ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫

ঢাকার কাছে একদিনে বেড়ানোর কয়েকটি ভ্রমণ স্থান

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ১১:৩৯ এএম

ঢাকার কাছে একদিনে বেড়ানোর কয়েকটি ভ্রমণ স্থান

ছবি: সংগৃহীত

কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই প্রিয়জনকে সময় দিতে পারেন না ঠিকমতো। এতে হয়তো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর হাজারোটি অভিযোগ । তাই প্রিয়জনের অভিমান ভাঙাতে আজই তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন। ঘুরে আসুন ঢাকার আশপাশের দর্শনীয় স্পট থেকে।

মায়াদ্বীপ
নারায়ণগঞ্জ জেলার বারদী ইউনিয়নের মায়াদ্বীপ হতে পারে বিশেষ দিনের বিকাল কাটানোর দারুণ এক স্থান। মায়া দ্বীপ হলো মেঘনা নদীর বুকে ভেসে ওঠা একটি দারুণ সুন্দর চরের নাম। ঐতিহাসিক সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী বারদী ইউনিয়নের অন্তর্গত নুনেরটেক গ্রামেই মায়া দ্বীপের অবস্থান। এ গ্রামটি মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন।

মিনি কক্সবাজার
মৈনট ঘাটকে বলা হয় ‘মিনি কক্সবাজার’। সমুদ্রের বেলাভূমির ছোট সংস্করণ এটি। সূর্যাস্ত দেখার দারুণ অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।  ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। ঢাকা থেকে দূরত্ব প্রায় ৫৬ কিলোমিটার। 


নদীর অপর পাড়ে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। মৈনট ঘাটের এই হঠাৎ খ্যাতি ঘাটের দক্ষিণ পাশের চরটির জন্য। পথিমধ্যে পড়বে লক্ষ্মীপ্রাসাদ, জজবাড়ি, উকিলবাড়ি, আন্ধার কোঠা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান। শুকনো মরিচের সঙ্গে ডুবো তেলে ইলিশ ভাজা এই ঘাটের অন্যতম আকর্ষণ।

নুহাশপল্লী
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ ব্যক্তিজীবনে একজন সফল ও রুচিশীল মানুষ।  লেখালেখির ভুবনে অন্যান্য লেখকদের চেয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর আর্থিক অবস্থা ছিল অনেক ভালো। তাঁর শৈল্পিক চিন্তার ফসল হল গাজীপুরের পিরুজ আলী গ্রামের নুহাশপল্লী। হুমায়ূন আহমেদের বড় ছেলে নুহাশ হুমায়ূনের নামানুসারে পল্লীটির নাম রাখা হয় ‘নুহাশপল্লী’। 

নুহাশপল্লীর উদ্যানের পূর্বদিকের খেজুর বাগানের পাশে ‘বৃষ্টিবিলাস’ নামে একটি অত্যাধুনিক ঘর রয়েছে। এর ছাদ টিনের তৈরি; যেন বৃষ্টি হলে শব্দ উপভোগ করা যায়। বৃষ্টির শব্দ শুনতে এই আয়োজন। সুন্দর নকশা, ফলস সিলিং দেওয়া ঘরটি অনেক সুন্দর।

একটু ভেতরে আরেকটি বাংলো রয়েছে যার নাম ‘ভূতবিলাস’। দুই কক্ষের আধুনিক বাংলোটির পেছনে ছোট পুকুর রয়েছে। যার চারিদিক সুন্দর ঘাসে মোড়া ঢাল দিয়ে ঘেরা, এই ঢালের চারিদিকে রয়েছে গাছ-গাছালি। ভূতবিলাসের পাশ দিয়ে একটি নড়বড়ে কাঠের সাঁকো রয়েছে। যেটার ওপর দিয়ে হেঁটে পুকুরের মাঝখানের ছোট্ট এক টুকরো দ্বীপাকারের ভূখণ্ডে যাওয়া যায়।

ছুটি রিসোর্ট
গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঘেঁষা জনপ্রিয় ছুটি রিসোর্টের জায়গা প্রায় ৫০ বিঘা। যেখানে রয়েছে স্পোর্টস জোন, সুইমিংপুল, রেস্তোরাঁ এবং ক্যাম্পিংয়ের জায়গা। ২১টি কটেজের পাশাপাশি এখানকার ছনের ঘর, মাছ ধরার সুযোগ, নৌকা ভ্রমণ, পিঠাপুলী এবং সবজি ও ফুল-ফলের বাগান আকৃষ্ট করে দর্শনার্থীদের। তবে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে পাখির কলকাকলি, বাদুড় ও শিয়ালের হাঁক, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক এবং জোনাকি আলো। গাজীপুর চৌরাস্তায় থেকে ডিসি অফিসের পর থেকে তিন কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত আমতলী বাজারের কাছাকাছি গেলেই চোখে পড়বে ছুটি রিসোর্ট।

পদ্মারিসোর্ট , মাওয়া 
পদ্মা নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই রিসোর্টের কটেজগুলোতে বেশ আরামদায়ক এবং নিরিবিলিতে সময় কাটাতে পারবেন। কটেজগুলোর নামকরণও করা হয়েছে বেশ সুন্দরভাবে। ১২টি কটেজের নাম রাখা হয়েছে বাংলা বছরের ১২টি মাসের নামানুসারে। আর বাকি চারটির নাম নেওয়া হয়েছে চারটি ঋতু থেকে। যদি ভরা বর্ষায় আসেন তাহলে কটেজগুলোর সামনে পানি টলমল করবে। এর ওপর কাঠের তৈরি রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা করতে হয়। মনে হয় কটেজগুলো যেন ভেসে আছে পানিতে।

ছুটির দিন কিংবা ঈদের বন্ধ ছাড়া বুকিং না করে গেলেও সাধারণত কটেজ খালি পাওয়া যায়। বুকিংয়ের জন্য পদ্মা রিসোর্টের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সব তথ্য পাওয়া যাবে। এখানে যদি শুধু দিনের বেলা ভাড়া করতে চান, তাহলে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত থাকতে পারবেন এবং সেক্ষেত্রে ভাড়া লাগবে ২৩০০ টাকা। আর যদি দিনসহ রাতও কাটাতে চান, তাহলে ভাড়া লাগবে ৩৪০০ টাকা। মোট ১৬টি কটেজ। এই কটেজগুলোই মূল আকর্ষণের জায়গা। ফোন- ০১৭৩৭৪৫৮৮৬৬,০১৬৮৯৭৭৭৪৪৪।

সোহাগপল্লী
১১ একর উঁচু-নিচু জমিতে সবুজে ঘেরা এই রিসোর্টের অন্যতম আকর্ষণ হলো জলাশয়ের ওপর নির্মিত অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত ঝুলন্ত সাঁকো আর এর পিলার ও বেলকনিতে খোঁদাই করা বিভিন্ন কারুকাজ- যা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। বিশাল এক জলাশয়ের মাঝখানে ঝুলন্ত সাঁকো থাকায় দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে বেশি। জলাশয়ের পূর্ব পাশে রয়েছে একটি দ্বিতল রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টটির নাম রাখা হয়েছে মেজবান। শুধু তাই নয়, কৃত্রিমভাবে একটি লেক নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে বর্ষা বা শুষ্ক সবসময়ই পানি থাকে। আর এই লেকের পানিতে বিভিন্ন জাতের মাছের বিচরণ দেখা যায়। ফোন- ০১৭১২০৪৯৯০৩-০৪,০১৬১২০৪৯৯০।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!