চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা কে? প্রশ্নটির উত্তর যে কেউ খুব সহজেই দিয়ে দিবে। হ্যা, উত্তরটি হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। কারণ তারাই একমাত্র দল যারা এই শিরোপা জিতেছে ১৫ বার। এবার আরও একবার শিরোপার দ্বারপ্রান্তে তারা। তবে তাদের সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্সেনাল।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে মুখোমুখি হচ্ছে তারা। এই ম্যাচটির মধ্য দিয়ে ১৯ বছর পর দুই দলের প্রথম সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। এবার দুই দলের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগই সবচেয়ে বড় শিরোপার সুযোগ, তবে তাদের খেলার ধরন এবং শক্তি-সামর্থ্য বিভিন্ন দিক থেকে একে অপরকে চ্যালেঞ্জ করবে।
নিচে কিছু প্রধান দিক তুলে ধরা হলো, যেগুলো ম্যাচে পার্থক্য তৈরি করতে পারে:
মাঝমাঠের লড়াই
রিয়াল মাদ্রিদ এবং আর্সেনাল উভয়ই শক্তিশালী মাঝমাঠের অধিকারী। তবে দুটি দলের খেলায় পার্থক্য আছে। মাদ্রিদ গত মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর মধ্যে একটি, কিন্তু চলতি মৌসুমে তাদের মাঝমাঠের শক্তি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তারা প্রতিপক্ষকে অনেক সুযোগ দিচ্ছে, যা তাদের রক্ষণে ভুগানোর কারণ হতে পারে। গত কয়েকটি ম্যাচে তারা ক্লিন শিট রাখতে পারেনি এবং গোল খেয়েছে ৬১টি, যা তাদের রক্ষণে দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে, আর্সেনালের রক্ষণভাগ অনেক বেশি দৃঢ়। তাদের পোস্টে শট নেওয়ার সংখ্যা কম এবং তাদের এক্সজির (এক্সপেক্টেড গোল) বিপরীতে গোল খাওয়ার পরিসংখ্যানও খুব ভালো।
তবে আর্সেনালের যেখানে রক্ষণ অত্যন্ত শক্তিশালী, মাদ্রিদ সেখানে আক্রমণভাগে তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে বেশি মনোযোগ দেয়। কিন্তু মাঝমাঠে জায়গা দিয়ে প্রতিপক্ষের আক্রমণকে সুযোগ তৈরি করে দেয়।
আক্রমণভাগ
রিয়াল মাদ্রিদে এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগো এবং বেলিংহামদের মতো আক্রমণভাগের তারকারা আছেন। এই খেলোয়াড়রা দ্রুত গতিতে আক্রমণ করতে সক্ষম, তবে তাদের প্রেসিং দক্ষতা মাঝে মাঝে দুর্বল হতে পারে, যা মাদ্রিদের মাঝমাঠকে বিপদে ফেলতে পারে। এমবাপ্পে এবং ভিনিসিয়ুসের প্রতি আনচেলত্তির আক্রমণভাগে অতিরিক্ত দৃষ্টি থাকলেও, তাদের ওপর বাড়তি চাপের কারণে মাঝমাঠে সঠিক কভারেজ দেওয়া সম্ভব হয় না।
তবে আর্সেনাল এই মুহূর্তে আরও সংগঠিত, তাদের আক্রমণভাগের খেলা শক্তিশালী এবং তাদের প্রেসিং সামর্থ্য অনেক ভালো। বিশেষত, বুয়াকো সাকা এবং গ্যাব্রিয়েল মার্গালিয়েসের ভূমিকা আর্সেনালের আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সাকার কর্নার দেওয়ার দক্ষতা এবং মার্গালিয়েসের গোল করার ক্ষমতা আর্সেনালকে বিশেষভাবে সহায়তা করবে।
কর্নার এবং গোলকিপিং
কর্নারে গোল করার ক্ষেত্রে আর্সেনাল অনেক বেশি কার্যকর, এবং তাদের গোলকিপার দাভিদ রায়ার চ্যাম্পিয়নস লিগে ভালো পারফরম্যান্স ছিল। মাদ্রিদও কর্নার থেকে গোল করতে সক্ষম, তবে তারা কখনও আবার কর্নার থেকে গোল খেয়েছেও। কিন্তু এ ম্যাচে কোর্তোয়া এবং রায়ার পারফরম্যান্সও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, কারণ এই দুই গোলকিপারই চ্যাম্পিয়নস লিগে তাদের দলের জন্য অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে।
ম্যাচের শেষে কে জয়ী হবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করবে দলের মধ্যকার কৌশল এবং খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের ওপর। বিশেষত, রিয়াল মাদ্রিদ যদি তাদের রক্ষণে আরও সতর্ক হতে পারে এবং আর্সেনাল তাদের দুর্বলতাগুলো কাজে লাগাতে সক্ষম হয়, তবে আর্সেনাল জয়ী হতে পারে। তবে রিয়াল মাদ্রিদও তাদের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে এই ম্যাচে জয় তুলে নিতে পারে।