ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় সিরিজ জয়ের হাতছানি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ১১:৩৫ এএম

বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় সিরিজ জয়ের হাতছানি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

টেস্ট ইতিহাসে গত ২৪ বছরে ঘরে-বাইরে মিলিয়ে দেড়শ’র কাছাকাছি (১৪৩টি) টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র ২০টি জয় আর ১৮টি ম্যাচে ড্র-ই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের অর্জন। ম্যাচ খেলার বিপরীতে বাংলাদেশের এই সাফল্য খুবই নগণ্য! ওয়ানডে ক্রিকেটে যেভাবে সুনাম করেছে টাইগাররা। সেই তুলনায় টেস্ট ক্রিকেট সেভাবে এগোতে পারেনি। তবে সম্প্রতি সাদা পোশাকের ক্রিকেটে উন্নতির গ্রাফটা ঊর্ধ্বমুখী-ই বলতে হবে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বহু আকাঙ্খিত জয় পাওয়ায় এই গ্রাফটা আরও উর্ধ্বমুখী হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের পাকিস্তানকে তাদের ঘরের মাটিতে টেস্ট ম্যাচে ১০ উইকেটে হারানো অনেক গৌরবের। অবশ্য পাকিস্তানের বিপক্ষে অবিস্মরণীয় ম্যাচ জয়ের পর এখন আরেকটি রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে। ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো বিদেশে মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ তাদের সামনে।

এর আগে মাত্র একবারই বিদেশের মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে চতুর্থ দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জয়ের সামনে টাইগাররা। সব মিলিয়ে গত দুই যুগে মোট ৫৯টি দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বিদেশের মাটিতে ২৫টি দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজ খেলেছে তারা। জয় এসেছে একটি মাত্র সিরিজে। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে জিতেছিল তারা।

এছাড়া বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্য বলতে মাত্র তিনটি দুই ম্যাচের সিরিজে ড্র করা। ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে, ২০১৭ সালে শ্রীলংকা ও ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানের ড্র করেছিল বাংলাদেশ দল। ঘরের মাঠে ৩৪টি দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা মাত্র দুটিতে। সব মিলিয়ে দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজ জয়ের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩। এবার পাকিস্তানকে হারাতে পারলে এই সংখ্যা ৪ হবে।

শুধু বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয়বারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়-ই নয়, ২০১৭ সালে শ্রীলংকার পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হারানোর গৌরবও অর্জন করবে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় তো স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায়। এরই মধ্যে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কাছে হেরে তোপের মুখে আছে পাকিস্তান। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে যেকোনো মূল্যে জিততে হবে- এমন মনোভাব নিয়ে খেলার প্রবণতা থাকবে তাদের। প্রচ- চাপের মধ্যে থাকা হতাশায় মোড়ানো পাকিস্তানকে সিরিজের হারানোর এটাই বড় সুযোগ।

এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন প্রথম ম্যাচে ঐতিহাসিক জয় পাওয়া বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে সর্বশক্তি বিনিয়োগ করবে তারা। জানা গেছে, টেস্ট খেলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত তাসকিন আহমেদ। তাকে খেলানো হবে দ্বিতীয় টেস্টে। এক্ষেত্রে নবীন নাহিদ রানা একাদশ থেকে বাদ পড়তে পারেন। কেননা প্রথম ম্যাচে বোলিংয়ে বেশ খরুচে ছিলেন এই তরুণ পেসার। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে পাকিস্তানে ম্যাচ খেলে দীর্ঘ সময় বোলিং করার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া নাহিদের জায়গায় নামানো হবে তাসকিনকে। এতে বাংলাদেশের পেস আক্রমণের শক্তি আরও বাড়বে।

রাওয়ালপিন্ডির যে উইকেট, তাতে তাসকিনের বোলিং কার্যকরি হতে পারে। যদিও প্রথম ম্যাচের মতো উইকেট পাবে না বাংলাদেশ। হোম অ্যাডভান্টেজের সুবিধা আদায় করে নেওয়ার জন্য নিজেদের মতো করে উইকেট বানানোর চেষ্টা করবে পাকিস্তান। তবে পেসারদের জন্য উইকেটে ভালো কিছুই থাকতে পারে। অপর দিকে, হত্যা মামলার অভিযোগ মাথায় নিয়ে খেলছেন সাকিব আল হাসান। প্রথম ম্যাচে বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তিনি। দ্বিতীয় টেস্টেও থাকবেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। তাকে চিন্তামুক্ত হয়ে খেলতে বার্তা দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। তাই নির্ভার হয়ে খেলবেন সাকিব। আশা করা হচ্ছে, ব্যাটাররা যে ছন্দে আছেন, তাতে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটিও জয়ে রাঙানোর আশা বাংলাদেশের।

অন্যদিকে, তুমুল সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হওয়া পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবেন। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো অবস্থা এখন তাদের। তাই নিজেদের নিংড়ে দিয়ে সাফল্য পেতে চাইবেন তারা। এরই মধ্যে পাকিস্তান দলে পরিবর্তন আনা হয়েছে। দ্বিতীয় টেস্টের জন্য দলে ডাকা হয়েছে আবরার আহমেদ ও কামরান গুলামকে। পাকিস্তান শাহিনসের হয়ে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে খেলেছেন এই দুজন। আবরার লেগ স্পিনে পারদর্শী। কামরান মিডল অর্ডারে ভূমিকা রাখতে পারেন। এছাড়া প্রতিভাবান অলরাউন্ডার আমির আজমকেও দলে ডাকা হয়েছে।

তবে তার ফিটনেসের ওপর নির্ভর করছে, তিনি খেলতে পারবেন কিনা। দলে যোগ দিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। পাকিস্তানের পেস বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেবেন এই গতি তারকা।

আরবি/জেআই

Link copied!