অ্যানার্জি, এফিসিয়েন্সি, ভূগর্ভস্থ পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু করার লক্ষ্যে প্লট একত্রীকরণের মাধ্যমে ব্লকভিত্তিক উন্নয়ন উৎসাহিত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিয়ে সর্বোচ্চ ‘ফার’ প্রাপ্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি দুর্যোগ সহনশীল শহর নির্মাণে ফায়ার আইন ও বিএনবিসি সমন্বয় করে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ৪.৮ মিটারের কম প্রশস্ত রাস্তাগুলোর জন্য ‘ফার’-এর মান ও ইমারতের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে।
একনজরে ৩ বিধিমালার সেটব্যাক
ইমারতের উচ্চতা: ৬ তলা পর্যন্ত ৩-১৮ মিটার, ৭-৮ তলা ১৯-২৪ মিটার, ৯-১১ তলা ২৫-৩৩ মিটার, ১২-১৬ তলা ৩৪-৪৮ মিটার, ১৭-২১ তলা ৪৯-৬৫ মিটার, ২২-৪০ তলা ৬৬-১২৬ মিটার এবং ৪০ তলার ঊর্ধ্বে ১২৭+।
তা ছাড়া একই প্লটে অবস্থিত ভবনগুলোর মধ্যবর্তী ন্যূনতম দূরত্ব (পাশাপাশি, সামনাসামনি) যথাক্রমে ২.০০, ২.৫০, ৫.০০, ৬.০০, ৭.০০, ৮.০০ ও ১০.০০ মিটার নির্ধারিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :