ভ্রমণের জন্য সব দেশই সুন্দর। তবু কিছু দেশে অন্য দেশের তুলনায় মানুষ বেশি ভ্রমণ করেন। আজ আপনি এমন দেশগুলোর কথা জানতে চলেছেন, যেসব দেশে জীবনে একবার হলেও আপনার যাওয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্র
২০২৩ সালে ৪১ দশমিক ৮ মিলিয়ন পর্যটকের আগমন হয় যুক্তরাষ্ট্রে। এখানে অনেক সুপরিচিত ভ্রমণের স্থান ও নিদর্শন রয়েছে। নিউইয়র্ক, লাস ভেগাস, ফ্লোরিডা, লস এঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো যুক্তরাষ্ট্রের ভীষণ জনপ্রিয় শহর। ম্যাজিক কিংডম, ওয়াল্ট ডিজনি ওয়ার্ল্ড রিসোর্ট, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্ক, স্ট্যাচু অব লিবার্টি, ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক, ইউনিভার্সাল স্টুডিও হলিউড ইত্যাদি যুক্তরাষ্ট্র আকর্ষণের প্রধান কিছু নিদর্শন।
থাইল্যান্ড
সুন্দর সমুদ্রসৈকত, সুখী মানুষজন, স্বল্প খরচে জীবনযাত্রা থাইল্যান্ডকে অন্যতম দর্শনীয় দেশ হিসেবে বিবেচনা করায়। ব্যাংককের প্রাণবন্ত পরিবেশ, কোহ সামুইয়ের শান্ত সৌন্দর্য, ফাং নাগার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য, ক্রাবির শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য- সবই থাইল্যান্ড ভ্রমণে আকর্ষণ করে।
চীন
চীন এশিয়া মহদেশের পূর্ব অঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। চীন একটি পর্বতময় দেশ। এর মোট আয়তনের দুই-তৃতীয়াংশ পর্বত, ছোট পাহাড় এবং মালভূমি নিয়ে গঠিত। দেশটি বিলিঙ্গুয়ান প্রাকৃতিক অঞ্চল থেকে হলুদ এবং ইয়াংজি নদী পর্যন্ত বিচিত্র প্রাকৃতিক পরিবেশে সমৃদ্ধ।
একইসাথে দেশটির সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অপূর্ব স্থাপত্য নকশার জন্ম দিয়েছে। লম্বা লম্বা শৈল্পিক বিল্ডিং চিনের শহরগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। চিনে অবস্থিত উল্লেখযোগ্য পর্বতমালার মধ্যে আছে মাউন্ট হুয়াংশান, মাউন্ট তাইশান, মাউন্টেন হেনশান এবং মাউন্ট এভারেস্ট।
আর চীনে ভ্রমণের কথা উঠলেই আমাদের চোখের সামনে সবার আগে ভেসে উঠে চীনের মহাপ্রাচীর ‘দ্যা গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাচীর এবং চীনের প্রতীক। প্রাচীরটি চীনের পূর্ব উপকূল থেকে পশ্চিম সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৫,০০০ কিলোমিটার।
ফিজি
ওশেনিয়া মহাদেশের এ দেশটি ৩০০টি দ্বীপের সমন্বয়ে গড় উঠেছে। এখানকার দৃষ্টিনন্দন সব সৈকত, সমুদ্রের তলদেশের মনোমুগ্ধকর প্রবাল রাজ্য, এবং আকর্ষণীয় সংস্কৃতি অন্বেষণ করার জন্য পর্যটকেরা ছুটে আসেন।
মালদ্বীপ
মালদ্বীপের পরিচিতি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় স্বর্গ হিসেবে। টলটলে স্বচ্ছ পানি, বালুময় সৈকত ও সামুদ্রিক প্রাণীদের জীবন কাছ থেকে দেখতে দেশটি ঘুরে আসতে পারেন। মালদ্বীপ অনেকগুলো দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দেশ। দেশটির দ্বীপগুলোতে বিলাসবহুল হোটেল ও রিসোর্ট আছে, যেখানে পর্যটকরা ডুবসাঁতার থেকে ডাইভিং- সব ধরনের অভিজ্ঞতাই নিতে পারবেন। বাংলাদেশিদের জন্য দেশটিতে অন অ্যারাইভাল ভিসার ব্যবস্থা আছে।
ফ্রান্স
বিশ্বের সর্বাধিক ভ্রমণকৃত দেশের তালিকার শীর্ষে রয়েছে ফ্রান্স। প্যারিস, নিস, লিয়ন, মার্সেই, টুলুস দেশটির সর্বাধিক দর্শনীয় শহর। প্যারিসের আইফেল টাওয়ার, ল্যুভর মিউজিয়াম, নরম্যান্ডির দ্বীপ মন্ট সেন্ট মিশেল, ভার্সাই প্যালেস- স্থানগুলো পর্যটকদের ফ্রান্স ভ্রমণে আকৃষ্ট করে।
স্পেন
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদ দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় শহর আর প্রাডো মিউজিয়াম শহরটির জনপ্রিয় স্থান। এ ছাড়াও বার্সেলোনা শহর, শহরটির গির্জা সাগ্রাদা ফামিলিয়া, পার্ক গুয়েল, গ্রানাডার আলহাম্বরা প্যালেস, ভ্যালেন্সিয়া আর সেভিয়াসহ আকর্ষণীয় জায়গাগুলো দেখতে প্রতি বছর স্পেনে যান লাখো পর্যটক।
তুরস্ক
তুরস্ক এশিয়া ও ইউরোপের সংযোগস্থল। প্রাচীন ঐতিহ্য, দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সংস্কৃতির দেশ এটি। পর্যটকরা এখানে অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার, রঙিন বাজার, সাগরের নির্মল পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন। তুরস্ক ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশিদের ই-ভিসার আবেদন করতে হবে। দেশটিতে ভ্রমণের আগেই এই ভিসা আবেদন করতে হবে।
সুইজারল্যান্ড
পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ বলা হয় যে দেশটিকে তার নাম সুইজারল্যান্ড। দেশটি বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে অন্যতম কাঙ্খিত গন্তব্য। তবে শুধু বেড়ানোর জন্যই নয়, সব বিচারেই দেশ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছে ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটি। আয়তনে ছোট হলেও দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণ। ইউরোপের পাহাড়ী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সুইজারল্যান্ড। এর আয়তনের ৭০ শতাংশ ঘিরে রয়েছে আল্পস পর্বতমালা। সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে উঁচু পর্বতের নাম মন্টি রোজা।
দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকা গোটা আফ্রিকা মহাদেশের সেরা সাফারি গন্তব্যস্থলের মধ্যে একটি। ক্রুগার ন্যাশনাল পার্কসহ দেশটির বেশিরভাগ জাতীয় উদ্যানে “বিগ ৫” এর দেখা মেলে। পুরো আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে একমাত্র বোল্ডারস বিচেই পেঙ্গুইনের দেখা মেলে। যা এই দক্ষিণ আফ্রিকাতেই অবস্থিত।
দেশটির তিনটি রাজধানীর একটি কেপ টাউনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা না বললে দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্রমন স্থানগুলির কথা অধরাই থেকে যায়। এখানে কেপ পয়েন্ট, টেবিল পর্বত সহ আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এছাড়াও দেশটির অনেক প্রধান বন্দর এখানে অবস্থান করছে। ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের দিক থেকে এটিকে বিশ্বের সুন্দরতম শহরগুলির মধ্যে ধরা হয়ে থাকে, একইসাথে দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হল এটি।
আপনার মতামত লিখুন :