গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানে নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অন্তত ৬৫ শতাংশই নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ।
রোববার (২৭ এপ্রিল) গাজাভিত্তিক সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৮ হাজারেরও বেশি শিশু এবং ১২ হাজার ৪০০-এরও বেশি নারী নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ২,১৮০টি পরিবার।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ৫,০৭০টি পরিবার এখন কেবল একজন সদস্য নিয়ে বেঁচে আছে।
ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১,৪০০ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, ২১২ জন সাংবাদিক এবং ৭৫০ জন ত্রাণকর্মী। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সুনির্দিষ্ট ও ধারাবাহিক হামলার মাধ্যমে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে এবং সত্য প্রকাশ বন্ধ করতে চেষ্টার শেষ নেই।’
এই বিবৃতি আরও নিশ্চিত করে যে, মাটির বাস্তবতা, ইসরায়েলি পাইলটদের স্বীকারোক্তি ও সামরিক ফাঁস হওয়া তথ্য, যেগুলো মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে- সেইসব তথ্য অনুযায়ী ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক ঘরবাড়ি ও জনপদে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই তথ্যগুলো স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানানো একটি সংগঠিত নীতি, যা গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের পরিকল্পনার অংশ।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ থেকে আবার গাজায় হামলা শুরু করে, যা জানুয়ারি মাসে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিকে ভেঙে দেয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫২,২০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া, গাজায় সংঘটিত ঘটনাগুলোর জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলাও চলমান।
আপনার মতামত লিখুন :