সোহান-শামীমরা বিসিবির চুক্তিতে নেই কেন?

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৫, ০১:১৭ পিএম

সোহান-শামীমরা বিসিবির চুক্তিতে নেই কেন?

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ২২ ক্রিকেটারের কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে। ২০২৫ সালের চুক্তিতে বড় কোনো চমক নেই। গত বছর জাতীয় দলের হয়ে বিভিন্ন সংস্করণে পারফর্ম করা খেলোয়াড়দের নিয়ে সাজানো হয়েছে তালিকা। চলতি বছর বিসিবির চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন- সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান সোহান, শামীম পাটোয়ারী, মাহমুদুল হাসান জয়, নাঈম হাসান ও জাকির হাসানরা।

প্রথমবারের মতো চুক্তিতে জায়গা পেয়েছেন- তরুণ পেসার নাহিদ রানা, তানজিদ হাসান, রিশাদ হোসেন ও জাকের আলিরা। দীর্ঘদিন পর বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ফিরেছেন- সাদমান ইসলাম ও সৌম্য সরকার। সঙ্গত কারণে বাদ পড়লেন সাকিব। কেননা, গত অক্টোবরের পর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থমকে থাকা সাকিবের জাতীয় দলে ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে বাকিদের সামনে আছে লম্বা ক্যারিয়ার।

অন্যদিকে, গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ে বড় অবদান রাখেন শামীম হোসেন। এরপর বিপিএলেও ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সামর্থ্য আরেকবার দেখান।। ২০ ওভারের ক্রিকেটের বিশেষজ্ঞ তাকে বলাই যায়। সামনের পালাবাদলের পালায় তিনি ফিরতে পারেন ওয়ানডেতেও। কিন্তু বিসিবির নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জায়গা হয়নি তরুণ আগ্রাসী ব্যাটসম্যানের। তার সামনে অবশ্য দুয়ার খোলা রাখছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।

গত ডিসেম্বরে ক্যারিবিয়ান সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে প্রায় এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন শামীম। গায়ানার বোলিংবান্ধব মন্থর উইকেটে প্রথম দুই ম্যাচেই শেষ দিকে ঝড় তোলেন তিনি। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৩ বলে ২৭ রানের পর দ্বিতীয়টিতে তিনি খেলেন ১৭ বলে ৩৫ রানের ইনিংস। দুই ম্যাচেই ওপরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর শামীমের ক্যামিওতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ-সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি। তিন ম্যাচে ১৮৮.২৩ স্ট্রাইক রেটে ৬৪ রান করেন শামীম। সিরিজে একাধিক ম্যাচ খেলা আর কোনো ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট ১৪০ স্পর্শ করেনি।

ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সবশেষ বিপিএলে চিটাগং কিংসের হয়ে ১৫৯.২৭ স্ট্রাইক রেটে ৩৫২ রান করেন শামীম। সেরা ১০ রান সংগ্রাহকের মধ্যে তার স্ট্রাইক রেটই ছিল সবচেয়ে বেশি। শামীমের ব্যাটিংয়ের ধরনেও দেখা যায় ইতিবাচক পরিবর্তন। উদ্ভাবনী সব শট খেলার প্রবণতা তার বরাবরই ছিল। সেখানে এখন বেশ ধারাবাহিক ও কার্যকর মনে হয় তাকে।

অলরাউন্ড ব্যাটিংয়ে উন্নতির আভাসও কিছুটা মেলে ধরতে পেরেছেন। চোট না থাকলে সামনের সময়টায় যে তাকে টি-টোয়েন্টি দলে দেখা যাবে, এটা নিয়ে সংশয় আছে সামান্যই। আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাকিয়েও তার মতো প্রভাব বিস্তারি একজন ব্যাটসম্যানকে প্রয়োজন দলের।

মুশফিকুর রহিমের অবসর ও মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে টানাপোড়েনের পথ ধরে ওয়ানডেতেও যদি এই জায়গায় পরিবর্তন আসে, শামীম হতে পারেন সম্ভাব্য এক নাম। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তার নামটি তাই প্রত্যাশিত ছিল কিছুটা। কিন্তু তার নাম চুক্তিতে আসেনি।

জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানান, ‘কিছু নাম বাদ পড়েছে, যারা আগে ছিল কিন্তু পারফর্ম করতে পারেনি। তবে সামনে সবার জন্যই দরজা খোলা থাকবে। যে কাউকে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে হবে। তারপর কেন্দ্রীয় চুক্তি পাবে। জাতীয় দলের সঙ্গে চুক্তিটা মর্যাদাপূর্ণ একটা ব্যাপার। সেভাবেই এটা চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ‘নির্দিষ্ট করে কারও জন্য কোনো বার্তা আমরা দিতে চাই না। সবার জন্য বিষয়টা একই। কোনো কিছু ঘটলে তার প্রতিফলনও কেন্দ্রীয় চুক্তিতে দেখা যাবে। এক্ষেত্রে অল্পতেই সন্তুষ্ট হওয়ার কিছু নেই। আবার কাউকে এমনও বলা হবে না যে, সে আসতে পারবে না। সবার জন্যই দরজা খোলা থাকবে। নিয়মিত পারফর্ম করে যেতে হবে। সম্ভাবনাময় অনেকেই আছে। অনেকে আবার সম্ভাবনা থাকলেও পারফর্ম করতে পারেনি। সেজন্য হয়তো এই বছর পায়নি। এতে আসলে ভুল কিছু নেই।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!