কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার পর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে ভারত ইন্দাস নদীজল চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করেছে।
আর এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির আইন ও বিচারবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আকিল মালিক।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, পাকিস্তান কমপক্ষে তিনটি ভিন্ন আইনি পথ অনুসরণের পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে- চুক্তির মধ্যস্থতাকারী বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে বিষয়টি উত্থাপন, স্থায়ী সালিশি আদালতে যাওয়া এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ভারতকে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা।
আকিল মালিক বলেন, ‘আইনি কৌশল নিয়ে আলোচনা প্রায় সম্পন্ন। শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন কোন পদক্ষেপ একসঙ্গে নেওয়া হবে।’
গত সপ্তাহে ভারত ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ইন্দাস নদীজল চুক্তি স্থগিত করে জানায়, পাকিস্তান যদি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে চূড়ান্তভাবে বর্জন না করে, তবে চুক্তি স্থগিতই থাকবে।
পাকিস্তান কাশ্মীরের হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়। ভারত দাবি করেছে, অভিযুক্ত তিন হামলাকারীর মধ্যে দুজন পাকিস্তানের নাগরিক।
অপরদিকে, পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ‘পাকিস্তানের প্রাপ্য পানির প্রবাহ বন্ধ বা ভিন্নমুখী করার যেকোনো চেষ্টা যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে।’
এর জবাবে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে সব বাণিজ্য স্থগিত করেছে এবং ভারতের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য আকাশপথ বন্ধ করেছে।
আকিল মালিক আরও জানান, পাকিস্তান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদেও বিষয়টি উত্থাপন করার কূটনৈতিক উদ্যোগ বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, ‘সব ধরনের সম্ভাবনা বিবেচনায় রয়েছে এবং আমরা উপযুক্ত প্রতিটি ফোরামে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করা যায় না, চুক্তির কোথাও এমন কোনো বিধান নেই।’
অপরদিকে, ভারতের কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান কুশবিন্দার বোহরা মন্তব্য করেছেন, ‘পাকিস্তানের জন্য বিকল্প সীমিত। আমি বলতে পারি, ভারতের পদক্ষেপ সপক্ষে বলার মতো যুক্তি আমাদের হাতে রয়েছে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের পানি প্রবাহ বন্ধ করতে পারবে না, কারণ চুক্তিতে ভারতকে কেবল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে- যার মাধ্যমে পানি জমিয়ে রাখা যায় না।