ইউরোপ-এশিয়া অধ্যায় শেষ করে নেইমার আবারও ফিরলেন কৈশোরের ক্লাব সান্তোসে। ঘরের ছেলের ঘরে ফেরা, তাই প্রত্যাবর্তনের আয়োজনটাও ছিল বেশ রাজকীয়। তার ফিরে আসার এই আনন্দে বড় অক্ষরে বোর্ডে শোভা পায় ‘দ্য প্রিন্স ইজ ব্যাক লেখাটি।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সান্তোসের উরবানো কালদেইরা স্টেডিয়ামে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয় নেইমারকে। স্থানীয় জনপ্রিয় শিল্পীদের গান ও কনসার্টের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল নেইমারকে দেখে আনন্দে ফেটে পড়েন দর্শকরা।
সৌদি আরব থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ব্যক্তিগত বিমানে করে সাও পাউলোতে উড়ে যান নেইমার। কয়েক ঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে সান্তোসে যান তিনি হেলিকপ্টারে করে।
দা প্রিন্স ইজ ব্যাক’ শিরোনামে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় সান্তোসের ফেইসবুক পাতায়। শৈশবে এই ক্লাবে পা রাখা থেকে তার বেড়ে ওঠা ও নায়ক হয়ে ওঠার পথচলা তুলে ধরা হয় সেখানে। তুমুল আতশবাজির শব্দে আর আলোর ঝলকানির মধ্যে মাঠে প্রবেশ করেন নেইমার। সমর্থকদের অভিনন্দনের জবাব দেন দীর্ঘ সময় ধরে। এক পর্যায়ে সবার উদ্দেশে বলেন, ‘ফিরতে পেরে আমি খুবই খুশি। একসঙ্গে দারুণ সময় আমরা কাটিয়েছি এখানে। আরও অনেক কিছু দেখানোর ও করার বাকি আছে।”
সমর্থকেরা এক পর্যায়ে চিৎকার করে ড্রিবলিং দেখতে চান। ড্রিবল দেখিয়ে নেইমার বলেন, “নান্দনিক খেলার সাহস দেখাতে ঘাটতি থাকবে না আমার।”
সংবাদ সম্মেলনে নেইমার বলেন, “কিছু সিদ্ধান্ত আছে, যা ফুটবল বা যুক্তির সীমানার বাইরে। কিছু আছে প্রভাববিস্তারি। স্বীকার করছি, জানুয়ারির শুরুতেও আমি কল্পনা করতে পারিনি যে সান্তোসে ফিরব বা আল-হিলাল ছাড়ব। আমি সেখানে খুশি ছিলাম, আমার পরিবার খুশি ছিল। মানিয়ে নিয়েছিলাম সবকিছুতে এবং খেলার প্রবল তাড়না ছিল।”
তিনি বলেন,“এরপর কিছু ব্যাপার ঘটল এবং আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হতো। প্রতি দিনের অনুশীলনে আমি ভালো অনুভব করছিলাম না এবং সবকিছু খুব ভালোভাবে হচ্ছিল না আমার জন্য। এর মধ্যেই এখানে ফেরার সুযোগ এলো, আমি দ্বিতীয়বার ভাবিনি।”
সান্তোসে ফিরে আবার শৈশবে ফিরে গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রথম দিনই বাবাকে বলেছি সবকিছু চূড়ান্ত করে ফেলতে। সবাই খুব খুশি। নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে ফিরেছি আমি। এখানে পা রাখার পরই মনে হচ্ছে যেন, বয়স আবার ১৭ হয়ে গেছে। আমি খুবই খুশি, রোমাঞ্চিত ও খেলার জন্য মুখিয়ে আছি।”
উল্লেখ্য, ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সান্তোসের বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন নেইমার। এরপর চার বছর খেলেন ক্লাবটির মূল দলে। ২০১৩ সালে লাতিন আমেরিকা ছেড়ে পাড়ি জমান ইউরোপে। বার্সেলোনা, পিএসজি ঘুরে নতুন ঠিকানা হয় মধ্যপ্রাচ্য। তবে, সৌদি ক্লাব আল-হিলালে মেলে ধরতে পারেননি নিজেকে। দেড় বছরে মাত্র সাত ম্যাচ আর ১ গোলেই শেষ হয় নেইমারের সৌদি পর্ব।
আপনার মতামত লিখুন :