পাহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যুর পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে রয়েছে।
শনিবার পর্যন্ত টানা তৃতীয় দিনেও নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর ভারত ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী গুলিবিনিময় হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষ।
ভারত বলেছে, ‘অপ্ররোচিত’ভাবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়, যার জবাব দেওয়া হয়েছে। তবে, পাকিস্তান এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
মঙ্গলবার (এপ্রিল ২২) জম্মু-কাশ্মীরের বৈসারণ উপত্যকায় ঘটে যাওয়া হামলাকে গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বেসামরিক হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।
হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন, যা কাশ্মীরে পর্যটনভিত্তিক স্বাভাবিক জীবনের চিত্রকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে।
শ্রীনগরের ডাল লেকের পাড়ে সশস্ত্র আধাসামরিক বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি জনজীবনে প্রভাব ফেলেছে। কাশ্মীরজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে একাধিক গণগ্রেপ্তারও চালানো হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। একইসাথে পাকিস্তানের সঙ্গে বহুল আলোচিত ‘ইন্দাস’ জলচুক্তি থেকে ভারত নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় দু’দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান শান্তিপ্রিয়, তবে একে দুর্বলতা হিসেবে দেখা উচিত নয়।
এদিকে, ভারতীয় কংগ্রেস পার্টির কাশ্মীর শাখার প্রধান জানিয়েছেন, পাহেলগামের এই মর্মান্তিক হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা উচিত নয়।
ভারত হামলার জন্য পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাকিস্তান শান্তির পক্ষপাতী, তবে আত্মসমর্পণের নয়।
এদিকে, ভারতে কাশ্মীরজুড়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে।
কাশ্মীরের সাম্প্রতিক এই পরিস্থিতি উপমহাদেশে স্থিতিশীলতার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র: আলজাজিরা
আপনার মতামত লিখুন :