ঢাকা শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫

কোনো ভয় ছাড়া আমি ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি-বলেছিলেন ম্যারাডোনা

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৫, ০৫:০৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ফুটবল মাঠে অনবদ্য ছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী দিয়েগো ম্যারাডোনা। ক্যারিয়ারের পুরোটা সময়ই তিনি ছিলেন নানা আলোচনা সমালোচনার মুখে। তবে মাঠের বাইরের ম্যারাডোনা ছিলেন অন্যরকম। নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের পক্ষে সবসময় প্রতিবাদ করে গেছেন তিনি। সেই সুবাদে কিউবার ফিদেল কাস্ত্রো, বলিভিয়ার ইভো মোরালেসে কিংবা ভেনেজুয়েলার হুগো শ্যাভেজদের মতো বিপ্লবীদের সাথে তার ছিল গভীর বন্ধুত্ব।

এসব বিপ্লবীদের সানিধ্যেই হয়তো তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন প্রতিবাদের স্পর্ধা। যা তিনি বারবার দেখিয়েছিলেন ফিলিস্তিন ইস্যুতে।

এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুর খবরে পুরো ফুটবল বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই কিংবদন্তির মৃত্যুতে ফুটবল ভক্তদের পাশাপাশি শোকে আচ্ছন্ন হয়েছিল পৃথিবীর সকল নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষও।

ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোকের ছায়া দেখা দিয়েছিল মৃত্যু উপত্যকা ফিলিস্তিনেও। তখন ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক সংগঠন হামাসের তৎকালীন মুখপাত্র সামি আবু জুহরি টুইটারে লেখেন, ‍‍`আমরা গভীরভাবে শোকাহত, কারণ ম্যারাডোনা ছিলেন সেই কণ্ঠস্বর, যিনি ফিলিস্তিনের ন্যায্য আন্দোলনকে সমর্থন জানাতেন।‍‍` হামাসের তরফ থেকে এমন বিবৃতি আসাটা অস্বাভাবিক ছিলো না মোটেই। কারণ এই আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী বলেছিলেন, ‘‘আমার হৃদয়ে আমি ফিলিস্তিন।’

২০১৪ সালে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। যে হামলায় মারা যায় অন্তত ৩ হাজার ফিলিস্তিনি। ঐ হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে ম্যারাডোনা তখন এক বিবৃতিতে বলেছিলেন ‍‍`ইসরায়েল যা করছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক।‍‍`

এর আগে ২০১২ সালে এক সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা নিজেকে ‍‍`ফিলিস্তিনি জনগণের সবচেয়ে বড় ভক্ত‍‍` আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ‍‍`আমি তাদের শ্রদ্ধা করি এবং তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করি। আমি কোনো ভয় ছাড়া ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি।‍‍`

এমনকি সিরিয়া ইস্যু বা ইরাক যুদ্ধ নিয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন তিনি। একাধিকবার দেখা গেছে অ্যান্টি-জর্জ বুশ টি-শার্ট গায়ে দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে। তার মতো বিশ্বখ্যাত একজন খেলোয়াড়ের কাছ থেকে এসব বার্তা ছিল সাহস ও মানবতার অনন্য উদাহরণ। আজ ফিলিস্তিন যখন আগুনে জ্বলছে, তখন ভাসছে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির কথা, যিনি পৃথিবীর অন্যপ্রান্ত থেকে ভালোবেসেছিলেন একটি মুক্তিকামী জাতিকে। হয়তো তিনি আর নেই, কিন্তু তার কণ্ঠস্বর—‍‍`আমি ফিলিস্তিনি‍‍`। এখনও গাজার ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে ভেসে আসে প্রতিবাদের গান হয়ে।