ঢাকা বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

ভারত-বাংলাদেশ দ্বৈরথ, কে কোথায় এগিয়ে?

রবিন দাস
প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মাঠে নামবে দুই প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও ভারত। মেঘালয়ের শিলংয়ের জহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচ।

এই ম্যাচে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হতে যাচ্ছে শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেলা ‘বাংলাদেশি ব্লেড’ খ্যাত হামজা চৌধুরীর। এছাড়াও অবসর ভেঙে ভারতের হয়ে মাঠে নামবেন দেশটির সর্বোচ্চ গোলদাতা সুনীল ছেত্রী। তাই ম্যাচটির নিয়ে বিশেষ আগ্রহ এ অঞ্চলের ফুটবল ভক্তদের। 

দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরাশক্তির লড়াইয়ে কে কোথায় এগিয়ে থাকছে আসুন দেখে নেয়া যাক এক নজরে। 

ফিফা র‌্যাঙ্কিং: 

এক্ষেত্রে এগিয়ে রাখা যায় ভারতকে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ঢের বেশি এগিয়ে আছে দলটি। ফিফা র‌্যাঙ্কিং এ বর্তমানে ভারত ১২৬ তম। অন্যদিকে বাংলাদেশের অবস্থান তলানির দিকে। দলটির অবস্থান ১৮৫ নম্বরে। তবে বাংলাদেশ র‌্যাঙ্কিং এ পিছিয়ে থাকলেও এ ম্যাচটি যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে সে আশা করায় যায়। 

ম্যাচ অভিজ্ঞতা ও অর্জন: 

আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতায় অবশ্য ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত ৫৫৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে ভারত খেলেছে ৫১০টি ম্যাচ। তবে ম্যাচ সংখ্যায় বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও সফলতায় এগিয়ে আছে ভারতই। 

বাংলাদেশের ফুটবলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সফলতা ২০০৫ সালে সাফ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়। এছাড়াও দক্ষিণ এশীয় গেমসে দুইবার স্বর্ণপদক, চারবার রৌপ্য পদক এবং ৩ বার ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে বাংলাদেশ। 

অন্যদিকে ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দল এখন পর্যন্ত সাফ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে ৮ বার। এছাড়াও ২ বার এশিয়ান গেমসে স্বর্ণ পদকও জিতেছিল দলটি। 

দুই দলের বাজারমূল্য: 

ফিফা র‌্যাঙ্কিং ও ফুটবলে অর্জনের দিক থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকলেও ট্রান্সফার মার্কেটে খেলোয়াড়দের বাজারমূল্যে তাতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। যদিও এক হামজা চৌধুরীই গড়ে দিয়েছেন এই পার্থক্য। 

বাংলাদেশ দলের চূড়ান্ত দলে জায়গা পাওয়া ২৪ জন খেলোয়াড়ের বর্তমান বাজারমূল্য ৮৬ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে শেফিল্ড ইউনাইটেডে খেলা হামজার একাই প্রায় ৪৯ লাখ ডলার। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজারমূল্য ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন ও ডিফেন্ডার ঈসা ফয়সালের আড়াই লাখ ডলার করে।

অন্যদিক এ ম্যাচের জন্য ভারতের দলে আছে ২৫ জন খেলোয়াড়। যাদের মোট বাজারমূল্য  ৬০ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। এরমধ্যে সর্বোচ্চ বাজারমূল্য মিডফিল্ডার অপুইয়ার। ট্রান্সফার মার্কেটের তথ্যমতে, এই খেলোয়াড়ের বাজারমূল্য ৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাড়ে তিন লাখ ডলার মোহনবাগানেরই ডিফেন্ডার শুভাশীষ বোসের। 

এখানে লক্ষণীয় যে, ভারতের খেলোয়াড়দের বাজারমূল্যের সামঞ্জস্যতা। দলটিতে সব খেলোয়াড়েরই বাজারমূল্য কাছাকাছি। এককভাবে কারও দাম অন্যদের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি নয়।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স: 

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে ভারতীয় ফুটবল দল যথেষ্ট এগিয়ে থাকবে। তাদের শেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে ২ জয় ও এক ড্রয়ের বিপরীতে ২ ম্যাচে হারতে হয়েছে দলটিকে। তবে আশার কথা সবশেষ গত ১৯ মার্চ মালদ্বীপের বিপক্ষে এক প্রস্তুতি ম্যাচে ৩-০ গোলের বড় পেয়েছে দলটি। 

এদিকে বাংলাদেশ তাদের সবশেষ ৫ ম্যাচের মধ্যে জয় পেয়েছে ১টিতে। বিপরীতে দুই হার ও ২ ড্র দেখতে হয়েছে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যদের।

শক্তি ও দুর্বলতা: 

বাংলাদেশ দলের শক্তি হলো দলটির দ্রুতগতির আক্রমণ ভাগ, যা প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম। এছাড়া তপু বর্মণ, তারিক কাজীরা প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করতেও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশ দলের গোলবারের দায়িত্ব সামলাবেন মিতুল মারমা। বসুন্ধরা কিংসের এই গোলকিপার বর্তমানে আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। মিডফিল্ডে জামাল-হামজাদের দিকেও এ ম্যাচে থাকবে বিশেষ নজর। 

তবে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় দুর্বলতার জায়গা দলটি হলো দলটির ফিনিশিং। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মিডফিল্ডাররা বল এগিয়ে দিলেও ভালো ফিনিশিংয়ের অভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।

অন্যদিকে ভারতের শক্তির জায়গা দলটির অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারদের উপস্থিতি। তাছাড়া দলে আছে সুনীল ছেত্রীর মতো অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার যিনি যেকোন সময় ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করতে সক্ষম। 

তবে সুনীলদের চিন্তার কারণ দলটির রক্ষণভাগ। বিশেষ করে সেন্টার-ব্যাক পজিশনের দুর্বলতা দলটিকে ভোগাবে বেশ। তাছাড়া গোল স্কোরিংয়েও রয়েছে ধারাবাহিকতার অভাব