একজন দেশের ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক, অন্যজন সেরা অলরাউন্ডার। যেখানে এই দুজনকে ভক্ত-সমর্থকসহ দেশবাসীর মাথায় করে রাখার কথা, সেখানে তারা নাকি এখন দেশেই থাকতে পারছেন না। তবে এর কারণ ক্রিকেট নয়, বরং রাজনীতি। দেশের ক্রিকেটের দুই নক্ষত্র মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাকিব আল হাসান- দুজনেই ছিলেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি। আর এ কারণেই যেন এই দুই কিংবদন্তি রাতারাতি বনে গেছেন পুরো দেশের শত্রু।
মাশরাফি ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। সাকিবও ইতোমধ্যেই দিয়েছেন দুই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা। যদিও সুযোগ থাকলে এবং সম্ভব হলে টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা মিরপুর শেরেবাংলায় খেলতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে নানা জটিলতায় সেটিও হলো না। যার ফলে হয়তো ভারতের বিপক্ষেই সমাপ্তি টানতে হলো সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ারের।
দেশসেরা দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে তৈরি হওয়া এমন পরিস্থিতি দেশের মানুষের প্রতি রাগ হচ্ছে দেশ সেরা কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের। তাই তো নিজের সেই ক্ষোভ উগ্রে দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে।
ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম এই জনপ্রিয় কোচ নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘দেশেরপ্রতি দেশের মানুষের প্রতি কখনই এতো রাগ বা কষ্ট লাগে নাই। আজ কেন যেন লাগছে? আমরা মানুষ কী কখনও নিজেরা ভুল করি না? কেউ অনুতপ্ত হলে তাকে একটা সুযোগ দেয়া উচিত। কিন্তু আমরা কেমন যেন হয়ে যাচ্ছি মানুষ হিসেবে, দয়া মায়া জিনিসটা আমাদের মধ্যে থেকে উঠে গেছে।
এরপর তিনি আরও লেখেন, ‘একটা মানুষ দেশের জন্য ১৭টা বছর কিছু না কিছু করেছে, আজ ক্রিকেট বিশ্ব আমাদের একটু সম্মান করে কাদের জন্য, তারা ক্রিকেট মাঠে নামতে পারবে না, এই কান্না তো সবাই দেখবে না, রাজনীতি করছে বলে এরা খুনি ??? এদের সঙ্গে মিশেছেন, এরা কত মানুষ এর ভাত কাপড়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে জানেন আপনি? এরা কত অসহায় মানুষের চিকিৎসা করাইছে সেটা কী জানেন?
লাল সবুজের জার্সিতে সাকিব, তামিম ইকবাল এবং মাশরাফিদের মাঠের লড়াইয়ের কথাও তুলে ধরে সালাউদ্দিন লেখেন, ‘তারা স্ট্যাটাস না দেয়ার কারণে আজ শত্রু। যখন মাশরাফি ৫টা অপারেশন করে দেশের জন্য লড়াই করছে তা কী দেখছেন, সাকিব যে আঙুলে চিড় নিয়া বোলিং করে গেছে, তামিম এক হাতে ব্যাটিং করে গেছে কাদের জন্য? দেশকে সবাই কম বেশি ভালোবাসে। এদের ভালোবাসাটা হয়ত দেখা যায়ও না। এদের কাছ থেকে দেখেছি, এরা মানুষের উপকার ছাড়া কারো ক্ষতি করেনি। এরা খুনি না।’
সবশেষে দেশসেরা ক্রিকেটারের বিদায় ঘরের মাঠ থেকে নেয়া হচ্ছে না দেখে দেশসেরা এই কোচ বলেন, ‘খুব কষ্ট পাচ্ছি এদেরকে মাঠ থেকে বিদায় দেখতে পাব না। মানুষকে মাফ করুন, আল্লাহ আমাদের অনেক অপরাধ মাফ করে দেবেন। আমরা সবাই কম বেশি অপরাধী, সম্মান কাউকে দিলে আপনি ও সম্মানীত হবেন।’
আপনার মতামত লিখুন :