অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদি বাহিনীর চালানো নতুন হামলায় একদিনে অন্তত ৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এ নিয়ে চলমান সংঘাতে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা বায়ান্ন হাজার দুইশ তেতাল্লিশ ছাড়িয়ে গেছে।
রোববার (স্থানীয়) রাতভর এবং সোমবার (স্থানীয়) ভোরে চালানো বিমান হামলায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে স্থানীয় চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ। ইহুদি হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইহুদি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে বায়ান্ন হাজারের গণ্ডি। আহত হয়েছেন এক লাখ সতেরো হাজার ছয়শ ঊনচল্লিশজন। অনেক মৃতদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে, অনেকেই এখনো উদ্ধার পাননি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ই চৈত্র থেকে শুরু হওয়া নতুন হামলায় প্রায় দুই হাজার একশ একান্ন জন নিহত এবং পাঁচ হাজার পাঁচশ আটান্নজন আহত হয়েছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন অনেকেই।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, নতুন করে আরও ছয়শ সাতানব্বই জনের নাম মৃতের তালিকায় যুক্ত হয়েছে, যাদের পরিচয় যাচাই করা হয়েছে।
দীর্ঘ পনেরো মাস চলমান সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ মাঘ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও, হামাসের সঙ্গে মতানৈক্য এবং সেনা প্রত্যাহার নিয়ে মতবিরোধের জেরে চৈত্র মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আবারও গাজায় হামলা শুরু করে ইহুদি বাহিনী।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই আগ্রাসনের ফলে গাজার প্রায় পঁচাশি শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ধ্বংস হয়েছে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। পুরো অঞ্চল কার্যত বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এর আগে গত কার্তিক মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইহুদি রাষ্ট্রনায়ক এবং তার তৎকালীন প্রতিরক্ষা প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এ ছাড়া এই আগ্রাসনের কারণে ইহুদি রাষ্ট্র বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে।