বাংলাদেশ ক্রিকেটের সময়ের অন্যতম জুটি ‘পঞ্চ পাণ্ডব’। কালের বিবর্তনে সেই জুটি ভেঙে গেছে সেই জুটি। সবশেষ এই জুটির অন্যতম সদস্য মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ গতকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্ট করে নিজের অবসর ঘোষণা দেন। এর আগে বেশকিছুদিন আগে একই পথ ধরে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। এর আগে একে একে বিদায় নিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসান।
তবে লক্ষ্যণীয় বিষয়টি হলো এদের মধ্যে কেউই মাঠ থেকে অবসর নেননি। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মাঠ থেকে অবসর নেওয়ার সংস্কৃতি কি কখনো দেখা যাবে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া এখন বেশ কঠিন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন সাবেক বাংলাদেশি ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ সুজন। এনিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ওদের ক্যারিয়ারটা (মাশরাফি, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, তামিম) বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা উজ্জ্বল ব্যাপার। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে একটা জায়গা থেকে আরেকটা জায়গায় নিয়ে এসেছিল ওরা। আমি মনে করি, মাঠ থেকে অবসর নেওয়াটা ওদের প্রাপ্য। আমি মনে করি, যারা ওদের সমর্থক, যারা ওদেরকে ভালোবেসেছে এত দিন, তারাও ডিজার্ভ করে যে একটা বড় করতালির মধ্যে ওদের মাঠ থেকে বিদায় দেওয়া।’
২০০৬ সালে বগুড়ায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছিলেন খালেদ মাহমুদ। সেদিন সুজনের দু’চোখ অশ্রুসিক্ত থাকলেও মুখে ছিল হাসি। সেই ঘটনার দুই দশক পরও সেটিই হয়ে থেকেছে বাংলাদেশের কোনো ক্রিকেটারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাঠ থেকে বিদায় নেওয়ার একমাত্র ঘটনা।
নিজেকে বাংলাদেশ ক্রিকেটর একজন সমর্থক দাবি করে এই সাবেক ক্রিকেটার বলেন, ‘আমরা যারা সমর্থক ছিলাম, আমরা যারা ওদের ক্রিকেটকে ভালোবাসি, সেই সুযোগটা (মাঠ থেকে বিদায় দেওয়ার) আমাদের হয়তো হলো না। কেন ওরা মাঠ থেকে অবসর নিল না, ওরাই ভালো বলতে পারবে। হয়তো ওদের কোনো একটা কারণ থাকতে পারে। যেটা আমার মতামত, কোনো ছেলেকে অভিষেকের দিন মাঠেই ক্যাপ পরানো হয়। খেলাটা ছাড়ার সময়ও যদি মাঠ থেকে বিদায় হয়, জিনিসটা আরও প্রেজেন্টেবল হয়।’
মাঠ থেকে ক্রিকেটাররা অবসর না নিতে পারায় অনেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দায় দিচ্ছেন। তবে সে দায় উড়িয়ে দিয়ে সুজন বলেন, ‘আমি যখন অবসর নিয়েছি, তখন বলেছি এটা আমার শেষ ম্যাচ। যখন কেউ এটা বলে, তখন একটা আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার ব্যবস্থা করতে পারে। বোর্ড কি কাউকে পুশ করতে পারে আপনি অবসর নেন? ওরা যদি বলত যে পরের সিরিজে অবসর নেব। তাহলে বিসিবি প্রস্তুতি নিতে পারে। ওরা যদি না বলে, বিসিবি বুঝবে কীভাবে। বিসিবিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।’
প্রসঙ্গত, তামিম ইকবাল সম্প্রতি জাতীয় দলে আর খেলবেন না বলে জানিয়েছেন। আর মাশরাফি বিন মুতর্জার বিন মুর্তজার ক্যারিয়ার শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায়। এছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সাকিব আল হাসানও আর কখনো বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন কি না, নিশ্চয়তা নেই।