ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর একটি ভারতীয় কোয়াডকপ্টার ড্রোন ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ডন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পাকিস্তানের রেডিও পাকিস্তান ও পিটিভি নিউজ জানায়, মঙ্গলবার কাশ্মীরের ভিম্বার জেলার মানাওয়ার সেক্টর সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবেশ করা একটি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
নিরাপত্তা সূত্র বলছে,‘শত্রুদের নজরদারির চেষ্টাকে’ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিহত করেছে সেনাবাহিনী।
সূত্রের দাবি, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই সফল পদক্ষেপ তাদের সতর্কতা, পেশাদারিত্ব এবং প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতির প্রমাণ।
এই ঘটনার পটভূমিতে রয়েছে ২২ এপ্রিলের সশস্ত্র হামলা। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সেই হামলায় নিহত হন অন্তত ২৬ জন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক।
২০০০ সালের পর অঞ্চলটিতে এটি ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।
হামলার দায় প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে 'কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট'। যদিও পরে তা আবার অস্বীকার করে গোষ্ঠীটি।
হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেয় ভারত। তবে, এ হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
একইসাথে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এ হামলার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২ দেশের মাঝে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), চীন, তুরস্ক, ইরান ও সৌদি আরব এ সংকটে সংলাপ ও কূটনৈতিক সমাধানের গুরুত্ব তুলে ধরেছে।
ইউএই-র উপপ্রধানমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে ফোনে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা চাই ভারত ও পাকিস্তানের উত্তেজনা দ্রুত হ্রাস পাক, যেন তা আর বড় কোনো সংঘাতে রূপ না নেয়।’
একইভাবে, জাতিসংঘ, ইরান ও সৌদি আরবও সংযম এবং মধ্যস্থতার আহ্বান জানিয়েছে দেশ দুটিকে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মন্তব্য করেছেন, “এই বিরোধ কোন না কোনভাবে সমাধান হয়ে যাবে।”
তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বর্তমান প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সীমান্তে ড্রোন ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
সূত্র: পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এএফপি
আপনার মতামত লিখুন :