বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৯:০৭ এএম

কার্নির আগাম নির্বাচন ঘোষণা

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৯:০৭ এএম

কার্নির আগাম নির্বাচন ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় পার্লামেন্ট ভেঙে ২৮ এপ্রিল আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন মার্ক কার্নি।

রোববার (২৩ মার্চ) এই প্রত্যাশিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচার শুরু হয়েছে। জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই কার্নি এই পদক্ষেপ নিলেন।  

রোববার অটোয়ায় কার্নি সাংবাদিকদের বলেন ‘আমরা আমাদের জীবদ্দশায় সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছি, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যায্য বাণিজ্য নীতি ও আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি তার হুমকির কারণে সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি গভর্নর জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ারও অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমি কানাডিয়ানদের কাছে শক্তিশালী ও ইতিবাচক ম্যান্ডেট চাই, যাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মোকাবিলা করতে পারি এবং এমন একটি নতুন কানাডিয়ান অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারি, যা সবার জন্য কাজ করবে। কারণ, আমি জানি আমাদের বড় ধরনের পরিবর্তন দরকার। ইতিবাচক পরিবর্তন।’

আগাম নির্বাচনের কৌশল

নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন অক্টোবরের ২০ তারিখের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল। তবে বিশ্লেষকদের মতে, লিবারেল পার্টির চলমান জনপ্রিয়তার সুবিধা নিতে কার্নি আগাম ভোট ডাকছেন।  

২০১৫ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা লিবারেলরা সাম্প্রতিক সময়ে সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে জানুয়ারিতে ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার পর এবং ট্রাম্পের ক্রমাগত হুমকির প্রেক্ষিতে।  

মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্কারোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্যে পরিণত করার দাবির কারণে দেশজুড়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এর ফলে লিবারেল সরকারের যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কঠোর অবস্থান জনগণের সমর্থন পাচ্ছে।  

যদিও গত কয়েক বছরে বাড়ির উচ্চমূল্য এবং জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধির কারণে লিবারেলরা সমালোচিত হয়েছে, সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে তারা এখন কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে সমানে সমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।

এ বছর জানুয়ারিতেও কনজারভেটিভ পার্টি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল এবং সহজেই বিজয়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।  

‘কার্নি চাইছেন, জনগণের মনোযোগ এখনো ট্রাম্প প্রশাসনের শক থেকে মুক্ত না হওয়ার আগেই ভোট অনুষ্ঠিত হোক,’ বলেছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালগারির রাজনৈতিক বিশ্লেষক লিসা ইয়ং।  

কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কই মূল ইস্যু

ট্রাম্প বারবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছেন, যা কানাডিয়ান জাতীয়তাবাদকে উসকে দিয়েছে। এছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের উচ্চহারে শুল্কারোপ কানাডার অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন।  

এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবারের নির্বাচনের প্রধান প্রশ্ন হবে- কোন দল এবং নেতা ট্রাম্পের মোকাবিলা করতে সবচেয়ে বেশি সক্ষম হবে।

‘এবং এই প্রশ্নের উত্তর লিবারেল নেতা মার্ক কার্নির পক্ষেই বেশি যায়,’ ইয়ং মন্তব্য করেন।  

সাম্প্রতিক ইপসোস জরিপ অনুযায়ী, কার্নি বর্তমানে সব ফেডারেল দলের নেতাদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। তিনি ট্রাম্পের শুল্কারোপ ও এর অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় সবচেয়ে দক্ষ নেতা হিসেবে জনগণের আস্থাও অর্জন করেছেন।  

কার্নি ঘোষণা করেছেন যে, ট্রুডোর নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তিনি মার্কিন শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবেন।  

তিনি ট্রাম্পের কানাডা দখল পরিকল্পনাকে উন্মাদনা হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘কানাডার সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ সম্মান না জানালে আমি ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় বসব না।’

অন্যদিকে, বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে প্রচারণায় নেমেছে। কিন্তু দলটির নেতা পিয়েরে পয়লিয়েভ্রে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকেই।  

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মতোই উত্তেজনাপূর্ণ বক্তৃতা ও কটাক্ষমূলক রাজনীতি করেন, যা অনেকের মনে প্রশ্ন তুলেছে- তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী হন, তবে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে সামলাবেন?  

তবে পয়লিয়েভ্রে লিবারেলদের এক দশকের শাসনকে ব্যর্থ বলে দাবি করে বলেছেন, ‘কানাডিয়ানরা আমার ওপর ভরসা রাখতে পারে। আমি আমাদের দেশকে রক্ষা করব এবং সব সময় কানাডার স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দেব।’

তিনি প্রচারণা শুরুর সময় আরও বলেন, ‘আমি জানি অনেক মানুষ এখন উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ এবং আতঙ্কিত। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এই আতঙ্ক এবং রাগকে আমরা ইতিবাচক পদক্ষেপে রূপান্তর করতে পারি।’

সিবিসি (CBC) নিউজের সর্বশেষ জনমত জরিপ অনুযায়ী, লিবারেল পার্টি বর্তমানে ৩৭.৫% সমর্থন পাচ্ছে, যেখানে কনজারভেটিভদের সমর্থন ৩৭.১%।  

বামপন্থী নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (NDP), যার নেতা জগমীত সিং, তৃতীয় স্থানে রয়েছে ১১.৬% সমর্থন নিয়ে। ইয়েভ-ফ্রাঁসোয়া ব্লানশের ব্লক কিউবেকোয়া দল রয়েছে চতুর্থ স্থানে ৬.৪% সমর্থন নিয়ে।  

এই নির্বাচনে কানাডার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে (হাউস অব কমন্স) ৩৪৩টি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।  

কানাডার সংসদীয় ব্যবস্থায়, যে দল সর্বাধিক আসন জিতবে, সাধারণত সেই দল সরকার গঠন করতে পারবে। দলটির নেতা হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।  

সূত্র: আলজাজিরা

আরবি/এসএস

Link copied!