ইসরায়েলের গাজা অঞ্চলে সামরিক অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলমান মতপার্থক্য ও দৃষ্টিভঙ্গির টানাপোড়েনের জেরে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রোনেন বার।
এ সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মহলে নতুন করে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন দেশটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখোমুখি।
পদত্যাগের প্রেক্ষাপট
রোনেন বার গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজায় পরিচালিত অভিযানের কৌশল, মানবিক পরিস্থিতি এবং এর দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক ফল নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছিলেন।
সূত্রমতে, বার চেয়েছিলেন গাজায় নিরাপত্তা অভিযান মানবিক দৃষ্টিকোণ ও কূটনৈতিক বিবেচনায় পরিচালিত হোক, যেখানে অসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা হবে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে অনড় অবস্থানে ছিলেন এবং কূটনৈতিক সমঝোতার সুযোগ সীমিত রাখছিলেন।
নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা মহলে প্রতিক্রিয়া
রোনেন বার ২০২১ সাল থেকে শিন বেটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার নেতৃত্বে সংস্থাটি একাধিক অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা হুমকি রুখে দিয়েছে এবং হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কার্যকর তথ্য সংগ্রহ করেছে। বার-এর পদত্যাগ অনেকের কাছেই বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ এটি ইঙ্গিত করে যে, ইসরায়েলের শীর্ষ পর্যায়ে নীতিগত বিভাজন ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
রাজনৈতিক প্রভাব
রোনেন বার-এর পদত্যাগ নেতানিয়াহু সরকারের ওপর চাপ বাড়াবে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। ইতিমধ্যে যুদ্ধের পরিচালনা, আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনা এবং মানবাধিকার সংস্থার নজরদারিতে সরকারের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
শিন বেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার প্রধানের পদত্যাগ কেবল প্রশাসনিক দুর্বলতা নয়, বরং রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতাও প্রকাশ করে।
ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা
এই পদত্যাগ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন একটি সন্ধিক্ষণে রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, নতুন প্রধানের অধীনে শিন বেট কীভাবে বর্তমান সংকট সামাল দেবে এবং এই সিদ্ধান্ত গাজা নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে কি না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘শিন বেট প্রধানের পদত্যাগ শুধু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, এটি ইসরায়েলি নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ার গভীর সংকটের প্রতিফলন।’