আফগানিস্তানের সাথে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে তাদের কাছে ৯২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৬ নভেম্বর) শারজাহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ২৩৬ রানের টার্গেট দেয় আফগানিস্তান। জবাবে গজানফরের বোলিং তোপে ১৪৩ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। গজানফর একাই নেন ৬ উইকেট।
নির্দিষ্ট রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ১২ ও ব্যক্তিগত ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন তনজিদ তামিম। এরপর সৌম্য-শান্তর ৫৩ রানের জুটি ভাঙেন আজমতউল্লাহ। ব্যক্তিগত ৩৩ রানে ফারুকির হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সৌম্য।
এরপর ক্রিজে আসেন মেহেদি মিরাজ। সঙ্গ দিতে থাকেন অধিনায়ককে। ব্যক্তিগত ২৮ রানে গজানফরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে বিদায় নেন মিরাজ।
এরপরের গল্পটা শুধুই গজানফরের। একের পর এক ব্যাটারদের আউট করে বাংলাদেশ শিবিরের মিডল-লোয়ার অর্ডার একাই দুমড়ে মুচড়ে দেন এই স্পিনার। বিদায় করেন মুশফিক, রিশাদ, তাসকিন ও শরিফুলকে। ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৭ রান আসে অধিনায়ক শান্তর ব্যাট থেকে। বাকিদের ভেতর সৌম্য, মিরাজ ও তাওহীদ হৃদয় পেরোতে পারেন এক অঙ্কের রান। আফগানিস্তানের পক্ষে গজানফরের ৬ উইকেটের পাশাপাশি ২টি উইকেট তুলে নেন রশিদ খান। এছাড়া ১টি করে উইকেট পান নবি ও আজমতউল্লাহ।
এর আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আফগান দলপতি হাশমতউল্লাহ শাহিদি। তাসকিন-মোস্তাফিজের পেস তাণ্ডবে শুরুতেই খেই হারায় আফগানরা। দলীয় ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে তারা। এরপর নবি-শাহিদির জোড়া অর্ধশতকে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় তারা। সর্বোচ্চ ৮৪ রান আসে নবির ব্যাট থেকে।
ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশকে শুরুতেই উইকেট এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফেরান রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই উইকেট পেয়ে যান মোস্তাফিজ। ১২ বলে ২ রান করা রহমত শাহ ক্যাচ দেন মুশফিকের হাতে। এখানেই থামেননি মোস্তাফিজ, নিজের পরের ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন তিনি। একে একে বিদায় করেন সাদিকুল্লাহ আতাল ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে।
এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আফগানিস্তান। গুলবাদিন নাইব ও হাশমাতুল্লাহ শহিদি মিলে গড়েন ৬১ বলে ৩৬ রানের জুটি। অবশ্য এই জুটি ভেঙে দেন তাসকিন আহমেদ। সাজঘরে ফেরান ৩২ বলে ২২ রান করা নাইবকে।
৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অনেকটাই চাপে পড়ে যায় আফগানিস্তান। কিন্তু এবার শক্ত হাতেই দলের হাল ধরেন শহিদি ও মোহাম্মদ নবি। এই দুজনের জুটিতে এগিয়ে যেতে থাকে আফগানিস্তান। দুজনেই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।
জুটির সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর এটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১২২ বলে ১০৪ রানের এই জুটি ভাঙেন তিনি শহিদীকে বোল্ড করে। ৯২ বলে ৫২ রান করে ফেরেন হাশমাতুল্লাহ। ঝড়ো ব্যাটিং শুরুর আগেই রশিদ খানকে ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজ।
রশিদকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট পান শরিফুল। ১১ বলে ১০ রান করেন রশিদ। ম্যাচের ৪৮তম ওভারে নবিকে আউট করেন তাসকিন। আউট হবার আগে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৯ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ দিকে ২৮ বলে ২৭ রান করে আফগানদের সংগ্রহ আরও একটু বাড়িয়ে দেন নাগাইলি খারোতে। শেষ পর্যন্ত ২৩৫ রানে থামে আফগানদের ইনিংস।
আগামী শনিবার একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দু’দল।
আপনার মতামত লিখুন :