মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৫, ১২:১৭ পিএম

টেসলার বিরুদ্ধে হামলাকে ‘গৃহসন্ত্রাস’ ঘোষণা ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৫, ১২:১৭ পিএম

টেসলার বিরুদ্ধে হামলাকে ‘গৃহসন্ত্রাস’ ঘোষণা ট্রাম্পের

ছবিঃ সংগৃহীত

টেসলা ডিলারশিপ ও শোরুমের ওপর হামলাকে ‘গৃহসন্ত্রাস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এই ধরণের হামলায় জড়িত থাকবে, তাদের নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হবে।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, যেখানে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কও উপস্থিত ছিলেন।  

এই ঘোষণার পরপরই টেসলার শেয়ারের মূল্য প্রায় ৪% বেড়ে যায়। এর আগের দিন, একদিনের ব্যবধানে কোম্পানির শেয়ারমূল্য প্রায় সাড়ে চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতনের শিকার হয়েছিল।

তবে ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসে নিজের অফিসের জন্য একটি নতুন টেসলা বেছে নেন এবং মাস্কের পাশে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে সমর্থন জানান, তখন বিনিয়োগকারীদের আস্থা কিছুটা ফিরে আসে।  

কেন চলছে টেলসা টেকডাউন  (Tesla Takedown) আন্দোলন?

সম্প্রতি টেলসা টেকডাউন নামে একটি প্রতিবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছে, যেখানে সক্রিয় কর্মীরা টেসলার শোরুম ও ডিলারশিপে বিক্ষোভ করছে। তাদের অভিযোগ, এলন মাস্ক ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মী সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমাচ্ছেন এবং বিভিন্ন মানবিক সহায়তা প্রকল্পের সরকারি অর্থায়ন বাতিল করছেন। মাস্ক বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের "ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE)" এর প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র হ্যারিসন ফিল্ডস বলেছেন, চরমপন্থী বামপন্থী কর্মীদের টেসলার বিরুদ্ধে সহিংস হামলা গৃহসন্ত্রাসের শামিল।

গত সপ্তাহে ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে টেসলার একটি ডিলারশিপের সামনে ৩৫০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী সমবেত হয় এবং নিউইয়র্ক সিটির একটি টেসলা শোরুমে হামলার ঘটনায় ৯ জন গ্রেপ্তার হয়। এছাড়াও, মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, টেসলার বিভিন্ন শোরুম ও গাড়িতে নানারকম নাশকতার ঘটনা ঘটেছে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন।

টেলসা টেকডাউন  আন্দোলনকারীদের পাল্টা দাবি  

তবে টেলসা টেকডাউন আন্দোলনের সংগঠকরা দাবি করেছেন, তারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছে এবং সহিংসতার সঙ্গে জড়িত নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্লুস্কাই-তে দেওয়া এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কোনোভাবেই গৃহসন্ত্রাস নয়। আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু আমরা দমে যাব না।’
তারা আরও লোকজনকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।  

বিচার বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন চাইলে টেসলার শোরুম ও ডিলারশিপ ভাঙচুরকারীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করতে পারে। তবে এটি কতটা আইনসম্মত হবে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনে ‘সন্ত্রাসবাদ’ সংজ্ঞায়িত হয়েছে এমন সহিংসতা হিসেবে, যা সরকার বা নাগরিকদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে করা হয়। শুধুমাত্র শোরুম ভাঙচুর করা সেই সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে কি না, তা আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।  

টেসলার উৎপাদন দ্বিগুণের ঘোষণা

এদিকে, ট্রাম্পের টেসলা গাড়ি কেনার সিদ্ধান্তকে মাস্কের প্রতি বড় ধরনের সমর্থন হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট একটি লাল রঙের টেসলা মডেল S বেছে নিয়েছেন, যার মূল্য শুরু হয় প্রায় ৮০,০০০ ডলার থেকে।

ট্রাম্প নিজেই গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে বলেন, ‘আমি আর গাড়ি চালাতে পারি না, তবে এটি হোয়াইট হাউসে আমার কর্মীদের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে।’

টেসলার ভবিষ্যৎ নিয়ে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে মাস্ক ঘোষণা দেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে টেসলার উৎপাদন দ্বিগুণ করা হবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চমৎকার নীতির কারণে এবং আমেরিকার প্রতি আমাদের বিশ্বাসের নিদর্শন হিসেবে, টেসলা আগামী দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি উৎপাদন দ্বিগুণ করবে। বলেছেন মাস্ক।  

টেসলার বাজার পরিস্থিতি ও মাস্কের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা

২০২১ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি নির্দেশনা জারি করেছিলেন, যেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া গাড়ির ৫০% ইলেকট্রিক করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে সেই নির্দেশনা বাতিল করেন এবং ইলেকট্রিক গাড়ির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।  

টেসলার বাজারমূল্য ২০২১ সালের ডিসেম্বরের সর্বোচ্চ ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে অর্ধেকে নেমে এসেছে। এর প্রধান কারণ-  

  • গাড়ি বিক্রি ও মুনাফা হ্রাস

  • মাস্কের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ

  • রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যস্ত থাকার কারণে ব্যবসায় মনোযোগ হারানোর শঙ্কা

তবে মাস্ক দাবি করেছেন, তিনি এখনও টেসলার সিইও হিসেবেই থাকবেন। তিনি বলেন, ‘যতদিন আমি কাজে লাগছি, ততদিন ওয়াশিংটনে থাকব। তবে টেসলার দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছি না।’

টেসলা নিয়ে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক উত্তেজনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ও ব্যবসায় খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এলন মাস্কের ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রাজনৈতিক বিতর্ক বাড়াচ্ছে, যেখানে একদিকে তাকে চরম সমর্থন দেওয়া হচ্ছে, আবার অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে।  

এখন প্রশ্ন হলো, টেসলা কি এই রাজনৈতিক বিতর্কের বাইরে গিয়ে ব্যবসায়িক সাফল্য ধরে রাখতে পারবে? নাকি মাস্কের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা কোম্পানির শেয়ার ও বাজারমূল্যকে আরও অনিশ্চিত করে তুলবে? এসব প্রশ্নের উত্তর সময়ই বলে দেবে।

সূত্র: রয়টার্স 

আরবি/এসএস

Link copied!