ভারতের সঙ্গে চলমান তুমুল উত্তেজনার মাঝেই প্রকাশ্যে পারমাণবিক হামলার হুমকি দিয়েছেন পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী হানিফ আব্বাসি। ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘পাকিস্তানের অস্ত্রাগার ঘোরি, শাহীন ও গজনবী ক্ষেপণাস্ত্রসহ ১৩০টি পারমাণবিক অস্ত্র শুধুমাত্র ভারতের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে’। এছাড়া ভারতকে যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আব্বাসি বলেন, ভারত সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করে পাকিস্তানে পানি প্রবাহ বন্ধ করার দুঃসাহস করলে তাদের‘পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত’। পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র প্রদর্শনীর জন্য নয়, এগুলো সারা দেশে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। উস্কানি দিলে আক্রমণ করার জন্য আমরা প্রস্তুত।
ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি আরও বলেন, আমি আবারও বলছি, এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সবই আপনাদের (ভারত) লক্ষ্য করে তৈরি করা।
পেহেলগামে ‘সন্ত্রাসী’ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর তার প্রতিক্রিয়া এলো। ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত ও পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সমস্ত ভিসা বাতিল করেছে।
পাকিস্তানের সাথে ভারতের পানি প্রবাহ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে উপহাস করে হানিফ আব্বাসি বলেন, নয়াদিল্লি তার পদক্ষেপের কঠোর পরিণতি বুঝতে শুরু করেছে।
পাকিস্তান ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাত্র দুই দিনের মধ্যে ভারতীয় বিমান চলাচলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। যদি পরিস্থিতি আরও ১০ দিন এভাবে চলতে থাকে, তাহলে ভারতের বিমান সংস্থাগুলো দেউলিয়া হয়ে যাবে।
ভারতের তীব্র সমালোচনা করে পাক এই মন্ত্রী বলেন, তারা নিজেদের নিরাপত্তা ব্যর্থতা স্বীকার করার পরিবর্তে পেহেলগামে হামলার জন্য পাকিস্তানের উপর দোষ চাপানোর অভিযোগ করছে। ইসলামাবাদ তার বিরুদ্ধে নেওয়া যেকোনো অর্থনৈতিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত।
আব্বাসির এই মন্তব্য মাত্র কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের একাধিক সাহসী দাবির পর এলো। এক সাক্ষাৎকারে আসিফ স্বীকার করেছেন যে, পাকিস্তান ‘গত তিন দশক ধরে’ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। কিন্তু তিনি দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ পশ্চিমা দেশগুলোর উপর।
আসিফ বলেন, ‘আমরা তিন দশক ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য এই নোংরা কাজটি করে আসছি। এটি একটি ভুল, যার জন্য পাকিস্তান অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে একটি আঞ্চলিক সংকট তৈরি করার লক্ষ্যে ভারতের পেহেলগামে হামলা “পরিকল্পিত”।’
তিনি দাবি করেন যে, লস্কর-ই-তৈয়বা আর নেই এবং পেহেলগামে হামলার জন্য দায়ী গোষ্ঠী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ সম্পর্কে তিনি কখনও শোনেননি। বলেন, ‘লস্কর’ একটি পুরনো নাম। এর কোনও অস্তিত্ব নেই... আমাদের সরকার স্পষ্টভাবে এর (পেহেলগাম হামলার) নিন্দা করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :