রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। এতে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছে টাইগাররা। এই জয়ে পাকিস্তানিদের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের বিপক্ষে পুরো সিরিজজুড়ে ক্রিকেটের অসাধারণ প্রদর্শনী দেখিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। দুই ম্যাচের সিরিজে ব্যাট হাতে করেছেন ১৫৫ রান। আর বল হাতে তুলে নিয়েছেন ১০ উইকেট। এতে সিরিজসেরা নির্বাচিত হয়েছেন এই টাইগার অলরাউন্ডার।
আর দ্বিতীয় টেস্টে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে অসাধারণ সেঞ্চুরি করেন লিটন দাস। খেলেন ১৩৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। যার জন্য ম্যাচের পর সেই অসাধারণ কীর্তির স্বীকৃতিও পেয়েছেন লিটন। নির্বাচিত হয়েছেন ম্যাচসেরা হিসেবে।
টাইগাররা প্রথম টেস্টে দাপুটে জয় পেলেও দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের জয়টি একরকম অবিশ্বাস্য ছিল। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এরপর লিটন দাসের সঙ্গে ১৫৬ রানের অনবদ্য এক জুটি করেন মিরাজ। তবে সেঞ্চুরি করতে আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয় মিরাজকে। ৭৮ রানে আউট হয়ে যান তিনি। তবে মিরাজ আউট হলেও লিটন টিকে ছিলেন প্রায় শেষ অব্দি। ব্যক্তিগত ১৩৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের মধ্য দিয়ে দলকে নিয়ে যান শক্ত অবস্থানে।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য মিরাজ বা লিটন কাউকেই মাঠে নামতে হয়নি। তার আগেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান।
সিরিজসেরার পুরস্কার জিতে মিরাজ বলেন, ‘আমি সত্যিই খুব খুশি, প্রথমবার দেশের বাইরের সিরিজে এই পুরস্কার পেলাম। অলরাউন্ডার হিসেবে খেলা অনেক কঠিন কাজ, আমি শুধুমাত্র স্ট্রাইক বাড়াতে চেয়েছি এবং মুশি (মুশফিকুর রহিম) ও লিটন দাসের সঙ্গে ব্যাটিংটা উপভোগ করেছি। পাঁচ উইকেট পেয়ে অবশ্যই আনন্দিত, তবে এরচেয়েও ভালো করার চেষ্টা ছিল। আমি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলিনি, ফলে ঘরে কাটানোর মতো কিছু সময় পেয়েছি এবং ওই সময়েও আমার প্রতি ম্যানেজমেন্টের প্রচেষ্টার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা।’
সিরিজসেরা হয়ে টাইগার এই অলরাউন্ডার ৫ লাখ পাকিস্তানি রুপি অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। সেই অর্থ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মিরাজ বলেন, ‘ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এক রিকশাচালক আহত হয়েছিলেন, পরে তিনি মারা যান। পুরস্কার হিসেবে পাওয়া অর্থ তার পরিবারকে দেবো।’
এছাড়া ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে লিটন বলেন, ‘এটি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য একটা বড় অর্জন। এই দলের অংশ হয়ে আমি খুব খুশি। আমি আর মিরাজ যখন ব্যাটিং করছিলাম। আসলে কৃতিত্বটা মিরাজকে দিতে হয়। সে শুরুতে কয়েকটা বল মোকাবেলা করেছিল। আমি আঘাত পেয়েছি (কনুইতে) এবং যে কারণে মারতে পারিনি। মিরাজ ৫-৬ টা বাউন্ডারি মারার পর আমাদের জন্য সহজ হয়ে যায়।’
আপনার মতামত লিখুন :