বিশ্ব ক্রিকেটের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলে পাকিস্তানকে এর আগে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৮ ম্যাচে। বাকি ছিল শুধু টেস্ট। আর এবার সেই টেস্টেও প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের ঘরের মাঠে তাদেরকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে টাইগাররা।
শান মাসুদ-বাবর আজমদের এমন বিপর্যয় কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের দল নির্বাচন থেকে শুরু করে খেলার কঠোর সমালোচনা করেছেন শহীদ আফ্রিদি, রমিজ রাজারা। সেই সাথে হতাশা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রধানও। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের অসাধারণ এই জয়ের জন্য কৃতিত্বও দিয়েছেন তারা।
পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি বলেছেন, এই ম্যাচে কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণাই ছিল না পাকিস্তানের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শহীদ আফ্রিদি লিখেছেন, `১০ উইকেটের হার- এই ধরনের পিচ প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত, চার জন ফাস্ট বোলার খেলানো এবং বিশেষজ্ঞ স্পিনার না রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। হোম কন্ডিশন সম্পর্কে সচেতনতার অভাব পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি আমি। একই সঙ্গে, টেস্টজুড়ে যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট বাংলাদেশ খেলেছে সেটার কৃতিত্ব তাদের দিতেই হবে।`
এদিকে, বাংলাদেশের এমন সাফল্যে পাকিস্তানেরও অবদান দেখছেন সাবেক পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। বলেন, `বাংলাদেশের পারফরম্যান্স অনেক ভালো হয়েছে। তাদেরকে মোবারকবাদ। কিন্তু এই জয়ে পাকিস্তানও অনেক অবদান রেখেছে। পাকিস্তানের দল নির্বাচন খারাপ, স্পিনার সংকট, আত্মবিশ্বাসের সংকট, ব্যাটিংও ভালো করেনি, ম্যাচ হাতের মুঠোয় রাখবে ভেবে আগেই ডিক্লেয়ার করে দেওয়া- এসব। টেস্ট ক্রিকেট যেমন হাসায়, তেমন কাঁদায়ও।`
শুধু তাই নয়, নিজেদের ঘরের মাঠে এমন লজ্জাজনক হারে হতাশা প্রকাশ করেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিও। নিজেদের ভরাডুবিতে হতাশ হলেও বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন পিসিবি প্রধান।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি বলেন, `বাংলাদেশ ক্রিকেট দল দারুণ খেলেছে, পুরো ম্যাচেই নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি একটি ঐতিহাসিক জয়। তাদের আন্তরিক অভিনন্দন।`
পাকিস্তানের ব্যর্থতা নিয়ে বলেন, `দুর্ভাগ্যজনকভাবে পাকিস্তান ক্রিকেট দল যতটা ভালো পারফর্ম করা উচিত ছিল, ততটা করতে পারেনি। ইনশাআল্লাহ সবুজ জার্সিধারীরা সামনের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে।`
রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম টেস্টে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৫৬৫ রান করে বাংলাদেশ, লিড পায় ১১৭ রানের। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৩০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
আপনার মতামত লিখুন :