মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৫, ১০:০৩ এএম

বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরও বিমান হামলা চলমান

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৫, ১০:০৩ এএম

বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পরও বিমান হামলা চলমান

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে ১,৬০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যেও যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সামরিক জান্তা।

জাতিসংঘ এই হামলাগুলোকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছে।  

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রুজ বলেন, ‘এটি অবিশ্বাস্য যে একদিকে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মানুষদের উদ্ধার প্রচেষ্টা চলছে, আর অন্যদিকে সামরিক বাহিনী বোমা বর্ষণ করছে।’

তিনি মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রতি সব সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানান এবং বলেন, ‘যে কেউ সামরিক বাহিনীর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাদের এখনই চাপ সৃষ্টি করতে হবে এবং স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে যে এটি গ্রহণযোগ্য নয়।’

ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিমান হামলা

এ হামলায় উত্তর শান প্রদেশের নাউংচো শহরে একটি বিমান হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন বলে জানা যায়। এই হামলাটি স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চালানো হয়, যা ভূমিকম্প আঘাত হানার তিন ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ঘটে।  

গণতন্ত্রপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলের চ্যাং-উ টাউনশিপে, যা ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল, সেখানে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া, থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।  

প্রতিরোধ বাহিনীর সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা

সামরিক জান্তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে লড়াইরত জাতীয় ঐক্য সরকার (NUG) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে ভূমিকম্প-আক্রান্ত এলাকায় তাদের সামরিক বাহিনী রোববার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য আক্রমণাত্মক অভিযানে বিরতি দেবে, তবে প্রতিরক্ষামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।  

৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞ

সাগাইং অঞ্চলে আঘাত হানা ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের প্রভাব মিয়ানমারের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও অনুভূত হয়। এটি মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালে ও রাজধানী নেপিদোতেও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।  

সামরিক জান্তার তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১,৬৪৪ জন নিহত হয়েছে এবং আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

চার বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। সামরিক জান্তার ক্ষমতা দখলের পর দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়, যা পরে বিদ্রোহে রূপ নেয়।  

বর্তমানে সামরিক বাহিনী একদিকে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়ছে, অন্যদিকে গণতন্ত্রপন্থী প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গেও যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।  

জান্তার ক্রমাগত পরাজয় ও বিমান হামলার ওপর নির্ভরশীলতা

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামরিক জান্তা ব্যাপক পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে এবং দেশটির বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। চার বছর পরেও সামরিক সরকার এখন দেশের মাত্র ২৫% এলাকার ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পেরেছে।  

বর্তমানে জাতিগত বাহিনী ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো দেশের ৪২% ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এবং বাকি অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য যুদ্ধ চলছে।  

সামরিক জান্তা এখন তাদের শক্তি ধরে রাখতে বিমান হামলার ওপর বেশি নির্ভর করছে, কারণ প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর কাছে কোনো কার্যকর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই।  

যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

সামরিক জান্তা দীর্ঘদিন ধরেই নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে, যার ফলে স্কুল, মঠ, গির্জা এবং হাসপাতাল ধ্বংস হয়েছে। এক ভয়াবহ বিমান হামলায় ১৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল, যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু ছিল।  

জাতিসংঘের মানবাধিকার তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে যে সামরিক জান্তা তাদের দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে।  

রাশিয়া ও চীনের সমর্থন

সামরিক বাহিনীর এই বিমান হামলার সক্ষমতা মূলত রাশিয়া ও চীনের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান উপেক্ষা করে চীন ও রাশিয়া জান্তাকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ও প্রশিক্ষণ সরবরাহ করেছে।  

তবে ভূমিকম্পের পর এই দুই দেশ মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্মিজ অধিকারকর্মী জুলি খাইন বলেছেন, ‘যে দেশগুলো আমাদের নিরীহ মানুষ হত্যার জন্য জান্তাকে অস্ত্র সরবরাহ করছে, তাদের এখনকার সহানুভূতি কতটা বিশ্বস্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা জরুরি।’

সূত্র: বিবিসি

আরবি/এসএস

Link copied!