ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

ইয়েমেনে আশ্রয় শিবিরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩৫

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ০২:৪৪ পিএম
ইয়েমেনের সানায় মার্কিন বিমান হামলার স্থানে একটি ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় সা’দা প্রদেশে আফ্রিকান অভিবাসীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) হুথি নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম আল-মাসিরাহ টিভিতে এ তথ্য জানানো হয়।  

হুথিদের তথ্যমতে, এখনো ৩০ জনের মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছে। হুথি-নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার সময় আশ্রয়কেন্দ্রটিতে মোট ১১৫ জন আফ্রিকান অভিবাসী অবস্থান করছিলেন।  

তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার নাগরিক। তবে হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি ওয়াশিংটন।

রাজনৈতিক ও মানবিক প্রেক্ষাপট

হুথি বিদ্রোহীরা বহুদিন ধরেই ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। সম্প্রতি হুথিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা ও লক্ষ্যভিত্তিক অভিযানের তৎপরতা বাড়িয়েছে, বিশেষ করে তারা যখন লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালাচ্ছে।

তবে এই হামলার লক্ষ্যবস্তু যদি সত্যিই অভিবাসীদের আশ্রয়শিবির হয়ে থাকে, তাহলে তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের আওতায় পড়তে পারে এবং এটি একটি বড় ধরনের মানবিক সংকট তৈরি করবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত

হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এখনো পর্যন্ত সীমিত। জাতিসংঘ, রেড ক্রস কিংবা অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।  

ইয়েমেনে চলমান সংঘাত এবং বিদেশি হস্তক্ষেপের জেরে সাধারণ নাগরিক, বিশেষত অভিবাসীরা বারবার প্রাণ হারাচ্ছেন। এই হামলা যদি নিশ্চিতভাবে অভিবাসী শিবিরকে লক্ষ্য করেই চালানো হয়ে থাকে, তাহলে তা বিশ্বজনীন নিন্দার মুখে পড়তে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইন অনুযায়ী মূল্যায়ন

# আন্তর্জাতিক মানবিক আইন বা জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী

যেকোনো সশস্ত্র সংঘাতে বেসামরিক নাগরিক ও শরণার্থীদের রক্ষা করা বাধ্যতামূলক। আশ্রয়শিবির, হাসপাতাল, স্কুল এবং ধর্মীয় স্থাপনা সবসময় হামলার বাইরে রাখতে হয়। যদি প্রমাণ হয় যে, আশ্রয়শিবিরে সামরিক উপস্থিতি ছিল না, তবে এই হামলা সরাসরি যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে।

# বৈধতা ও লক্ষ্য নির্ধারণ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নীতিমালায় ‘নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা’ এবং ‘বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি রোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন’ করার অঙ্গীকার থাকলেও এই ঘটনাটি যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তবে তা স্পষ্টভাবে সেই নীতিমালার লঙ্ঘন।