বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ১১:১৮ এএম

ভারতের অংশ হয়েও পাকিস্তানের পাশে থাকার অঙ্গীকার পাঞ্জাবের

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৫, ১১:১৮ এএম

ভারতের অংশ হয়েও পাকিস্তানের পাশে থাকার অঙ্গীকার পাঞ্জাবের

পাঞ্জাবের মানচিত্র ছবি: সংগৃহীত

ভারতের অধিকৃত কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

এর মধ্যে, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যখন যুদ্ধের মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে, তখন ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছে- যুদ্ধের পরিস্থিতি এলে পাঞ্জাব থাকবে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে।

সাম্প্রতিক এই উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে কাশ্মীরের পেহেলগামে সেনাঘাঁটির নিকটে সংঘটিত একটি বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা, যাতে সাতজন ভারতীয় সেনা নিহত হন এবং অন্তত ১৫ জন আহত হন। এ ছাড়াও ২২ এপ্রিল পেহেলগামের হামলার পর এক সপ্তাহ পার হলেও দুদেশের সীমান্তে রোজই চলছে গুলিবর্ষণ। 

ভারত সরকার এই হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত থাকার দাবি করে বলেছে, এটি সীমান্ত পেরিয়ে পরিচালিত একটি সন্ত্রাসী আক্রমণ।

পাকিস্তান সরকার এই অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে জানায়, ‘এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত।’ ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ভারত সরকার কাশ্মীর পরিস্থিতি থেকে মনোযোগ সরাতে সীমান্ত উত্তেজনার সৃষ্টি করছে।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী: ‘যুদ্ধ হলে সর্বপ্রথম প্রতিরোধে থাকবে পাঞ্জাব’

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী রানা ফয়াজ এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পাঞ্জাব সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমাদের সেনাবাহিনী, জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব এক কণ্ঠে ঘোষণা করছে- পাকিস্তানে যদি আক্রমণ হয়, তবে পাঞ্জাব থাকবে সর্বাগ্রে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত যদি আমাদের সীমান্তে যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে চায়, তবে তা নিভিয়ে দিতে পাঞ্জাবের প্রতিটি ঘরে ঘরে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে।’

মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রদেশজুড়ে ছাত্র সংগঠন, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক ইউনিয়ন ও সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসছে।  

শহরে শহরে প্রতিবাদ মিছিল, স্লোগানে মুখর পাঞ্জাব  

লাহোর, গুজরানওয়ালা, সিয়ালকোট, মুলতান, রাওয়ালপিন্ডি ও বাহাওয়ালপুরসহ বহু শহরে প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিলকারীরা জাতীয় পতাকা হাতে ‘পাকিস্তানের পাশে পাঞ্জাব’, ‘ভারতের আগ্রাসন বন্ধ করো’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

একজন প্রতিবাদকারী বলেন, ‘এখন কাশ্মীরের মানুষ কষ্টে আছে, যখন পাকিস্তানকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তখন নীরব থাকা চলবে না। আমরা সবাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে।’

সীমান্তে উত্তেজনা: সেনা মোতায়েন ও নজরদারি বৃদ্ধি  

কাশ্মীর সীমান্ত ও লাইন অব কন্ট্রোলে উভয় পক্ষই সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’

অপরদিকে, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রয়োজনে কড়া জবাব দেওয়া হবে।’ 

ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে সামান্য ভুল বোঝাবুঝিও বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ, শান্তি বজায় রাখার আহ্বান

জাতিসংঘ মহাসচিব এক বিবৃতিতে উভয় দেশকে শান্তি ও সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও একই রকম বার্তা এসেছে।  

বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘কাশ্মীর ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে চিরকালীন উত্তেজনা থাকলেও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি অতীতের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক। বিশেষ করে দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ হলে তার পরিণতি হবে ধ্বংসাত্মক।’

এক জাতি, এক সংকল্পের বার্তা নিয়ে পাঞ্জাব

পাঞ্জাব প্রদেশের সরকারের বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে ‘জাতীয় ঐক্য’র কথা। 

মুখ্যমন্ত্রীসহ প্রদেশের সব শীর্ষ নেতারাই একযোগে বলছেন, ‘রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও দেশের স্বার্থে সবাই একতাবদ্ধ।’

এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরে এই ধরনের ঐক্যের বার্তা ভারতের প্রতি এক কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করছে, যা যুদ্ধের আগে কূটনৈতিক আলোচনার দরজা খুলে দিতে পারে।

পেহেলগামের ঘটনার পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছেছে। তবে এর মধ্যেও পাঞ্জাবের স্পষ্ট অবস্থান, জনতার প্রতিবাদ এবং সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সংহতির প্রতীক হিসেবে কাজ করছে।  

এখন সময় বলবে, এই সংহতি ও কূটনীতি যুদ্ধের অন্ধকার ঠেকাতে পারে কি না।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!