ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তান দলকে সমর্থন করায় ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে মুসলিম এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার স্ত্রী ও কিশোর সন্তানকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এমনকি বুলডোজার দিয়ে তার দোকানও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ চলাকালীন তিনি পাকিস্তানকে সমর্থন করায় ও স্লোগান দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেয় বিজেপিশাসিত এই রাজ্যটির প্রশাসন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এবং বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
সংবাদমাধ্যম বলছে, মহারাষ্ট্রের ভুক্তভোগী ওই মুসলিম ব্যবসায়ীর নাম কিতাবউল্লাহ হামিদুল্লাহ খান। ৩৮ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী গত রোববার ভারতের বিরুদ্ধে দুবাইয়ে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন সমর্থন করেছিলেন পাকিস্তানকে। আর সেই অপরাধেই বিজেপিশাসিত মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গে প্রশাসনের রোষানলে পড়লেন এই ব্যবসায়ী।
রোববারের সেই পাকিস্তান-ভারত ম্যাচের পর মহারাষ্ট্র রাজ্যের মালভান পৌরসভার বাসিন্দা কিতাবউল্লাহ হামিদুল্লাহ খান এবং তার পরিবারের সদস্যদের মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় তার দোকানটিও।
সিন্ধুদুর্গের বিজেপি বিধায়ক নীলেশ রানের অভিযোগের ভিত্তিতেই মালভান পৌরসভা এবং পুলিশ এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ রানের পুত্রে নীলেশ নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কিতাবউল্লাহর দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ পোস্ট করেছেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, পুরোনো জিনিসপত্র কেনাবেচার ব্যবসায়ী কিতাবউল্লাহ গত রোববার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ চলাকালীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পরেই “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” বলে স্লোগান দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে এলাকায় “উত্তেজনা” তৈরি হয়।
বিষয়টি জানানো হয় মালভান থানায়। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় বিধায়ক নীলেশকেও। আর তারপরই সক্রিয় হয় পুলিশ-প্রশাসন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে কিতাবউল্লাহ হামিদুল্লাহ খান ও তার স্ত্রী আয়েশা (৩৫) এবং ১৫ বছর বয়সী ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া মুসলিম এই পরিবারের বিরুদ্ধে ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা ছড়ানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অবশ্য গত বছরের নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, কোনও ব্যক্তি অপরাধী হলেও তার সম্পত্তি বুলডোজার দিয়ে ভাঙতে পারে না পুলিশ-প্রশাসন। এক্ষেত্রে আদালতের সেই নির্দেশ অমান্যের অভিযোগও উঠেছে।